ভারত, ২৩ অক্টোবর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM MODI) মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত আসিয়ান (ASEAN) সম্মেলনে সরাসরি যোগ দিচ্ছেন না বলে জানা গিয়েছে। রবিবার থেকে শুরু হতে চলা এই বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠকে সময়সূচিগত সমস্যার কারণে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকতে পারবেন না, এমনটাই জানিয়েছেন সরকারি সূত্রে। ফলে ভারতের পক্ষ থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে যোগ দেবেন বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।
এই বছরের আসিয়ান সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে, ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত। জানা গিয়েছে, ভারত ইতিমধ্যেই মালয়েশিয়াকে জানিয়ে দিয়েছে যে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করই ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন আসিয়ান সম্পর্কিত বিভিন্ন বৈঠকে।
যদিও প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজে উপস্থিত থাকছেন না, তবে সূত্রের খবর অনুযায়ী তিনি আসিয়ান-ইন্ডিয়া সম্মেলনে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করতে পারেন। গত কয়েক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী মোদি ব্যক্তিগতভাবে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন আসিয়ান-ইন্ডিয়া শীর্ষ বৈঠক এবং পূর্ব এশিয়া সম্মেলনে। তাই এবারের তাঁর অনুপস্থিতি কিছুটা নজরকাড়া হলেও, সরকার মনে করছে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের নেতৃত্বেও ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান যথাযথভাবে প্রতিফলিত হবে।
মালয়েশিয়ার এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশের নেতারা। ট্রাম্প ২৬ অক্টোবর থেকে দুই দিনের সফরে কুয়ালালামপুরে পৌঁছাবেন বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং রাশিয়ার নেতারাও এই বৈঠকে যোগ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আসিয়ান (Association of Southeast Asian Nations) হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দশটি দেশের একটি আঞ্চলিক সংগঠন—ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ব্রুনেই, ভিয়েতনাম, লাওস, মিয়ানমার এবং কম্বোডিয়া। ভারত ও আসিয়ানের সম্পর্ক শুরু হয় ১৯৯২ সালে, যখন ভারত প্রথম ‘সেক্টোরাল পার্টনার’ হিসেবে যুক্ত হয়। ১৯৯৫ সালে সেই সম্পর্ক উন্নীত হয় ‘পূর্ণাঙ্গ সংলাপ পার্টনারশিপ’-এ, এবং ২০০২ সালে তা শীর্ষ সম্মেলন স্তরে পৌঁছায়। গত কয়েক বছরে ভারত-আসিয়ান সম্পর্ক ক্রমেই শক্তিশালী হয়েছে, বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ছে।
ভারতের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির অন্যতম মূল ভিত্তি এই আসিয়ান সম্পর্ক। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে বাণিজ্য, অবকাঠামো ও সামরিক সহযোগিতা জোরদার করা এই নীতির লক্ষ্য। তাই আসিয়ান সম্মেলনে ভারতের উপস্থিতি কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মোদির মালয়েশিয়া সফরের সঙ্গে কম্বোডিয়া সফরও নির্ধারিত ছিল। কিন্তু মালয়েশিয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্তের ফলে তাঁর কম্বোডিয়া সফরও আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।


