ভারতীয় নৌবাহিনী (Indian Navy) ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নিজেদের কৌশলগত আধিপত্য আরও শক্তিশালী করতে আগামী এক বছরের মধ্যে দেশে নির্মিত ছয়টি অত্যাধুনিক স্টিলথ ফ্রিগেট নৌবহরে যুক্ত করতে চলেছে। এই উদ্যোগ চীনের ক্রমবর্ধমান নৌ-উপস্থিতি মোকাবিলা এবং এই গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র অঞ্চলে ভারতের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার লক্ষ্যে গৃহীত।
মুম্বইয়ের (Indian Navy) মাঝগাঁও ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড (এমডিএল) এবং কলকাতার গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (জিআরএসই)-এর প্রকল্প ১৭এ-এর অধীনে এই ফ্রিগেটগুলো নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে মহেন্দ্রগিরি নামে একটি ফ্রিগেট ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রতীক হয়ে উঠেছে।প্রকল্প ১৭এ-এর ফ্রিগেটগুলোর মধ্যে রয়েছে ইএনএস নীলগিরি, উদয়গিরি, হিমগিরি, তরাগিরি, এবং আরও দুটি জাহাজ, যা শিবালিক-শ্রেণির ফ্রিগেটের উন্নত সংস্করণ।
এই জাহাজগুলোর (Indian Navy) ওজন ৬,৬৭০ টন, দৈর্ঘ্য ১৪৯ মিটার, সর্বোচ্চ গতি ২৮ নট, এবং এগুলো ২২৫ জন ক্রু বহন করতে সক্ষম। অত্যাধুনিক স্টিলথ প্রযুক্তি, ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল, বারাক-৮ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল, ৭৬ মিমি নৌবন্দুক, টর্পেডো, এবং অ্যান্টি-সাবমেরিন রকেট দিয়ে সজ্জিত এই ফ্রিগেটগুলো ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
ভারত মহাসাগর, (Indian Navy) যা বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের ক্রমবর্ধমান নৌ-কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভি (পিএলএএন) এই অঞ্চলে ঘাঁটি স্থাপন এবং অ্যান্টি-পাইরেসি অপারেশনের নামে নিয়মিত টহল বাড়িয়েছে।
ভারত, (Indian Navy)যিনি এই অঞ্চলের প্রধান নৌশক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, এই ফ্রিগেটগুলোর মাধ্যমে চীনের কৌশলগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এছাড়া, পাকিস্তানের নৌবাহিনীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং সমুদ্রপথে বাণিজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও এই উদ্যোগের লক্ষ্য।ইএনএস উদয়গিরি, প্রকল্প ১৭এ-এর দ্বিতীয় ফ্রিগেট, ২০২৫-এর ১ জুলাই এমডিএল থেকে নৌবাহিনীতে হস্তান্তরিত হয়েছে।
মাত্র ৩৭ মাসে নির্মিত (Indian Navy) এই ফ্রিগেটটি ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এটি উন্নত রাডার-শোষণকারী উপকরণ এবং স্বল্প-শব্দ প্রপালশন সিস্টেম দিয়ে সজ্জিত, যা এটিকে শত্রুপক্ষের রাডারে ধরা পড়া কঠিন করে। এই ফ্রিগেটগুলো সাবমেরিন-বিরোধী যুদ্ধ, আকাশ প্রতিরক্ষা, এবং পৃষ্ঠযুদ্ধে বহুমুখী ক্ষমতা প্রদান করবে।
অন্যদিকে, (Indian Navy) রাশিয়ার সহযোগিতায় নির্মিত তুষিল-শ্রেণির ফ্রিগেট ইএনএস তামল ২০২৫-এর ১ জুলাই কালিনিনগ্রাদের ইয়ানতার শিপইয়ার্ডে কমিশন করা হয়েছে। ৩,৯০০ টন ওজনের এই ফ্রিগেটটি ভারতের পশ্চিম নৌ কমান্ডের অধীনে কারওয়ারে মোতায়েন করা হবে। এটি ভারত-রাশিয়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতার একটি উদাহরণ এবং ভারতের নৌশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
নৌবাহিনীর (Indian Navy) এই উদ্যোগ ভারতের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘আত্মনির্ভর ভারত’ নীতির প্রতিফলন। প্রকল্প ১৭এ-এর ফ্রিগেটগুলোর জন্য ৪০,০০০ কোটি টাকার চুক্তি দেশীয় শিপইয়ার্ডগুলোর মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে, যা স্থানীয় শিল্প ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়ক। নৌবাহিনী বর্তমানে ৪০টিরও বেশি জাহাজ ও সাবমেরিন নির্মাণাধীন রয়েছে, যার অধিকাংশই দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি।
ভারত মহাসাগরে (Indian Navy) নৌ-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোয়াড জোটের মাধ্যমে কাজ করছে। এই ফ্রিগেটগুলো ভারতের নৌবাহিনীকে এই অঞ্চলে আরও কার্যকরভাবে ভূমিকা পালনের সুযোগ দেবে।
১০ মিনিটেই বাড়ি পৌঁছাবে Jio-র ফোন! মাত্র ৭৯৯ টাকায় Swiggy Instamart থেকে কিনুন
সামাজিক মাধ্যমে (Indian Navy) এই খবরে উৎসাহ প্রকাশ করে একজন নেটিজেন লিখেছেন, “ভারতীয় নৌবাহিনীর এই পদক্ষেপ ভারতকে সমুদ্রে অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত করবে।”এই ফ্রিগেটগুলোর যুক্তি ভারতের নৌশক্তি এবং আঞ্চলিক প্রভাবকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। ভারত মহাসাগরে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার পাশাপাশি এটি ভারতের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।