দুবাই বনাম ভারত, কোন দেশে সস্তা সোনা?

24-Carat Gold Price Jumps by 3,150 in a Day, Silver Drops 2,050 per Kg

গত কয়েক বছর ধরে, অনেক ভারতীয়ের মধ্যে এই ধারণা ছিল যে দুবাই থেকে সোনার গহনা (Gold price) বা বার কেনা ভারতে কেনার চেয়ে সস্তা হবে। কারণ ছিল দুই-তিনটি বিষয় — একদিকে তখন ভারতের সোনার গহনায় ভ্যাট বা জিএসটি তুলনায় বেশি ছিল, অন্যদিকে দুবাইতে সোনার “ইমপোর্ট ডিউটি” বলতে প্রায় কিছুই ছিল না বা খুব কম ছিল। কিন্তু এখন সময় বদলে গেছে। আজকাল ভারত ও দুবাইতে সোনার গড় খরচের মধ্যে পার্থক্য নেই।

Advertisements

আগে ভারতে সোনা কেনার সময় বেশ বড় পরিমাণ কর ও শুল্ক দিতে হতো। উদাহরণস্বরূপ, সোনা (বহিরাগত আমদানিকৃত)-র ক্ষেত্রে ভারতের হার ছিল প্রায় ১২ % ইমপোর্ট ডিউটি + সেস প্রভৃতি + এরপর গহনায় বা তার পরে ভোক্তা পর্যায়ে জিএসটি লাগতো, মোট মিলিয়ে কর পরিমাণ দাঁড়াত প্রায় ১৫.৫ %। (এই তথ্য পডকাস্ট থেকেই নেওয়া)

কিন্তু এবার পরিবর্তন হয়েছে ভারতের বাজেটে ইমপোর্ট ডিউটি অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে, এবং জিএসটি-সহ অন্যান্য খরচও কম হয়েছে। ফলে এখন ভারতের ক্ষেত্রে সোনার গড় কর ও খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ % থেকে ৫.৫ % পর্যায়ে। এই পরিবর্তনের ফলে, দুবাইয়ের ক্ষেত্রে যে ভ্যাট বা কর হয় (যেমন ভ্যাট-রেট ইত্যাদি) সেটির সঙ্গে ভারতীয় খরচ প্রায় সমান হয়ে গেছে — ফলস্বরূপ, দুবাইয়ের দিকে সোনার কেনা “অবশ্যই অনেক সস্তা” এমন কথা এখন আর সবসময় সত্য নয়।

বিশেষজ্ঞদের কথায়, “আগে আমরা ভারতে আমদানিতে প্রায় ১২ % ইমপোর্ট ডিউটি + সেস + তারপর ৩ % জিএসটি কর দিতাম। সেই হিসেবে কর মিলিয়ে পড়তো প্রায় ১৫.৫ %। এখন আমদানির কর প্রায় ২ %-এর একটু বেশি, + ৩ % জিএসটি — মোট মিলিয়ে ৫-৫.৫ %। এবং দুবাই থেকে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভ্যাট আছে প্রায় ৫ %। তাই আজকাল দুই জায়গার মধ্যকার পার্থক্য প্রায় শূন্য।”

এই বিশ্লেষণ থেকে কয়েকটা টিপস দেওয়া যেতে পারে সোনার কেনার সময়:

আপনি যদি বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং দুবাই বা অন্য কোনও দেশে সোনা কিনে নিয়ে আসার কথা ভাবছেন, তাহলে বাংলাদেশের পাশাপাশি কর ও শুল্ক-সহ পুরো খরচ পরীক্ষা করে দেখুন শুধু ক্রয়মূল্য নয়।

Advertisements

ভারতে কেনার সময় দেখুন আপনার শহরে সোনার ডিলার কতটা বিশ্বস্ত, হালমার্কিং / যুক্তিচিহ্ন আছে কিনা, এবং আমদানি খরচ কতটা সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে কিনা।

দুবাই থেকে আনলে ক্রয়কৃত সোনার চালান, রশিদ, নমনীয় মুদ্রায় রূপান্তর-চার্জ ইত্যাদি খরচ মনে করুন কখনও কখনও এই খরচ অতিরিক্ত হয়ে যেতে পারে।

সোনা শুধুই বিনিয়োগ নয়, অনেক ক্ষেত্রে এটি আবেগ ও ঐতিহ্যের অংশ (বিয়ে, উৎসব ইত্যাদি)  সেক্ষেত্রে “দাম কম” হতেই সর্বোচ্চ বিবেচনায় থাকলে নাও সঠিক ফল দেবে।

সর্বোপরি, দামের পার্থক্য ছোটলে “লোভ”এ আলোচনায় না পড়ে নির্ধারিত বাজেট ও গুণগত দিক দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ভালো।

এখন সময়ের সঙ্গে নিয়মানুবর্তিতা ও করনীতি বদলে যাওয়ায়, “দুবাই থেকে সোনা কেনা অনেক সস্তা লাগবে আর ভারতে কিনলে হার হবে” এই ধারণাটি পুরনো হয়ে যাচ্ছে। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সামগ্রিক খরচ ও সুবিধাপূর্ণ দিক ভালোভাবে বিবেচনা করা জরুরি।