নাশকতার হুমকিতে পাঁচ এয়ারপোর্টে জারি হাই অ্যালার্ট

indigo-air-india-bomb-threat-high-alert-indian-airports

নয়াদিল্লি, ১২ নভেম্বরঃ লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণের মাত্র কয়েকদিন পেরোয়নি, তার মধ্যেই ফের আতঙ্কের ছায়া নেমে এল ভারতের আকাশপথে। বুধবার সকালে একের পর এক হুমকি ইমেল মেলে দেশের শীর্ষ উড়ান সংস্থাগুলিতে। ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স ও এয়ার ইন্ডিয়ার নামে বোমা হামলার হুমকি আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা থেকে শুরু করে রাজ্য প্রশাসন।

Advertisements

সূত্রের খবর, ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের অফিসে এক বেনামী ইমেল আসে, যেখানে লেখা ছিল তাদের একটি বিমানে বোমা পোঁতা হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই বিস্ফোরণ ঘটানো হবে। ইমেল পাওয়ার পর মুহূর্তেই কোম্পানির সিকিউরিটি বিভাগ ও সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়। একই সঙ্গে ইন্ডিগো যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ এয়ারপোর্টে নিয়মিত উড়ান পরিচালনা করে, সেই সমস্ত জায়গায় সতর্কতা জারি করা হয়।

   

দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, হায়দরাবাদ ও তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দরে ঘোষণা করা হয় “হাইঅ্যালার্ট”। বিমানবন্দরের টার্মিনাল থেকে রানওয়ে পর্যন্ত প্রতিটি এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বোম স্কোয়াড, ডগ স্কোয়াড, CISF ও স্থানীয় পুলিশের দল হাতে হাতে তল্লাশি চালাচ্ছে প্রতিটি কোণে। যাত্রীদের ব্যাগ চেকিং ও স্ক্যানিংয়ে কড়াকড়ি করা হয়েছে।

মাথার দাম ৫ লক্ষ! আত্মসমর্পণ করল দুই মাওবাদী কম্যান্ডার

এরই মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার এক ফ্লাইটে নতুন করে আতঙ্ক ছড়ায়। জানা গিয়েছে, মুম্বই থেকে বারাণসী যাওয়ার পথে এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানে বোমা হামলার হুমকি আসে। পাইলট তৎক্ষণাৎ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বার্তা পাঠান। এরপর বিমানটিকে বারাণসীর লাল বাহাদুর শাস্ত্রী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমারজেন্সি ল্যান্ডিং করানো হয়।

বিমান অবতরণের পরেই বিমানবন্দর এলাকায় ছুটে আসে নিরাপত্তা বাহিনী। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে CISF। যাত্রীদের সুরক্ষিতভাবে নামিয়ে এনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। বিমানটিকে রানওয়ের পাশে একটি নির্জন জায়গায় সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বোম স্কোয়াডের দল তল্লাশি শুরু করেছে। একাধিক ব্যাগ খোলা হয়, তবে এখন পর্যন্ত কোনো বিস্ফোরক মেলেনি বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।

Advertisements

বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে, “ইমেলটি খুবই স্পষ্ট ভাষায় লেখা। আমাদের মনে হচ্ছে, এটি আতঙ্ক তৈরি করার একটি প্রচেষ্টা। তবুও আমরা কোনো ঝুঁকি নিচ্ছি না।” এই ঘটনাগুলির পর থেকেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গোটা দেশের বিমানবন্দরগুলিতে সতর্কতা জারি করেছে। ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো ও NIA-র কর্মকর্তারা সূত্র অনুসন্ধান শুরু করেছেন। কে বা কারা এই হুমকির পেছনে রয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে দিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল রাজধানী। তাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন দুই জন এবং আহত হন ১১ জনেরও বেশি মানুষ। সেই ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। ইতিমধ্যে পুলওয়ামা থেকে একাধিক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

দেশজুড়ে যখন একের পর এক হুমকি ও বিস্ফোরণের খবর মিলছে, তখন সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, “জনগণকে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সব বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

তবে একাধিক বিমানবন্দর সূত্রের বক্তব্য, গত কয়েক মাসে এমন হুমকি ইমেল বাড়ছে। এগুলির অনেকটাই ফেক বা হ্যাকড অ্যাকাউন্ট থেকে পাঠানো হয়। কিন্তু নিরাপত্তার খাতিরে প্রতিটি হুমকিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।