মোদী ফিরেছেন, কিন্তু টাকার পতন রুখবে কে?

মোদী তৃতীয়বার মসনদে ফিরলেও আগের অবস্থায় কিন্তু কিছুতেই ফিরছে না ভারতীয় রুপি বা টাকা। নামতে নামতে এখন ডলার প্রতি ৮৩ টাকা পেরিয়ে গেল টাকা। গতকাল…

মোদী তৃতীয়বার মসনদে ফিরলেও আগের অবস্থায় কিন্তু কিছুতেই ফিরছে না ভারতীয় রুপি বা টাকা। নামতে নামতে এখন ডলার প্রতি ৮৩ টাকা পেরিয়ে গেল টাকা। গতকাল শনিবার ও রবিবার বাজার খুলতেই দেখা গেল ডলারের নিরিখে ৮৩. ৬৩ তে দাঁড়িয়েছে টাকা। এর আগে গত সপ্তাহে ৮৩.৪৫ টাকায় আটকে ছিল টাকা। এবার সেই গন্ডিও ছাড়িয়ে গেল। যারফলে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তায় পড়েছে দেশের অর্থনৈতিক মহল। বিদেশি বিনিয়োগ ও ব্যবসায়ী মহলেও বাড়ছে উদ্বেগ।

ভারতের অর্থনীতি মূলত আমদানি নির্ভর। আর পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের নিরিখে টাকার দর স্থির রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। তা না হলে অতিরিক্ত আর্থিক চাপে পড়তে হয় ব্যবসায়ী বা আমদানিকারিদের।

   

শুধু তাই নয়, টাকার দাম পড়লে ব্যপক টান পড়ে দেশের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারেও। যার ফলে প্রভাবিত হতে পারে বাজেট, বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ কিংবা আর্থিক সংস্কারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি। এছাড়াও রয়েছে আমদানির ওপর জিএসটির খাঁড়া। ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনাও জড়িত এর সঙ্গে। একদিকে যখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে জেরবার মোদী সরকার তখন টাকার পতন কিন্তু রক্তচাপ কিছুটা বাড়াবে বলেই দাবি অর্থনৈতিক মহলের।

সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে মোদী সরকারের প্রথম সংসদীয় অধিবেশন। এই অধিবেশনেই পেশ করা হবে সরকারের পূর্ণাঙ্গ বাজেট। যার ওপর নির্ভর করছে দেশের কর কাঠামোর সংস্কার, দ্রব্য মূল্য নির্ধারণ সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুতরাং তার আগে টাকার এই লাগামছাড়া পতন কিন্তু চিন্তায় ফেলতে পারে নির্মলা সীতারমনকে।

লোকসভায় ভোটের ফলাফলের পর এক ধাক্কায় সেনসেক্স তলানিতে নেমে যায়। ওই ঘটনায় কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। এমনকি স্বর্বস্ব খুঁইয়ে আত্মহত্যা করেছেন অনেকে। এমনই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি। সংসদ অধিবেশনে এই নিয়েও তোলপাড় হতে পারে বলেও আগাম জানিয়ে রেখেছে বিরোধীরা।

ইউপিএ জমানায় শেষদিকে টাকার পতন নিয়ে সরব হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্ত তাঁর জমানায় গত দশবছরে যেভাবে ঘনঘন টাকার পতন হচ্ছে তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে মোদী সরকার। বিশ্ববাজারে ভারতীয় টাকার দর বাড়াতে ঘুরপথে কৌশল নেয় নয়াদিল্লি। ব্রিকসভুক্ত দেশ ও আফ্রিকার কিছু দেশের সঙ্গে টাকার মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের ওপর জোর দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্ত কোনও না কোনও বিদেশি রাষ্ট্রের অসহযোগিতায় তা সফল হয়নি।