মার্কিন নির্বাচনে কমলা হ্যারিসের জয়ের জন্য প্রার্থনা করছে ভারতের এই ছোট্ট গ্রাম

US Presidential Election 2024: পুরো বিশ্ব বর্তমানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নিঃশ্বাস নিয়ে অপেক্ষা করছে, যা এবার ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং…

Kamala Harris

short-samachar

US Presidential Election 2024: পুরো বিশ্ব বর্তমানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নিঃশ্বাস নিয়ে অপেক্ষা করছে, যা এবার ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ঘনিষ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিণত হয়েছে। এই প্রতিযোগিতা শুধু আমেরিকাতেই সীমাবদ্ধ নয়, ভারতের একটি ছোট গ্রামের মানুষও হ্যারিসের জয়ের জন্য প্রার্থনা করছে। এই গ্রামটি তামিলনাড়ুতে অবস্থিত, যেখানে প্রতিদিন হ্যারিসের জন্য বিশেষ পুজো করা হচ্ছে, আসুন জেনে নিন সে সম্পর্কে।

   

ভারতের সঙ্গে কমলা হ্যারিসের সংযোগ
ভারতের সঙ্গে কমলা হ্যারিসের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তার মা শ্যামলা গোপালন ছিলেন চেন্নাই, তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। শ্যামলা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং ১৯৫৮ সালে ১৯ বছর বয়সে আমেরিকা যান। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরে ক্যান্সার গবেষণা বিজ্ঞানী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।

হ্যারিস প্রায়ই তার মাকে তার জীবনের অনুপ্রেরণা হিসাবে বিবেচনা করেন। 1963 সালে, শ্যামলা জ্যামাইকা থেকে আগত ডোনাল্ড হ্যারিসের সাথে বিয়ে করেন। কমলা এবং তার ছোট বোন মায়া আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করেন এবং বেড়ে ওঠেন। শ্যামলা 2009 সালে মারা যান এবং সেই সময় কমলা হ্যারিস চেন্নাইতে তার মায়ের ভস্ম বিসর্জন করেছিলেন।

হ্যারিস তার দ্য ট্রুথস উই হোল্ড বইয়ে লিখেছেন, “আমরা ভারতীয় সংস্কৃতির গভীর উপলব্ধি এবং উপলব্ধির সাথে বড় হয়েছি। আমার মায়ের সমস্ত কথা এবং ভালবাসা কেবল তার মাতৃভাষায় এসেছে।”

হ্যারিসের ভারতীয় সংস্কৃতি এবং স্মৃতি
কমলা হ্যারিস শৈশবকালে ভারতে গিয়েছিলেন। তিনি তার মায়ের সাথে সমুদ্র সৈকতে দীর্ঘ হাঁটতেন, যেখানে তার দাদা তার বন্ধুদের সাথে গণতন্ত্র এবং সমাজের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন। হ্যারিস বিশ্বাস করেন যে সেই দিনগুলিতেই তিনি জনসেবায় আগ্রহ নিতে শুরু করেছিলেন। তার মা এবং দাদা তামিলনাড়ুর থুলসেন্দ্রপুরম গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। এই সেই গ্রাম যেখানে মানুষ এখন তার জন্য প্রার্থনা করছে এবং তার বিজয়ের আশায় প্রতিদিন বিশেষ পূজার আয়োজন করছে।

কমলা হ্যারিসের নিজ গ্রাম
চেন্নাই থেকে প্রায় 300 কিলোমিটার দূরে থুলসেন্দ্রপুরম গ্রামটি হ্যারিসের পৈতৃক গ্রাম। যদিও হ্যারিস তার বক্তৃতায় কখনও এই গ্রামের কথা উল্লেখ করেননি, তবুও এই গ্রামের লোকেরা তাকে তাদের মেয়ে হিসাবে গ্রহণ করেছে। সর্বত্র হ্যারিসের বড় বড় পোস্টার-ব্যানার, নির্বাচনে তার সৌভাগ্য কামনা করা হয়েছে। গ্রামের মানুষ তার সাফল্যের জন্য প্রতিদিন প্রার্থনা করছেন। স্থানীয় প্রতিনিধি অরুলমঝি সুধাকর বলেন, “কমলা আমাদের জমির মেয়ে। আমরা তার রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষমতাকে সম্মান করি।”

গ্রামের মানুষের গর্ব ও আনন্দ
কমলা হ্যারিসের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থুলসেন্দ্রপুরম গ্রামের মানুষের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। স্থানীয় নেতা মুরুকনন্দন বলেছেন, “তিনি জয়ী হোন বা না করুন, নির্বাচনে তাঁর অংশগ্রহণের বিষয়টি আমাদের জন্য গর্বের কারণ।”

এই বিশেষ উপলক্ষ্যে, গ্রামে পরিবেশের জন্য উত্সর্গীকৃত একটি জল সংরক্ষণের ট্যাঙ্কও তৈরি করা হচ্ছে, যা বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করবে। এই ট্যাঙ্কটি তার সম্মানে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং এতে হ্যারিসের নাম খোদাই করা থাকবে।

মন্দিরে কমলা হ্যারিসের নাম ও গ্রামের নতুন বাসস্টপ
গ্রামের ধর্মশাস্ত মন্দিরের দেওয়ালেও হ্যারিসের নাম খোদাই করা আছে। এই মন্দিরের একটি অংশ এক দশক আগে তাঁর মাসি সরলা তাঁর সম্মানে সংস্কার করেছিলেন। এখন এই মন্দিরের কাছে একটি নতুন বাস স্টপও তৈরি করা হচ্ছে, যার নাম হবে হ্যারিস।

এমনকি হ্যারিস যখন 2020 সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, তখনও গ্রামের লোকেরা গান এবং আতশবাজি দিয়ে এই আনন্দ উদযাপন করেছিল। শিশুরা তার ছবি বহন করে এবং গ্রামে একটি গণভোজের আয়োজন করা হয়।

নারীর গর্ব ও অনুপ্রেরণা
কমলা হ্যারিস গ্রামের নারীদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছেন। বালা অম্বিকা নামের এক নারী বলেন, “হ্যারিস নারীদের সম্মান বাড়িয়েছেন – এখানকার সব নারী তার কৃতিত্বে গর্বিত।”

আত্মীয়ের অনুপস্থিতি কিন্তু গভীর সংযোগ
কমলা হ্যারিসের কোনো আত্মীয় বর্তমানে থুলসেন্দ্রপুরমে বাস করেন না, তবে গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করেন যে তার পরিবারের শিকড় গ্রামের সাথে যুক্ত।