পড়ুয়াদের বিক্ষোভে রক্তাক্ত বাংলাদেশ, জীবন নিয়ে ফিরছেন ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রীরা

মেধার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশি পড়ুয়ারা কেন হিংস্র হল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিতর্কের মুখে শেখ হাসিনার সরকার। অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে…

Indian students returned home from Bangladesh

মেধার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশি পড়ুয়ারা কেন হিংস্র হল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিতর্কের মুখে শেখ হাসিনার সরকার। অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা চালিয়েছিল সরকারে থাকা দল আওয়ামী লীগের শাখা সংগঠন ছাত্র লীগ। সেই হামলা রুখে পাল্টা হামলা শুরু করেন পড়ুয়ারা। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে, সুযোগটি নেয় ধর্মান্ধ ইসলামি সংগঠনগুলি। তাদেরই নিয়ন্ত্রণে চলে যায় আন্দোলন। রক্তাক্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। শতাধিক নিহত।

গত 72 ঘণ্টা ধরে এই রক্তাক্ত পরিস্থিতি চলেছে। সংঘর্ষ থামাতে বাংলাদেশ সরকার কারফিউ ঘোষণা করে। শনিবার সেনাবাহিনীর টহল চললেও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলছে। প্রতিকুল এই পরিবেশে বাংলাদেশে থাকা ভারতীয়দের বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা জারি করে দূতাবাস।

   

ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন সূত্রে খবর, বাংলাদেশ থাকা 8,500 ভারতীয় ছাত্রদের মধ্যে 405 জনকে এখন পর্যন্ত সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলবে। বাংলাদেশে থাকা এই পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকেই পশ্চিমবঙ্গ, অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের মত সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্যগুলির বাসিন্দা।

নয়াদিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন বাংলাদেশে প্রায় 15,000 ভারতীয়, যার মধ্যে 8,500 ছাত্র ছিল, বর্তমানে সেখানে বসবাস করছে এবং তারা সবাই নিরাপদ।

মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বলেছেন, তিনি ভারতীয় দূতাবাসের সাথে অবিরাম যোগাযোগ করছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা ও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমার তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট রাজ্য প্রশাসন বাংলাদেশে যোগাযোগ রেখে চলেছে।

বর্তমান অবস্থা কি?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সারা বাংলাদেশে কারফিউ ঘোষণা করেছে এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সামরিক বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। ক্যাম্পাস লকডাউন এবং বিক্ষোভ ভাঙতে সরকার পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছে।

আন্দোলনকারীদের দাবি কী?
আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশে কোটা ব্যবস্থার অবসানের দাবি জানিয়েছে যেটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 1971 সালে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়াই করা প্রবীণদের আত্মীয়দের জন্য 30% সংরক্ষণ বরাদ্দ করেছিল। তারা বলছেন, কোটা পদ্ধতি বৈষম্যমূলক এবং হাসিনার সমর্থকদের সুবিধা দিচ্ছে, যার আওয়ামী লীগ দল স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা বরং মেধাভিত্তিক ব্যবস্থা চায়।

বিবিসি’র খবর,বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, হিংসা থামানো এবং সরকারি সম্পদ রক্ষা করার জন্য কারফিউ দিতে হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘যারা কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে তারা এই হিংসার সাথে সম্পৃক্ত নয়। তারা এটা পরিষ্কারভাবে এই কথা জানিয়ে দিয়েছে। আমাদের কাছে আরো পরিষ্কার হয়েছে যে এটা কিছু রাজনৈতিক দলের সন্ত্রাসীরা তাদের নেতাদের উস্কানিতে এটা করছে। আমরা আশা করছি কারফিউ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে পারব।