প্রায় আড়াই বছর ধরে সমুদ্র যুদ্ধের মহড়া দেওয়ার পর অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় নৌসেনার (Indian Navy) অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে আইএনএস সুরত (INS Surat)। ভারতীয় নৌসেনার হাতে ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে এই ডেস্ট্রয়ারটি তুলে দেওয়া হয়, যা ‘বিশাখাপত্তনম গোত্রের’ একটি অত্যাধুনিক গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার। এই ডেস্ট্রয়ারটি শীঘ্রই নৌসেনায় কমিশন প্রাপ্ত হবে এবং তার পর থেকে এটি ভারতীয় নৌসেনার শক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আইএনএস সুরতের অন্তর্ভুক্তি ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য একটি বড় সাফল্য এবং একটি নতুন যুগের সূচনা। এর আগে, ২০২২ সালের মে মাসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ মুম্বইয়ের মাঝগাঁও ডক ইয়ার্ডে এটি জলে ভাসিয়েছিলেন। তখন থেকেই ডেস্ট্রয়ারটি সমুদ্র যুদ্ধে বিভিন্ন অনুশীলনে অংশ নিয়ে আসছে এবং এর যাবতীয় অস্ত্রাগার প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র, কামান, টর্পেডো ইত্যাদি, যা এটিকে অত্যন্ত শক্তিশালী ও সক্ষম করে তুলেছে।
আইএনএস সুরত ভারতীয় নৌসেনার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি চতুর্থ পি-১৫বি শ্রেণির গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার। এর পূর্ববর্তী তিনটি যুদ্ধজাহাজের মতোই, এই ডেস্ট্রয়ারটিও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা সজ্জিত, যা সমুদ্র যুদ্ধে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কার্যকরীভাবে লড়াই করতে সক্ষম। বিশেষ করে, এই ডেস্ট্রয়ারের ডিজাইন ও নির্মাণে নেভি টেকনোলজি অত্যন্ত উন্নত। এর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাগুলি বিপদজনক পরিস্থিতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাতে সক্ষম।
আইএনএস সুরতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল তার আক্রমণাত্মক ও প্রতিরক্ষা ক্ষমতা। এটি একাধিক ধরনের মিসাইল দিয়ে সজ্জিত, যা দূরত্বের উপর নির্ভর করে সমুদ্র, বায়ু এবং ভূমি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। একই সঙ্গে, এতে অত্যাধুনিক রাডার সিস্টেম এবং সেন্সর ব্যবস্থাও রয়েছে, যা তার চারপাশের পরিস্থিতি সঠিকভাবে নিরীক্ষণ করতে সক্ষম। এ ছাড়া, জাহাজটি টর্পেডো, শত্রুর মিসাইল প্রতিরোধে সক্ষম শক্তিশালী ডিফেন্স সিস্টেম দ্বারা সজ্জিত।
কংগ্রেসের ম্যাপে বাদ অধিকৃত কাশ্মীর-আকসাই চিন
ডেস্ট্রয়ারটির নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে, এবং এক দশকের মধ্যে এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মাঝগাঁও ডক ইয়ার্ডে নির্মিত এই জাহাজটির ডিজাইন ও নির্মাণের ক্ষেত্রে ভারতীয় প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এটি একদিকে যেমন ভারতের আত্মনির্ভরশীলতা এবং প্রতিরক্ষা খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতার সাফল্য, তেমনি এটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তি প্রদর্শন।
আইএনএস সুরত ভারতীয় নৌসেনার জন্য একটি গর্বের বিষয় এবং দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এটি নতুন একটি শক্তি যোগ করবে। এটি ভারতীয় নৌসেনার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং ভারতীয় সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সুরত ভারতের আন্তর্জাতিক নৌ শক্তির দৃঢ়তাকেও প্রদর্শন করবে এবং এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নৌ সামরিক সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করবে।
পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে ক্রাইম ব্রাঞ্চ জালে হানি ট্র্যাপ গ্যাং
সংক্ষেপে, আইএনএস সুরত ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি নতুন শক্তি, যা আধুনিক প্রযুক্তি এবং সামরিক দক্ষতায় সমৃদ্ধ। এটি ভারতের সামরিক ক্ষমতা এবং নিরাপত্তা শক্তির বৃদ্ধি ঘটাবে এবং দেশকে বিশ্বে আরও একটি শক্তিশালী নৌ শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। এমনটাই মনে করছে সামরিক বিশেষজ্ঞমহল।