সমুদ্রে দেখা যাবে ভারতের শক্তি, আরও ৩টি স্করপিন-শ্রেণীর সাবমেরিন কিনবে নৌসেনা

ভারতীয় নৌসেনা (Indian Navy) ক্রমাগত তার শক্তি এবং কৌশলগত ক্ষমতা জোরদার করছে। ভারতীয় নৌসেনা শীঘ্রই 36,000 কোটি টাকা ব্যয়ে আরও তিনটি স্কোর্পেন-শ্রেণির সাবমেরিন (Scorpene-class submarines)…

submarine, representational picture

ভারতীয় নৌসেনা (Indian Navy) ক্রমাগত তার শক্তি এবং কৌশলগত ক্ষমতা জোরদার করছে। ভারতীয় নৌসেনা শীঘ্রই 36,000 কোটি টাকা ব্যয়ে আরও তিনটি স্কোর্পেন-শ্রেণির সাবমেরিন (Scorpene-class submarines) ক্রয়ের চূড়ান্ত করতে চলেছে৷ এই সিদ্ধান্ত ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা আরও জোরদার করবে। এছাড়াও, এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় নৌসেনার আধুনিকীকরণ পরিকল্পনা এবং স্বনির্ভর ভারতের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে প্রমাণিত হবে।

Scorpene-শ্রেণীর সাবমেরিনগুলি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত এবং গোয়েন্দা নজরদারি, টর্পেডো এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, মাইন স্থাপন এবং সাবমেরিন-বিরোধী অপারেশনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ভারতীয় নৌসেনার কাছে ইতিমধ্যেই ছয়টি স্কোর্পেন সাবমেরিন (INS কালভারি ক্লাস) রয়েছে এবং এখন তিনটি নতুন সাবমেরিন কেনা এই বহরকে আরও শক্তিশালী করবে।

kolkata24x7-sports-News

   

এই সাবমেরিনের বৈশিষ্ট্য
স্টিলথ ক্ষমতা: এগুলি অদৃশ্য জলের নিচে থাকতে সক্ষম, যার কারণে শত্রু সাবমেরিনগুলোকে ট্র্যাক করতে পারে না।

দীর্ঘমেয়াদী অপারেশন ক্ষমতা: আধুনিক সিস্টেমের সাহায্যে, এটি দীর্ঘ দূরত্বে মিশনগুলি সম্পাদন করতে পারে।

স্মার্ট ওয়েপন সিস্টেম: এই সাবমেরিনগুলি অত্যাধুনিক টর্পেডো এবং অ্যান্টি-শিপ মিসাইল দিয়ে সজ্জিত করা হবে।

ভারতীয় সামুদ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করা: এই সাবমেরিনগুলির সংযোজন ভারতীয় নৌসেনার শক্তি বৃদ্ধি করবে, যা ভারতকে তার সামুদ্রিক এলাকার নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে সক্ষম করবে।

স্বদেশী AIP ব্যবস্থা: স্বনির্ভর ভারতের দিকে বড় পদক্ষেপ
ভারতীয় নৌসেনা এবং DRDO (প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা) যৌথভাবে এয়ার-ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রপালশন (এআইপি) প্রযুক্তি তৈরি করছে। এই প্রযুক্তি সাবমেরিনকে দীর্ঘ সময় ধরে জলের নীচে থাকার ক্ষমতা দেবে, যা অপারেশনের কার্যকারিতা বাড়াবে।

AIP প্রযুক্তির সুবিধা

  • দীর্ঘমেয়াদী আন্ডারওয়াটার অপারেশন: এই সাবমেরিনগুলি সারফেসিং ছাড়াই দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণ করতে পারে।
  • দেশীয় প্রযুক্তি: ভারতে তৈরি AIP সিস্টেম নৌসেনাকে স্বনির্ভর করে তুলবে।
  • উন্নত শক্তি দক্ষতা: ঐতিহ্যগত ডিজেল-ইলেকট্রিক সিস্টেমের তুলনায় আরও দক্ষ শক্তি ব্যবহার।

পারমাণবিক সাবমেরিনের দিকেও শক্তিশালী পদক্ষেপ
এর পাশাপাশি ভারত পারমাণবিক হামলার সাবমেরিন (SSN) তৈরিতেও ত্বরান্বিত করছে। সম্প্রতি দেশীয় পারমাণবিক সাবমেরিনের জন্য ₹40,000 কোটির বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ভারতের কৌশলগত সমুদ্র শক্তিকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাবে।

পারমাণবিক সাবমেরিনের বৈশিষ্ট্য

  • সীমাহীন অপারেশন: এই সাবমেরিনগুলিকে বারবার পৃষ্ঠে আসার প্রয়োজন হয় না।
  • অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থা: এই সাবমেরিনগুলি দীর্ঘ দূরত্বে প্রাণঘাতী আক্রমণ চালাতে পারে।
  • কৌশলগত সুবিধা: পারমাণবিক শক্তিতে সজ্জিত হওয়ায় এটি শত্রুর যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে।

ভারতীয় নৌসেনার এই কৌশল দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা ও স্বনির্ভরতার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ। নতুন স্করপেন সাবমেরিন কেনা, দেশীয় এআইপি প্রযুক্তি এবং পারমাণবিক সাবমেরিনের উন্নয়নের মাধ্যমে ভারতের সামুদ্রিক শক্তি বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। এতে সামুদ্রিক নিরাপত্তা জোরদার হবে। দেশীয় প্রতিরক্ষা উৎপাদনকে উন্নত করা হবে এবং ভারতের কৌশলগত শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এই সিদ্ধান্ত শুধু ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাই বাড়াবে না, আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতীয় নৌসেনাকে আরও প্রভাবশালী করে তুলবে।