নয়াদিল্লি: নতুন FDTL (IndiGo FDTL Crisis) নিয়ম কার্যকর হওয়ার পর পাইলটদের বিশ্রাম-ঘণ্টা নিয়ে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির জেরে ইন্ডিগো-র বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ নিতে পারে কেন্দ্র। সূত্রের দাবি, দেশের বৃহত্তম বিমান সংস্থার সিইও পিটার এলবার্সকে অপসারণের বিষয়টিও এখন সরকারের নজরে রয়েছে। কারণ, সংস্থার বিশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা, গণবাতিল হওয়া ফ্লাইট এবং হাজারো যাত্রীকে বিমানবন্দরে আটকে পড়ার অভিজ্ঞতা সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যেন সর্বাধিক গুরুতর অবস্থায় পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিমান মন্ত্রক ইন্ডিগোর শীর্ষ আধিকারিকদের তলব করে। সূত্রের দাবি, এবার সংস্থার বিরুদ্ধে “অভূতপূর্ব” কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, সংস্থার ওপর বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানার কথাও ভাবা হচ্ছে। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মার্কেট শেয়ার থাকা দেশের সবচেয়ে বড় বাজেট ক্যারিয়ারের জন্য এটি হতে পারে সবচেয়ে কঠিন সময়।
বিশাখাপত্তনমে চতুর্থ ভারতীয় ব্যাটার হিসাবে ইতিহাসে লিখলেন ‘হিটম্যান’
এক দিনে হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল, পরের দিন আবার শতাধিক বাতিল—এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে আটকে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী। কেউ জরুরি কাজে বেরিয়েছিলেন, কেউ চিকিৎসার জন্য বা পরিবারে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে—কিন্তু ইন্ডিগোর সংকটে বহু যাত্রী ভোগান্তির মুখে পড়ে বিকল্প ফ্লাইট বুক করতে বাধ্য হন। শেষ মুহূর্তে টিকিট বুক করায় তাদের অনেককেই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়।
অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ইন্ডিগোর তরফ থেকে পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়া হয়নি। অনেক বিমানবন্দরে যাত্রীদের সারারাত অপেক্ষা করতে হয়েছে যথাযথ সাহায্য ছাড়াই। এই বিশৃঙ্খলার কারণ ইন্ডিগোর ভুল হিসাব। নতুন FDTL নিয়মে পাইলটদের বিশ্রাম ঘণ্টা বাড়ায় উড়ান পরিচালনার জন্য বেশি পাইলটের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু ইন্ডিগো সেই প্রস্তুতি নেয়নি। ফলে পাইলটের অভাবে ব্যাপক উড়ান বাতিলের পরিস্থিতি তৈরি হয়।
অন্য কোনো এয়ারলাইনের সমস্যা হয়নি সরকারের কঠোর বার্তা বিমানমন্ত্রী রাম মোহন নাইডু জানান, তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে এবং তার ভিত্তিতেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংবাদ মাধ্যমকে কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন “কোনোভাবেই আমরা এ ধরনের পরিস্থিতি মেনে নেব না। আমাদের লক্ষ্য যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য।”
মন্ত্রী আরও জানান, অন্য কোনো এয়ারলাইন নতুন FDTL নিয়ম কার্যকর করতে কোনোরকম সমস্যায় পড়েনি। ফলে ইন্ডিগোর ব্যর্থতাই প্রমাণিত। ইন্ডিগোর দায় স্বীকার তবুও রেহাই মিলছে না। ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্স ইতিমধ্যেই দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, “গতকাল ছিল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দিন। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতির মান বজায় রাখতে পারিনি।”
তবে সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে, ক্ষমা যথেষ্ট নয় দায়িত্বহীনতার জেরে যাত্রীদের যে দুর্ভোগ হয়েছে, তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে। ফ্লাইট সংখ্যা কমানোর কথাও ভাবছে কেন্দ্র। সূত্রের দাবি, ইন্ডিগো যে সংখ্যক উড়ান পরিচালনা করে, তা কমানোর সিদ্ধান্তও আসতে পারে।
এর প্রভাব পড়বে যাত্রীদের ওপর, তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এটি জরুরি বলেই মনে করছে মন্ত্রক। এদিকে যাত্রীদের দুর্ভোগ ঠেকাতে সরকার আপাতত FDTL নিয়ম স্থগিত রেখেছে, যাতে তিন দিনের মধ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
বিমানমন্ত্রী জানিয়েছেন, “সংকট সমাধানের পথে। ইন্ডিগো স্বাভাবিক ক্ষমতায় পৌঁছাতে আরও দু’দিন সময় লাগবে।” পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ এখনও তীব্র। দেশের বৃহত্তম এয়ারলাইন হিসেবে ইন্ডিগোর দায়িত্বও সবচেয়ে বেশি এমন মতই সাধারণ যাত্রী থেকে বিশেষজ্ঞ সবাইয়ের।
