সাত বছরের রেকর্ড ভাঙল, উৎসবের আগে বাজারে দামের পতন

West Bengal Mandi Prices Today: Latest Rates for Paddy, Jute, and Potatoes in Key Markets

নয়াদিল্লি: দেশের খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার (India retail inflation) সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ নেমে এল ১.৫৪ শতাংশে, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তর। সোমবার জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর (NSO) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে হেডলাইন ইনফ্লেশনে ৫৩ বেসিস পয়েন্টের পতন হয়েছে।

Advertisements

অর্থনীতিবিদদের ব্যাখ্যায়, অনুকূল বেস ইফেক্ট এবং খাদ্যপণ্যের দামের পতন—এই দুই কারণেই সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। বিশেষত সবজি, ফলমূল, তেল ও চর্বি, ডাল, চাল-গম, ডিম, জ্বালানি ও আলোর দামে উল্লেখযোগ্য কমতি দেখা গেছে।

   

NSO-এর রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, সেপ্টেম্বরে গ্রামীণ অঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ২.১৭ শতাংশে, শহরাঞ্চলে তা ঋণাত্মক ২.৪৭ শতাংশে। অর্থাৎ শহরে খাদ্যদ্রব্যের দাম গত বছরের তুলনায় কমেছে। আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে ১.৬৪ শতাংশ পয়েন্টের পতন ঘটেছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরের পর এই প্রথম খাদ্য মূল্যস্ফীতি এত নিচে নেমেছে। সাধারণ পরিবারের বাজার খরচ তাই কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে।

বড় রাজ্যগুলির মধ্যে কেরালায় সবচেয়ে বেশি সম্মিলিত মূল্যস্ফীতি—৯.০৫ শতাংশ। তার পরে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর (৪.৩৮%), কর্ণাটক (৩.৩৩%), পঞ্জাব (৩.০৬%) এবং তামিলনাড়ু (২.৭৭%)। কেরালায় খাদ্যপণ্যের দাম ও পরিষেবা খাতে ব্যয় বৃদ্ধির ফলে এই হার বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

বাসস্থান (Housing): সেপ্টেম্বরে বাসস্থানের মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৩.৯৮%, যা আগস্টে ছিল ৩.০৯%। শহরাঞ্চলে বাড়ি ভাড়া ও নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাব এতে পরিলক্ষিত।

স্বাস্থ্য (Health): সেপ্টেম্বরে স্বাস্থ্য খাতে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ৪.৩৪%-এ (আগস্টে ছিল ৪.৪০%)। ওষুধ, চিকিৎসা পরিষেবা ও হাসপাতাল ব্যয়ের কিছুটা স্থিতিশীলতা দেখা গিয়েছে।

Advertisements

শিক্ষা (Education): শিক্ষা খাতে মুদ্রাস্ফীতি নেমে এসেছে ৩.৪৪%-এ, আগের মাসে ছিল ৩.৬০%। স্কুল-কলেজের ফি ও বইয়ের দামে তেমন বৃদ্ধি হয়নি।

জ্বালানি ও আলো (Fuel and Light): সেপ্টেম্বরে এই খাতে মুদ্রাস্ফীতি ১.৯৮%, যা আগস্টের ২.৩২% থেকে কম। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কিছুটা কমায় এ হ্রাস।

পরিবহণ ও যোগাযোগ (Transport & Communication): সেপ্টেম্বরে এই খাতে মুদ্রাস্ফীতি সামান্য কমে ১.৮২%-এ নেমেছে, আগস্টে ছিল ১.৯৪%। ডিজেল-পেট্রলের দামের স্থিতিশীলতা এবং টেলিকম খাতে প্রতিযোগিতাই মূল কারণ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ভারতের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আপাতত স্থিতিশীল। রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-র জন্য এটি ইতিবাচক সংবাদ, কারণ মুদ্রাস্ফীতি কম থাকলে ভবিষ্যতের সুদের হার সিদ্ধান্তে নমনীয়তা বজায় রাখা সম্ভব হবে। তবে উৎসবের মরশুমে বাজারে চাহিদা বাড়লে অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও তারা সতর্ক করেছেন।