প্রতিবেশী দেশগুলিতে অস্থিরতা, অশান্তির আবহে সামরিক বাজেট বৃদ্ধি ভারতের

ভারতীয় সেনার (Indian Army) আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়ায় গতি আনতে এবং দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করতে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি অন্তর্বর্তী বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ…

Indian Army increase budget for the defence sector amid tension with neighbouring countries

ভারতীয় সেনার (Indian Army) আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়ায় গতি আনতে এবং দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করতে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি অন্তর্বর্তী বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। কমিটি মনে করছে, বর্তমান বরাদ্দ যথেষ্ট নয় এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে আধুনিক প্রযুক্তি ও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করার জন্য আরও বেশি অর্থের প্রয়োজন। এই প্রস্তাবের অনুমোদনের ফলে সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণের কাজ ত্বরান্বিত হবে এবং দেশীয় প্রতিরক্ষা খাতে নতুন দিশা খুলবে। 

কংগ্রেসের সঙ্গে বাড়ছে দূরত্ব, মমতার নেতৃত্বকেই সমর্থন তৃণমূল সহ ইন্ডিয়া’র

   

কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘‘প্রতিবেশী দেশের সামরিক খাতে ব্যয়বরাদ্দ বৃদ্ধির সঙ্গে আনুপাতিক ভারসাম্য রক্ষা করতেই এই পদক্ষেপের প্রয়োজন।’’ অর্থাৎ, ভারতের প্রতিরক্ষা খাতের বাজেট বৃদ্ধি করার মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশের সামরিক শক্তির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। বিশেষত, পাকিস্তান ও চীনের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির দিকে ভারতের যথাযথ প্রতিক্রিয়া জানাতে হলে আরও বেশি বরাদ্দ প্রয়োজন। এটি শুধুমাত্র অস্ত্রশস্ত্রের আধুনিকীকরণই নয়, সেনার প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি, লজিস্টিকস, এবং অন্যান্য সামরিক সুবিধার উন্নতিও নিশ্চিত করবে।

বর্তমানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়েছে, তবে প্রয়োজনীয় সব আধুনিক প্রযুক্তি, অস্ত্র এবং যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। তাই, কমিটি বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে, যা সেনাবাহিনীকে আরো শক্তিশালী এবং আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত করতে সহায়ক হবে। কমিটির মতে, আধুনিক যুদ্ধের ধরন এবং প্রযুক্তি অনুযায়ী সেনাবাহিনীকে আপগ্রেড করা অত্যন্ত জরুরি। 

ওয়াল স্ট্রিটের আতঙ্ক ভারতের বাজারে: সেনসেক্স ক্র্যাশ, পতন নিফটিতে

লোকসভার বিজেপি সাংসদ এবং প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রাধামোহন সিংহ এই প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘বর্ধিত বাজেট বরাদ্দ প্রতিরক্ষায় ‘আত্মনির্ভরতা’ বাড়াতে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির উপর জোর দেবে।’’ ভারত সরকার প্রতিরক্ষা খাতে স্বনির্ভরতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে দেশীয় অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের উৎপাদন বৃদ্ধি করা। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারত বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে চায় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে নির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করছে।

তবে, একদিকে যেখানে দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের উন্নয়ন ঘটানো হবে, অপরদিকে জরুরি প্রয়োজনে আধুনিক অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিদেশ থেকে আমদানি করা হবে। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক চাহিদাগুলো পূরণ করতে এবং দ্রুত প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে বিদেশী অস্ত্র এবং সরঞ্জাম আমদানির প্রস্তাবও রয়েছে। এই পদক্ষেপটি বিশেষত সেই সময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যখন যুদ্ধ বা সীমান্ত সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে এবং ভারতের দ্রুত অস্ত্র সরবরাহের প্রয়োজন হতে পারে।

ভারতীয় সেনার আধুনিকীকরণের জন্য এই অতিরিক্ত বরাদ্দের ফলে যেমন দেশের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, তেমনি এটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করবে। প্রতিবেশী দেশের সামরিক খাতে বাড়ানো ব্যয়ের সাথে তাল মিলিয়ে ভারতকে তার সামরিক শক্তি আরও উন্নত করতে হবে। এভাবে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ভারত তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে সক্ষম হবে।

ভারতে ক্যাম্পাস করছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়

এছাড়া, ভারতীয় প্রতিরক্ষা শিল্পে স্বনির্ভরতা অর্জন দেশের অর্থনীতির জন্যও উপকারী হবে। দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি হলে নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং দেশের আর্থিক অবস্থাও শক্তিশালী হবে। তাই, এই বাজেট বৃদ্ধির প্রস্তাব শুধু সামরিক শক্তির জন্য নয়, বরং জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।