নয়াদিল্লি, ২৮ অক্টোবর: ভারত ক্রমাগত তার সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। ইতিমধ্যে, ভারতীয় নৌবাহিনী (Indian Navy) একটি নতুন উৎসাহ পেতে চলেছে। ৬ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে, দেশীয়ভাবে নির্মিত সার্ভে ভেসেল ইক্ষক (Survey Vessel Ikshak) নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করবে। কোচি নৌঘাঁটিতে (Kochi Naval Base) এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হবে। নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে. ত্রিপাঠী উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে।
ইক্ষক হল ভারতীয় নৌবাহিনীর তৃতীয় জরিপ জাহাজ। কলকাতায় গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (জিআরএসই) দ্বারা নির্মিত, ইক্ষক তার ৮০% এরও বেশি উপাদান এবং প্রযুক্তি ভারতে তৈরি করে, যা স্বনির্ভর ভারতের চেতনাকে প্রতিফলিত করে। এই প্রকল্পটি ভারতের হাইড্রোগ্রাফিক উৎকর্ষতা এবং স্বদেশীকরণের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে. ত্রিপাঠীর সভাপতিত্বে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জরিপ জাহাজের (বৃহৎ শ্রেণীর) তৃতীয় জাহাজ ইক্ষক আনুষ্ঠানিকভাবে নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হবে।
এই জাহাজটি সামুদ্রিক মানচিত্র এবং জরিপ কার্যক্রম সম্পাদন করবে। প্রয়োজনে এটি দুর্যোগ ত্রাণ এবং হাসপাতালের জাহাজ হিসেবেও কাজ করতে পারে। ইক্ষক জরিপ জাহাজটি সমগ্র সমুদ্রতল স্ক্যান করবে, চার্ট তৈরি করবে এবং নৌচলাচলের জন্য নিরাপদ রুট চিহ্নিত করবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ইক্ষক মহিলা নাবিকদের জন্য পৃথক থাকার ব্যবস্থা করেছে। এই উদ্যোগটি নৌবাহিনীর আধুনিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতির প্রতিফলন ঘটায়।
জাহাজটির নামও অনন্য। ইক্ষক অর্থ পথপ্রদর্শক, অথবা যিনি দিকনির্দেশনা দেন। এই জাহাজটি ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং শক্তিকে আরও শক্তিশালী করবে। জাহাজটি ১১০ মিটার লম্বা এবং প্রায় ৩,৮০০ টন ওজনের। দুটি ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা চালিত, ইক্ষক ২৫ দিনেরও বেশি সমুদ্রে টিকে থাকতে পারে।
ইক্ষক জাহাজটি অত্যাধুনিক হাইড্রোগ্রাফিক সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত এবং এটি সর্বোচ্চ ১৮ নটিক্যাল মাইল প্রতি ঘন্টা গতিতে ভ্রমণ করতে পারে। এটি ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ভারতের কৌশলগত উপস্থিতি জোরদার করবে। এটি নতুন উপগ্রহ-ভিত্তিক নেভিগেশন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি অত্যাধুনিক সেন্সর ব্যবহার করে সমুদ্রের গভীরতা এবং ভূখণ্ডের নিখুঁতভাবে মানচিত্র তৈরি করবে।
“জরিপ জাহাজ (বৃহৎ)” হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ চারটি জাহাজের মধ্যে ইক্ষক তৃতীয়। এই শ্রেণীর প্রথম জাহাজ, আইএনএস সন্ধ্যাক, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এবং দ্বিতীয় জাহাজ, আইএনএস নির্দেশক, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কমিশন করা হয়েছিল। এই চারটি জাহাজের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১৮ সালের অক্টোবরে।



