জম্মু ও কাশ্মীরের কিশতওয়ার জেলায় ফের শুরু হয়েছে সেনা (Indian Army) ও জঙ্গিদের মধ্যে রুদ্ধশ্বাস এনকাউন্টার। শুক্রবার রাত প্রায় আটটা নাগাদ এই সংঘর্ষ শুরু হয়। সেনা জানিয়েছে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে নেমেই তারা জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে।
হোয়াইট নাইট কর্পস-এর জওয়ানরা এদিন বিশেষ টহলদারির সময় কিশতওয়ারের একটি নির্জন এলাকায় জঙ্গিদের উপস্থিতির খবর পান। তারপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয় এবং জঙ্গিদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়।
এদিকে গুলির শব্দে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংঘর্ষ আরও তীব্র আকার নেয়। সেনারা আশপাশের গ্রামগুলিকে ঘিরে ফেলে এবং স্থানীয়দের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রশাসন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ওই অঞ্চলে জরুরি কারফিউ জারি করেছে।
অভিযান চলাকালীন সেনার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ঠিক কতজন জঙ্গি ওই এলাকায় লুকিয়ে রয়েছে তা নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও, প্রাথমিক অনুমান অন্তত ২-৩ জন জঙ্গি সেনার সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছে। সেনার বিশেষ কমান্ডো টিম ইতিমধ্যেই এলাকায় প্রবেশ করেছে এবং ধাপে ধাপে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কিশতওয়ারের ভূপ্রকৃতি জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার জন্য অনুকূল। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ও ঘন জঙ্গলে সহজেই তারা আত্মগোপন করতে পারে। তাই দীর্ঘদিন ধরেই এই অঞ্চলকে জঙ্গিদের আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সেনা গত কয়েক বছরে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে বড় জঙ্গি নেটওয়ার্ক গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তবুও এখনও মাঝেমধ্যে নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এনকাউন্টারের কারণে কিশতওয়ারের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রশাসন পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে এবং সেনার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিটি পদক্ষেপ নিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্তপারের জঙ্গি কার্যকলাপ দমন করতে সেনা যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। গত কয়েক মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জেলায় একাধিকবার সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ ঘটেছে। রাজৌরি, পুনচ, অনন্তনাগ ও কুলগামের পর এবার কিশতওয়ার ফের সেনা অভিযানের কেন্দ্রে।
রাতভর সেনা অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উচ্চপদস্থ সেনা অফিসার জানিয়েছেন— “অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেনারা পিছিয়ে আসবে না। দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় এই লড়াই অব্যাহত থাকবে।”
ফলে গোটা অঞ্চলে এখন চূড়ান্ত উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেনার তৎপরতা এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান স্পষ্ট করে দিচ্ছে, জম্মু-কাশ্মীরের প্রতিটি কোণ থেকে জঙ্গি নেটওয়ার্ক গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসন ও সেনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।