পুনের মাওয়াল তালুকার কুণ্ডমালা গ্রামের কাছে ইন্দ্রায়ণী নদীর (bridge-collapse) উপর একটি পুরনো লোহার সেতু ধসে পড়ায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ২০ থেকে ৩০ জন পর্যটক নদীতে ভেসে গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এবং ছয়জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে।
এই দুর্ঘটনা একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে ঘটেছে, যা কাঠামোগত নিরাপত্তা এবং তদারকির গুরুতর ত্রুটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দায়িত্ব নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতে এমন ট্র্যাজেডি রোধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা এখন সামনে এসেছে।
দুর্ঘটনার বিবরণ (bridge-collapse)
রবিবার বিকেল ৩:৩০ নাগাদ তালেগাঁও দাভাডের কাছে কুণ্ডমালায় ইন্দ্রায়ণী নদীর উপর ৩০ বছরের পুরনো এই সেতুটি হঠাৎ ধসে পড়ে(bridge-collapse)। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহান্তে প্রচুর পর্যটকের ভিড়ের কারণে সেতুটি অতিরিক্ত ভার বহন করছিল। সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ফলে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সেতুর উপর চাপ আরও বেড়ে যায়।
পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন সেতুর উপর ছিলেন, এবং অনেকে নদীতে ভেসে গেছেন(bridge-collapse)। এখনও পর্যন্ত পাঁচ থেকে ছয়জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, তবে একজনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে, এবং ২৫ জনেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মাওয়ালের বিধায়ক সুনীল শেলকে জানিয়েছেন, ছয়জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে।
উদ্ধার অভিযান
দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই স্থানীয় পুলিশ, স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এসডিআরএফ), ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) এবং স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। ভারী বৃষ্টি এবং নদীর প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। ১৮টি অ্যাম্বুলেন্স এবং পুলিশ দল ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে(bridge-collapse)। ভারী ক্রেনের সাহায্যে ধ্বংসাবশেষ থেকে যানবাহন উদ্ধার করা হচ্ছে, তবে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল নদীতে ভেসে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কাঠামোগত নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
এই দুর্ঘটনা ইন্দ্রায়ণী নদীর তীরে অবস্থিত অবৈধ নির্মাণ এবং অপর্যাপ্ত তদারকির বিষয়টি পুনরায় সামনে এনেছে। গত মে মাসে, ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের (এনজিটি) নির্দেশে পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (পিসিএমসি) চিখলি গ্রামে ইন্দ্রায়ণী নদীর নীল বন্যা রেখার মধ্যে ৩৬টি অবৈধ বাংলো ভেঙে ফেলেছিল(bridge-collapse)। এই অঞ্চলে নির্মাণ কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও, অবৈধ নির্মাণ অব্যাহত ছিল, যা বন্যার সময় ঝুঁকি বাড়ায়।
কুণ্ডমালার এই সেতুটি ৩০ বছরের পুরনো ছিল এবং সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির কারণে কাঠামোগত দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে বলে কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন(bridge-collapse)। স্থানীয় মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, সপ্তাহান্তে পর্যটকদের ভিড়ের কারণে সেতুর উপর অতিরিক্ত চাপ পড়েছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং কাঠামোগত নিরীক্ষার অভাব এই ধসের অন্যতম কারণ হতে পারে।
নদীর দূষণ ও নিরাপত্তা উদ্বেগ
ইন্দ্রায়ণী নদীতে দফায় দফায় দূষণের সমস্যাও এই দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপটে উল্লেখযোগ্য। গত মে মাসে টাইমস অফ ইন্ডিয়া রিপোর্ট করেছিল যে, ইন্দ্রায়ণী নদীতে প্রচুর পরিমাণে অপরিশোধিত পয়ঃপ্রণালী এবং শিল্প বর্জ্য নির্গত হচ্ছে, যা নদীর পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। পরিবেশবিদ মাধব গাডগিল উল্লেখ করেছিলেন, নদীটি “বিষাক্ত ফেনায় ভরা”। এই দূষণ এবং অবৈধ নির্মাণ নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করছে, যা বন্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
কোচ গম্ভীর ও নির্বাচক আগারকারকে নিয়ে বড় মন্তব্য গিলের
অতীতের ঘটনা
ইন্দ্রায়ণী নদীতে এর আগেও দুর্ঘটনা ঘটেছে(bridge-collapse)। গত মার্চ মাসে, ধুলওয়াড় উৎসব উদযাপনের সময় চিখলি এলাকার তিন যুবক নদীতে ডুবে মারা যান। এপ্রিলে, কুণ্ডমালায় একজন ২১ বছরের যুবক ডুবে মারা যান। এই ঘটনাগুলো নদীর তীরে নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব এবং পর্যটকদের জন্য ঝুঁকি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
পিসিএমসি এবং স্থানীয় প্রশাসনের উপর এখন চাপ রয়েছে যেন সেতুর ধসের কারণ তদন্ত করা হয় এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এনজিটি’র পূর্ববর্তী নির্দেশ অনুসারে, নদীর নীল বন্যা রেখায় নির্মাণ নিষিদ্ধ, এবং এই নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য পরিবেশগত ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে, এই ধরনের নির্দেশ কার্যকর করায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা এই দুর্ঘটনায় প্রকাশ পেয়েছে।
ইন্দ্রায়ণী নদীর সেতু ভেঙে পড়ার (bridge-collapse)এই মর্মান্তিক ঘটনা পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে কাঠামোগত নিরাপত্তা এবং তদারকির গুরুত্ব তুলে ধরেছে। স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ পাটিল বলেন, “এই সেতুটি বহু বছর ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। প্রশাসনের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।”
ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে নিয়মিত কাঠামোগত নিরীক্ষা, কঠোর নির্মাণ নিয়ম পালন এবং পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে, এবং তদন্তের মাধ্যমে দায় নির্ধারণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।