৭ অক্টোবরের ভয়াবহ হামলার পর থেকে হামাসকে ধ্বংস করার অঙ্গীকার করেছিল ইজরায়েল। ওই দিন হামাসের হামলায় (Israel) অসংখ্য ইহুদি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছিল, এবং গাজা সীমান্তে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। ওই হামলার (Israel) প্রতিশোধ নিতে ইজরায়েল একের পর এক হামাসের শীর্ষ নেতাদের খুঁজে বের করে এবং তাদের হত্যা করেছে।
এবার, ইজরায়েলি (Israel) সেনা দাবি করেছে, ৭ অক্টোবরের হামলার মূলচক্রী হামাসের নুখবা প্লাতুন কমান্ডার আব্দ আল হাদি সাবাকে তারা খতম করেছে।
ইজরায়েলি (Israel) সেনা মঙ্গলবার একটি ড্রোন হামলার মাধ্যমে আব্দ আল হাদি সাবাকে খতম করে। ইজরায়েলের (Israel) সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে খান ইউনিস এলাকার এক অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে অভিযানে নুখবা প্লাতুন কমান্ডার আব্দ আল হাদি সাবা নিহত হন।
তিনি ৭ অক্টোবরের হামলায় জড়িত ছিলেন এবং ওই হামলার সময় গাজার খান ইউনিস এলাকায় তাঁর অবস্থান ছিল। হামাসের এই নেতা ওই অঞ্চলের মানবাধিকার আশ্রয়শিবিরে লুকিয়ে থেকে জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে, এই অভিযানেই তাকে খতম করা হয়।
৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইজরায়েল গাজাকে কার্যত নরকে পরিণত করেছে। ওই হামলায় হামাসের সদস্যরা গুলি চালিয়ে এবং মানুষ অপহরণ করে ইহুদি বসতিগুলোর উপর আক্রমণ করে। কিবুৎজ নির ওজের এলাকাতে সেই দিন হামাসের সদস্যরা হত্যালীলা চালায়, এবং বহু মানুষকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আব্দ আল হাদি সাবা ছিল সেই আক্রমণের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড। ইজরায়েলের সেনাবাহিনী এই হামলার পর থেকে তাকে খোঁজার চেষ্টা করছিল এবং অবশেষে তাকে খতম করতে সক্ষম হয়।
৭ অক্টোবরের হামলার পর ইজরায়েল একের পর এক হামাসের শীর্ষ নেতাদের হত্যার উদ্যোগ নেয়। গত অক্টোবর মাসে, ইজরায়েল হামলায় হামাসের প্রধান সিনওয়ারকে খতম করে। এর পর ইজরায়েল একে একে হামাসের অন্য নেতাদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে তাদের হত্যা করেছে। সম্প্রতি, ইজরায়েল স্বীকার করেছে যে তারা হামাসের আরেক শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়াকেও হত্যা করেছে।
এ ছাড়া, এর আগে গাজায় এক বিমান হামলায় ইজরায়েল হামাসের ‘নুখবা’ কমান্ডার বিলাল আল কেদরাকেও খতম করেছিল। সুতরাং, এই নতুন খতম হওয়া নেতা আব্দ আল হাদি সাবা এই তালিকায় নতুন সংযোজন। ইজরায়েল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যে কেউ তাদের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াবে, তার মাথা কেটে নেওয়া হবে।
ইজরায়েলের এমন পদক্ষেপকে কিছু বিশ্লেষক রাজনৈতিক প্রতিশোধ হিসেবে দেখলেও, ইজরায়েল সরকার দাবি করছে যে এটি তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ। ৭ অক্টোবরের হামলার পর, ইজরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে এবং এই আক্রমণগুলো হামাসের শক্তিকে দুর্বল করতে সহায়ক হচ্ছে। গাজার অধিকারী এই সন্ত্রাসী সংগঠনকে নির্মূল করতে ইজরায়েল সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত রয়েছে।
গাজার পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হয়ে উঠছে, এবং আন্তর্জাতিক মহল থেকে এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া এসেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ গাজার মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
যদিও ইজরায়েল দাবি করছে, তারা সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধে এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে, কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশের পক্ষ থেকে সেখানে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযান এখনও চলমান, এবং গাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও নতুন খবর আসতে পারে। ইজরায়েলের সেনারা তাদের প্রতিশোধমূলক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং একের পর এক হামাসের নেতাদের হত্যা করছে। তবে, এটি কোনো শেষ নয়, বরং আগামীদিনে আরও কঠোর পদক্ষেপের সম্ভাবনা রয়েছে। গাজার পরিস্থিতি অব্যাহতভাবে চরম হয়ে উঠছে, এবং সেখানে শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক উদ্যোগের প্রয়োজন।