মেসেঞ্জার ফাঁদে বিনিয়োগ প্রতারণা, গ্রেফতার ৪

Cyber Fraud

দিল্লি: সাইবার সেল (Delhi cyber fraud) এক বড় সাফল্যের মাধ্যমে ভেঙে দিল আন্তঃরাজ্য সাইবার প্রতারণার একটি সুগঠিত নেটওয়ার্ক। অনলাইন ট্রেডিংয়ের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এই প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন রাজ্যের অন্তত কয়েক ডজন মানুষকে প্রতারণা করে মোট ১০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ হাতিয়েছিল এই চক্র। ইতিমধ্যেই চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তদন্ত এখনও চলছে।

Advertisements

পুরো ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন জুন মাসে এক ব্যক্তি দিল্লি পুলিশে অভিযোগ জানান যে ভুয়ো ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করার নাম করে তাঁর কাছ থেকে ৪৯ লক্ষ টাকা প্রতারণা করা হয়েছে। অভিযোগকারী বলেন, তাঁকে প্রথমে এক মহিলা মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করে অনলাইন ট্রেডিংয়ে দ্রুত লাভের আশ্বাস দেন। তাঁর বিশ্বাস অর্জনের জন্য পাঠানো হয় নকল লাভের স্ক্রিনশট। ধাপে ধাপে তাঁকে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বলা হয়। পরে তিনি বুঝতে পারেন যে পুরো বিনিয়োগটি আসলে প্রতারণা।

   

দিল্লি পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির নথি খতিয়ে দেখে দেখতে পায় যে এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িত অ্যাকাউন্টগুলির নাম রয়েছে ৬৭টিরও বেশি সাইবার অপরাধ মামলায়। কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, তামিলনাড়ু সহ নানা রাজ্যে প্রতারণা চালিয়েছে এই নেটওয়ার্ক।

২০ নভেম্বর পুলিশ চার অভিযুক্ত অতুল কুমার, বর্ষা শর্মা, অজয় শর্মা এবং একজন ৫৪ বছরের মহিলাকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, এই চক্রের কাজকর্ম পরিচালিত হত এক সুসংগঠিত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে, যেখানে প্রতারণার টাকা ঘুরত একাধিক ‘মিউল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট’-এর সাহায্যে। আর্থিকভাবে দুর্বল মানুষদের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে তাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট খুলে নিত চক্রটি এবং সেই অ্যাকাউন্টগুলি ব্যবহার করে টাকা ইधर-উধার করত।

তদন্তে উঠে এসেছে যে অজয় শর্মা ছিলেন এই প্রতারণার অন্যতম মূল হোতা। তিনি বহু মিউল অ্যাকাউন্টের ব্যবস্থা করতেন এবং সেই অ্যাকাউন্টগুলির লগইন, পিন, ডেবিট কার্ডসহ সমস্ত তথ্য চক্রের অন্যান্য সদস্যদের হাতে তুলে দিতেন।

Advertisements

পুলিশ আরও জানায়, অতুল কুমার ও বর্ষা শর্মার নামে থাকা অ্যাকাউন্ট দিয়ে ৩ লক্ষ টাকা প্রতারণার টাকা লেনদেন হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া মহিলার অ্যাকাউন্টে ৩ লক্ষ টাকা জমা পড়েছিল।

এই চক্রের বিরুদ্ধে আরও মারাত্মক অভিযোগ উঠে এসেছে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ প্রতারণা। বর্তমানে এই ধরনের প্রতারণা দ্রুত বাড়ছে, যেখানে ভুয়ো পুলিশ, ভুয়ো কোর্ট বা এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির পরিচয়ে ভুক্তভোগীদের ভয় দেখিয়ে তাৎক্ষণিক টাকা পাঠাতে বাধ্য করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারণার পুরো রুট, আর্থিক লেনদেনের স্রোত, বিদেশে টাকা পাঠানোর চ্যানেল এবং নেপথ্যের সমস্ত সদস্যদের খুঁজে বের করতে তদন্ত এখনও চলছে। পাশাপাশি আরও কত মানুষ এই চক্রের শিকার হয়েছেন তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।