১২০০ যুদ্ধবিমান, স্বনির্ভরতার উড়ান! আকাশ থেকে মহাকাশে এভাবেই শক্তিশালী হবে বায়ুসেনা

নয়াদিল্লি, ৯ অক্টোবর:  ভারতীয় বায়ুসেনা (Indian Air Force) তাদের ২০৪৭ সালের রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে, যা দেশের প্রতিরক্ষা কৌশলকে নতুন রূপ দেয় (IAF Modernisation)। এই রোডম্যাপটি…

After Pahalgam Attack, Indian Air Force Launches Major Exercise Over North Bengal Skies

নয়াদিল্লি, ৯ অক্টোবর:  ভারতীয় বায়ুসেনা (Indian Air Force) তাদের ২০৪৭ সালের রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে, যা দেশের প্রতিরক্ষা কৌশলকে নতুন রূপ দেয় (IAF Modernisation)। এই রোডম্যাপটি আকাশ থেকে মহাকাশ পর্যন্ত বিমান বাহিনীকে একটি শক্তিশালী এবং স্বনির্ভর বাহিনীতে রূপান্তরিত করার একটি দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে। বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ.পি. সিং বলেছেন যে ভারতকে পরাশক্তি হতে হলে স্বনির্ভরতা অপরিহার্য।

Advertisements

এই নতুন পরিকল্পনায় বিমান বাহিনীর কাঠামোতে দেশীয় উৎপাদন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং মহাকাশ-ভিত্তিক ক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত করার রূপরেখা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

IAF Modernisation: প্রযুক্তি এবং গবেষণা ও উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া
রোডম্যাপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো গবেষণা ও উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া। বিমান বাহিনী বিশ্বাস করে যে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য, ভারতকে বিমান ইঞ্জিন, AESA রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি এবং এভিওনিক্সে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। সরকার গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য ডিআরডিওকে ১৪,৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তবে, এই দিকে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

অপারেশন সিঁদুরের সময় রাশিয়ান S-400 বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাফল্যের পর, বিমান বাহিনী এখন আগামী দশকে এর দেশীয় সংস্করণ তৈরির লক্ষ্য নিয়েছে।

অপারেশন সিঁদুরের সময় রাশিয়ান S-400 বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাফল্যের পর, বিমান বাহিনী এখন আগামী দশকে এর দেশীয় সংস্করণ তৈরির লক্ষ্য নিয়েছে। রোডম্যাপ অনুসারে, ২০৪৭ সালের মধ্যে বিমান বাহিনীর বহর থাকবে ৫৭ থেকে ৬০টি স্কোয়াড্রন, অর্থাৎ প্রায় ১,০০০ থেকে ১,২০০টি যুদ্ধবিমান।

IAF Modernisation: এই বহরে ৩০০টি এলসিএ তেজস বিমান থাকবে
১১৪টি নতুন রাফালে জেট (মেক ইন ইন্ডিয়ার অধীনে উৎপাদিত) এএমসিএ (অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট), ভারতের পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ মাল্টি-রোল জেট (প্রায় ১৮০,২০০ বিমান) এর সাথে সাথে, বিমান বাহিনী তার বিদ্যমান ২৭০টি Su-30MKI বিমান আপগ্রেড করতে চলেছে।

IAF Modernisation: বিমান ও মহাকাশ বাহিনী হওয়ার দিকে পদক্ষেপ
বিমান বাহিনীর ২০৪৭ সালের দৃষ্টিভঙ্গি কেবল আকাশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আইএএফ এখন ভারতীয় বিমান ও মহাকাশ বাহিনী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে, ভারতের মহাকাশ সম্পদ রক্ষার জন্য তার মহাকাশ-ভিত্তিক নজরদারি, নেভিগেশন এবং পাল্টা-মহাকাশ ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। এর পাশাপাশি, কমান্ড, কন্ট্রোল এবং অপারেশনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি বিশেষ AI রোডম্যাপের কাজ চলছে।

IAF Modernisation: দেশীয় হেলিকপ্টার এবং পরিবহন বিমান
বিমান বাহিনীর পরিবহন বহরকে শক্তিশালী করার জন্য টাটা-এয়ারবাস ভারতে C-295 বিমান তৈরি করছে। ভবিষ্যতে, বিমান বাহিনী ইন্ডিয়ান মাল্টি-রোল হেলিকপ্টার (IMRH) তৈরি করবে, যা পুরনো Mi-17 হেলিকপ্টারগুলিকে প্রতিস্থাপন করবে। প্রচণ্ড (LCH) এবং ধ্রুব (ALH) হেলিকপ্টারগুলির অন্তর্ভুক্তির কাজও দ্রুত এগিয়ে চলেছে।

IAF Modernisation: মানবচালিত এবং মানবহীন বিমান যানবাহনের ভারসাম্য রক্ষা
আইএএফ বিশ্বাস করে যে ভবিষ্যতেও মানবচালিত যুদ্ধবিমান ভূমিকা পালন করবে, যদিও তাদের পরিপূরক হিসেবে মানবহীন যুদ্ধ ড্রোন (ইউসিএভি) ব্যবহার করা হবে। এই ক্ষেত্রে বিমান বাহিনী ডিআরডিওর মারাত্মক ইউসিএভি প্রকল্পকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করছে।

IAF Modernisation: আত্মনির্ভর ভারতের দিকে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ

এই রোডম্যাপটি কেবল ভারতকে একটি আত্মনির্ভর প্রতিরক্ষা শক্তিতে পরিণত করবে না বরং আগামী কয়েক দশক ধরে দেশের আকাশ ও মহাকাশ নিরাপত্তাকেও শক্তিশালী করবে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর ২০৪৭ সালের দৃষ্টিভঙ্গি সত্যিই একটি আত্মনির্ভর ভারতের দিকে একটি যাত্রা।