নয়াদিল্লি, ১৯ সেপ্টেম্বর: জেলে বন্দি জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (Kashmir Genocide) চেয়ারম্যান ইয়াসিন মালিক তার সাম্প্রতিক শপথপত্রে করেছেন এক চাঞ্চল্যকর দাবি। দিল্লি হাইকোর্টে দায়ের এই শপথপত্রে তিনি রাষ্ট্রীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)-র তাকে ফাঁসির দাবির বিরুদ্ধে দাবি করেছেন যে, তিনি কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা বা গ্যাং রেপের ষড়যন্ত্র করেননি।
বরং, তিনি ভারত সরকারের গোপন শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ ছিলেন, যাতে আরএসএস নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা এবং শঙ্করাচার্যদের একাধিক সফর অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইয়াসিনের এই বিস্ফোরক দাবি রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। শপথপত্রে মালিক বলেছেন, ২০০১ সালে তিনি আরএসএস নেতাদের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টার ম্যারাথন আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন।
এছাড়া, বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের অ্যাডমিরাল কে.এন. সুরির পক্ষ থেকে তাকে বারবার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। মালিকের দাবি, দুই শঙ্করাচার্য—হিন্দু ধর্মীয় মঠের প্রধান—তার শ্রীনগরের বাড়িতে “অসংখ্যবার” এসেছেন। শুধু তাই নয় তার সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন।
মালিকের আরও একটি বিস্ফোরক দাবি করেছেন। তিনি বলেন ২০০৬ সালে পাকিস্তানে লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি) প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাইদের সঙ্গে তার বৈঠক ভারতীয় গোয়েন্দা ব্যুরো (আইবি)-র অনুরোধে সাজানো হয়েছিল। যা ছিল পাকিস্তানের সঙ্গে গোপন শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ। তিনি দাবি করেছেন যে, এই বৈঠকের পর তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন।
এবং সিংহ তাকে “কাশ্মীরে অহিংস আন্দোলনের জনক” বলে সম্বোধন করেছিলেন। এছাড়া, ১৯৯৫ সালে জেল থেকে মুক্তির এক বছর পর তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন। মালিকের শপথপত্রে উল্লেখ আছে যে, ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারত সরকারের সঙ্গে তার ২৫ বছরের বোঝাপড়া ছিল।
এতে তার এবং তার দলের ৩২টি টিএডিএ (টেররিস্ট অ্যান্ড ডিসরাপটিভ অ্যাকটিভিটিজ) মামলা বাতিল করা হয়েছিল, এবং সংলাপ চলতে থাকত। এই সময়কালে তিনি ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট ধীরুবাই আম্বানির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন, যা গোয়েন্দা মধ্যস্থতায় ঘটেছিল। তিনি কংগ্রেস চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধীসহ বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বাজপেয়ীর শান্তি উদ্যোগে যোগ দিয়েছিলেন।
উৎসবের অফারে প্রিমিয়াম গাড়িও সস্তা! তবে শর্তপত্রে ফাঁদ? জানুন বিস্তারিত
মালিক বলেছেন, ১৯৯৬ সালের পর যে চারটি গণহত্যায় ১৬৭ পণ্ডিত নিহত হয়েছে, তাতে তার কোনো ভূমিকা ছিল না। বরং, তিনি সেই হতাহতদের সমর্থনে ধর্মঘট করেছেন এবং শ্মশানযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, আর্টিকেল ৩৭০ বাতিলের পর ২০১৯ সাল থেকে সরকার তার কেস আবার সামনে এনেছে। এখন এনআইএ তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে ফাঁসিতে রূপান্তর করার দাবি করেছে।