ভারতের বহুস্তরীয় বিমান প্রতিরক্ষার সঙ্গে কিংবদন্তি পেসারদের তুলনা ভারতীয় ডিজিএমওর

ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (dgmo) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই সোমবার ভারতের বহুস্তরীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের পক্ষে…

dgmo india compares air deffence with pacers

ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (dgmo) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই সোমবার ভারতের বহুস্তরীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের পক্ষে ভারতের বিমানঘাঁটি এবং লজিস্টিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোর কোনো সম্ভাবনা ছিল না।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ঘাই বলেন (dgmo)

একটি সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ঘাই (dgmo) ভারতের কাউন্টার-আনম্যানড এয়ারিয়াল সিস্টেম, বিমান প্রতিরক্ষা অস্ত্র এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধের মাধ্যমগুলোর অনন্য সমন্বয়ের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমাদের তালিকায় কাউন্টার-আনম্যানড এয়ারিয়াল সিস্টেম, বিমান প্রতিরক্ষা অস্ত্র এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধের মাধ্যমগুলোর একটি অনন্য সমন্বয় রয়েছে।

   

এই কারণেই আপনারা দেখেছেন, ৯ ও ১০ মে পাকিস্তান বিমান বাহিনী যখন আমাদের বিমানঘাঁটি এবং লজিস্টিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়, তখন তারা আমাদের এই শক্তিশালী বিমান প্রতিরক্ষা গ্রিড ভেদ করতে ব্যর্থ হয়।”

তিনি আরও বলেন, “আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, কতগুলো স্তর, কাউন্টার, আনম্যানড এয়ারিয়াল সিস্টেম, তার পিছনে কাঁধে বহনযোগ্য অস্ত্র, আমাদের পুরনো বিমান প্রতিরক্ষা অস্ত্র এবং সর্বশেষে আমাদের আধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। পাকিস্তানের পক্ষে আমাদের বহুস্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে বিমানঘাঁটি এবং লজিস্টিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত করার কোনো সম্ভাবনা ছিল না।”

কিংবদন্তি বোলার ডেনিস লিলি এবং জেফ থমসনের উদাহরণ

অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি বোলার ডেনিস লিলি এবং জেফ থমসনের উদাহরণ দিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ঘাই (dgmo) বলেন, ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একইভাবে স্তরে স্তরে কাজ করে পাকিস্তানের হামলা ধ্বংস করেছে। তিনি বলেন, “আমাদের বিমানঘাঁটি এবং লজিস্টিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করা অত্যন্ত কঠিন (dgmo)। আমি দেখেছি বিরাট কোহলি সবেমাত্র টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন; তিনি আমার প্রিয় খেলোয়াড়দের একজন।

১৯৭০-এর দশকে, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে অ্যাশেজ সিরিজে, দুই অস্ট্রেলিয়ান বোলার ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ ধ্বংস করেছিলেন। তখন অস্ট্রেলিয়ায় একটি প্রবাদ ছিল—‘অ্যাশেজ টু অ্যাশেজ, ডাস্ট টু ডাস্ট, ইফ থমো ডোন্ট গেট ইয়া, লিলি মাস্ট’। আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার স্তরগুলো দেখলে আপনারা বুঝতে পারবেন আমি কী বলতে চাইছি।

তিনি (dgmo) সীমান্ত রক্ষা বাহিনী (বিএসএফ)-এর অবদানেরও প্রশংসা করেন, যারা পাকিস্তানের হামলা প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি বলেন, “এখানে আমি বিএসএফ-এরও প্রশংসা করতে চাই। প্রতিটি সৈনিক আমাদের মিশনে অবদান রেখেছে।

Advertisements

তাদের কাউন্টার-আনম্যানড সিস্টেমও আমাদের বহুস্তরীয় গ্রিড ব্যবস্থার অংশ ছিল। আপনারা নিশ্চয়ই এই প্রবাদ শুনেছেন, ‘যখন হৌসলে বুলন্দ হো তব মঞ্জিলে ভি কদম চুমতি হ্যায়’। শেষে আমি আবারও উল্লেখ করতে চাই যে প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা সফল হয়েছি (dgmo)।”

স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে নিষিদ্ধ উগ্রপন্থীকে ধর্মযাজক বলে অপপ্রচার পাকিস্তানের

অপারেশন সিঁদুর

‘অপারেশন সিঁদুর ’ ৭ মে শুরু হয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে একাধিক জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালানো। এই অভিযান গত মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে একটি মারাত্মক জঙ্গি হামলার প্রতিক্রিয়ায় পরিচালিত হয়, যাতে ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। রবিবার ন্যাশনাল মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিনটি শাখার সিনিয়র অপারেশনাল কমান্ডাররা ‘অপারেশন সিঁদুর ’-এর প্রধান ফলাফল প্রকাশ করেন।

এই অভিযানে ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গি নিহত হয় এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ১১টি বিমান ঘাঁটিতে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধিত হয়। স্থল, সমুদ্র এবং আকাশপথে পরিচালিত এই অভিযানগুলো সংযমের সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়, যাতে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা ন্যূনতম রাখা যায়। সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানকে স্পষ্ট সতর্কবাণী দিয়ে বলেছে, “এবার যদি পাকিস্তান কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সাহস করে, তবে পাকিস্তান জানে আমরা কী করতে যাচ্ছি।”

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান

এই অভিযান ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন। পাকিস্তানের জঙ্গি শিবিরগুলি ধ্বংস করার জন্য ভারতের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও একটি শক্তিশালী বার্তা। ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রস্তুতি পাকিস্তানের হামলা প্রতিহত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিএসএফ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টা এই অভিযানের সাফল্যে অবদান রেখেছে।

এই ঘটনা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আরও তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের স্পষ্ট বার্তা এবং সামরিক সক্ষমতা পাকিস্তানকে সতর্ক করেছে যে ভবিষ্যতে যেকোনো উসকানির জবাবে ভারত কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্য ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি অঙ্গীকার এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার দৃঢ়তার প্রমাণ।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News