জয়পুর: পাঁচতারা হোটেলের (Hotel) জানলা খোলা। সেই জানলা দিয়েই বাইরে রাস্তায় জমে গেল উৎসুক জনতার ভিড়। কারণ, জানলার ওপারে ঘরের মধ্যে এক দম্পতি নিখুঁতভাবে মগ্ন অন্তরঙ্গ মুহূর্তে। ঘটনাটি রাজস্থানের জয়পুর শহরের ২২ গোডাউন এলাকার একটি নামী হোটেল ‘হলিডে ইন’-এর। ঘটনাটি ঘটার পর থেকেই ভাইরাল হয়েছে সেই দম্পতির সঙ্গমরত মুহূর্তের ভিডিও। চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা শহরে, হইচই নেটমাধ্যমেও।
জানা গিয়েছে, দিনকয়েক আগে জয়পুরের ওই হোটেলের একটি ঘরে ছিলেন এক দম্পতি। হোটেলের রুমের জানলাগুলি সাধারণভাবে বাইরে থেকে দৃশ্যমান। সেই রকম একটি রুমে ওই দম্পতি একে অপরের সঙ্গে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে ছিলেন। তবে ঘরের জানলা সম্পূর্ণ খোলা থাকায় সেই দৃশ্য হোটেলের বাইরের রাস্তাতেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল।
যা দেখে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক ব্যক্তি তা ক্যামেরাবন্দি করে ফেলেন। এমনকি কিছু ব্যক্তি সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোডও করে দেন। মুহূর্তের মধ্যে ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে। ছড়িয়ে পড়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম এবং একাধিক ফেসবুক গ্রুপে।
ঘটনা জানাজানি হতেই মুখে কুলুপ এঁটেছে ‘Holiday Inn Jaipur’ হোটেল কর্তৃপক্ষ। কোনও মন্তব্য না করেই তাঁরা জানিয়েছেন, বিষয়টি ‘প্রাইভেসি সংক্রান্ত’ এবং তদন্তাধীন। তবে প্রশ্ন উঠছে, হোটেলের মতো সংবেদনশীল জায়গায় কি করে এমন ঘটনা ঘটল, যেখানে অতিথিদের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা রক্ষা করার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের?
এছাড়াও উঠে আসছে আরও একটি গুরুতর প্রশ্ন— জানলা খোলা থাকা অবস্থায় কোনও অতিথি যদি এমন কার্যকলাপে লিপ্ত হন, তবে তার দায় কি শুধুই ব্যক্তির, নাকি হোটেল কর্তৃপক্ষেরও কিছুটা দায়িত্ববোধ থাকা উচিত?
জয়পুর পুলিশ এই ঘটনার ওপর দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ভিডিও রেকর্ড এবং ছড়িয়ে দেওয়া একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। দম্পতির ব্যক্তিগত মুহূর্ত ভিডিও করে ছড়িয়ে দেওয়া ‘আইটি আইন’-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিওগ্রাফি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানোর ঘটনায় দোষীদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই ভিডিও পোস্টকারী কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ধারায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাশাপাশি হোটেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের পক্ষ থেকে জনসাধারণকে সতর্ক করা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরণের ভিডিও শেয়ার না করতে।
এই ঘটনা শুধু একটি ভাইরাল ভিডিও বা চাঞ্চল্যকর ঘটনা নয়, এটি গোপনীয়তার অধিকার, সামাজিক মূল্যবোধ এবং নৈতিকতার প্রশ্নও তোলে। অনেকেই বলছেন, দম্পতির অসতর্ক আচরণ যেমন প্রশ্নের মুখে, তেমনি তাঁদের ব্যক্তিগত মুহূর্ত ভিডিও করে ভাইরাল করাও একটি নিন্দনীয় অপরাধ।
অতএব, ব্যক্তিগত পরিসর ও সামাজিক দায়িত্ব, উভয়কেই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
