ভারতের রেলপথ শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম নেটওয়ার্ক। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষকে শহর, মফস্বল থেকে গ্রাম, নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয় রেল। দীর্ঘদিন ধরে দ্রুতগতির ট্রেন বলতে মনে আসত ‘বন্দে ভারত’, ‘গতিমান’ বা ‘শতাব্দী-রাজধানী’। কিন্তু সেই ইতিহাস পাল্টে দিল এক নতুন নাম৷ সকলকে পিছনে ফেলে দ্রুততমর শিরোপা কাড়ল ‘নমো ভারত’।
নতুন প্রজন্মের ট্রেন নমো ভারত
নতুন প্রজন্মের এই ট্রেন এখন দেশের দ্রুততম। ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৬০ কিলোমিটার বেগে ছুটে চলা এই ট্রেন চলছে দিল্লি-গাজিয়াবাদ-মীরাট করিডরে, আঞ্চলিক র্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম (RRTS)-এর অংশ হিসেবে। বর্তমানে ৫৫ কিলোমিটার অংশে চলাচল শুরু হলেও শিগগিরই পুরো ৮২.১৫ কিলোমিটার রুট চালু হবে, যেখানে মোট ১৬টি স্টেশন থাকবে। তখন দিল্লি থেকে মীরাট পৌঁছতে এক ঘণ্টাও লাগবে না, সবক’টি স্টেশনে থেমেও।
কেন ‘নমো ভারত’ দ্রুততম? India’s Fastest Train
রেলের আধুনিক নকশা, এরোডাইনামিক কোচ, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি—অটোমেটিক ট্রেন প্রোটেকশন, অটোমেটিক ট্রেন কন্ট্রোল ও অটোমেটিক ট্রেন অপারেশন-এসবই একে আলাদা করে দিয়েছে। অন্যদিকে, ‘বন্দে ভারত’ বা ‘গতিমান’ একসময় দ্রুততম হলেও এখন তাদের সর্বোচ্চ গতি সীমাবদ্ধ করা হয়েছে ১৩০ কিমি/ঘণ্টায়। ফলে ১৬০ কিমি/ঘণ্টার অনুমোদনপ্রাপ্ত ‘নমো ভারত’ নিঃসন্দেহে দেশের গতি-অগ্রদূত।
ভাড়া কত?
দিল্লি এনসিআর থেকে মীরাট পর্যন্ত সাধারণ এসি কোচের ভাড়া মাত্র ১৫০ টাকা। প্রিমিয়াম কোচে ভাড়া ১৮০ থেকে ২২৫ টাকার মধ্যে। প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর চলা এই ট্রেনে রয়েছে ৬ কোচের সেট, যা যাত্রীদের দীর্ঘ পথের যাত্রায় দ্রুত ও আরামদায়ক অভিজ্ঞতা দেবে।
নতুন যুগের সূচনা
হায়দরাবাদে নকশা তৈরি ও গুজরাটের সাভলিতে অ্যালস্টমের কারখানায় নির্মিত এই ট্রেন কেবল এক পরিবহন নয়, বরং এক নতুন প্রতিশ্রুতি। প্রতিদিনকার যাত্রীদের জন্য যেমন এটি সময় সাশ্রয়ী, তেমনই প্রযুক্তির উৎকর্ষে এটি ভবিষ্যতের ভারতীয় রেলের দিশারি।
নমো ভারত এখন আর শুধু ট্রেন নয়, বরং ভারতের গতি, আধুনিকতা ও নতুন প্রজন্মের চলার প্রতীক।