India Unemployment: এক ধাক্কায় দেশে কমল বেকারত্বের হার

ভারতের বেকারত্বের হার আগস্ট মাসে দ্বিতীয় মাস ধারাবাহিকভাবে কমে ৫.১% -এ নেমে এসেছে (India Unemployment)। সংখ্যাতত্ত্ব এবং কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রণালয় (এমওএসপিআই) প্রকাশিত শ্রমশক্তি সমীক্ষা (পিএলএফএস)…

India Unemployment

ভারতের বেকারত্বের হার আগস্ট মাসে দ্বিতীয় মাস ধারাবাহিকভাবে কমে ৫.১% -এ নেমে এসেছে (India Unemployment)। সংখ্যাতত্ত্ব এবং কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রণালয় (এমওএসপিআই) প্রকাশিত শ্রমশক্তি সমীক্ষা (পিএলএফএস) অনুসারে, এই হার জুন মাসের ৫.৬% থেকে জুলাইয়ের ৫.২% এবং এখন আগস্টে ৫.১% -এ পৌঁছেছে।

এছাড়া, নারীদের শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচক। এই তথ্যগুলো ৩৭৬,৮৩৯ জনের উত্তরের ভিত্তিতে সংগ্রহ করা হয়েছে, যার মধ্যে ২১৫,৮৯৫ জন গ্রামীণ এলাকা এবং ১৬০,৯৪৪ জন শহুরে এলাকার।

   

পিএলএফএস সমীক্ষাটি জাতীয় নমুনা অফিস (এনএসও) দ্বারা পরিচালিত হয়, যা দেশের শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ, কর্মসংস্থান এবং বেকারত্বের অবস্থা নিয়ে প্রধান তথ্যসূত্র। জানুয়ারি ২০২৫ থেকে এই জরিপের পদ্ধতি পরিবর্তিত হয়েছে, যাতে মাসিক এবং ত্রৈমাসিক অনুমান প্রদান করা হয়। বর্তমান সাপ্তাহিক অবস্থা (সিডব্লিউএস) পদ্ধতিতে লেবার ফোর্স পার্টিসিপেশন রেট (এলএফপিআর), ওয়ার্কার পপুলেশন রেশিও (ডব্লিউপিআর) এবং বেকারত্বের হার (ইউআর) -এর অনুমান দেওয়া হয়েছে।

আগস্ট মাসে সামগ্রিক বেকারত্বের হার ৫.১% হলেও, ১৫ বছরের উপরে পুরুষদের মধ্যে এটি ৫.০% -এ নেমে এসেছে, যা এপ্রিল ২০২৫-এর পর সর্বনিম্ন। শহুরে পুরুষ বেকারত্ব জুলাইয়ের ৬.৬% থেকে কমে এসেছে, যা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের লক্ষণ। নারী শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ইতিবাচক খবর এসেছে।

আগস্ট মাসে নারীদের এলএফপিআর গ্রামীণ এলাকায় ৩৮.২% ছাড়িয়ে গেছে, যা এপ্রিল মাসের তথ্যের সাথে তুলনা করলে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা যায়। সামগ্রিকভাবে, নারীদের বেকারত্বের হার ৫% -এর কাছাকাছি স্থিতিশীল রয়েছে, কিন্তু তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে। গত ছয় বছরের তথ্য অনুসারে, নারীদের অর্থনৈতিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ উন্নত হয়েছে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়।

এই বৃদ্ধির পিছনে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ যেমন বেটি বচাও বেটি পড়াও, স্কিল ইন্ডিয়া এবং মহিলা সশক্তিকরণ কর্মসূচিগুলোর ভূমিকা রয়েছে। শহুরে নারীদের মধ্যে এলএফপিআর ৫০.৪% -এর কাছাকাছি, যা আগের মাসের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই গতি অর্থনীতির বৈচিত্র্যকরণ এবং নারীদের দক্ষতা উন্নয়নের ফল।

এই তথ্য প্রকাশের পর অর্থনীতিবিদরা ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। ইকোনমিক অ্যানালিস্ট রাজিব কুমার বলেন, “বেকারত্বের হার কমা এবং নারী অংশগ্রহণ বাড়া দেশের জিডিপি গ্রোথকে ত্বরান্বিত করবে। গ্রামীণ এলাকায় কৃষি এবং অ-কৃষি খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে।” জুলাই মাসে সামগ্রিক এলএফপিআর ৫৪.৯% ছিল, যা জুনের ৫৪.২% থেকে বেড়েছে।

Advertisements

আগস্টে এটি আরও স্থিতিশীল হয়েছে, যা শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষণ। তবে, যুব বেকারত্ব (১৫-২৯ বছর) এখনও ১৩.৮% -এর কাছাকাছি, যা উদ্বেগের কারণ। এপ্রিল মাসে এটি ৫.১% ছিল, কিন্তু গ্রীষ্মকালীন প্রভাবে মে মাসে ৫.৬% -এ উঠেছিল। গ্রামীণ বেকারত্ব ৪.৫% এবং শহুরে ৬.৫% -এর মধ্যে স্থিতিশীল রয়েছে।

ভারতের অর্থনীতিতে এই পরিবর্তনের পটভূমি বোঝা জরুরি। কোভিড-১৯ মহামারীর পর শ্রমবাজারে পুনরুদ্ধারের গতি ধীরে ধীরে ত্বরান্বিত হচ্ছে। সরকারের আত্মনির্ভর ভারত, মেক ইন ইন্ডিয়া এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচিগুলো নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে, নারীদের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এবং কাজের স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগগুলো ফলপ্রসূ হচ্ছে।

ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের তথ্য অনুসারে, ভারতের সামগ্রিক শ্রমশক্তির মধ্যে নারীদের অংশ ২০২৫ সালে বেড়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামীণ এলাকায় নারীদের নিজস্ব অ্যাকাউন্ট ওয়ার্কার এবং ক্যাজুয়াল লেবারের সংখ্যা বেড়েছে, যা কৃষি ছাড়া অন্যান্য খাতে ছড়িয়ে পড়ছে। শহুরে এলাকায় টেকনোলজি এবং সার্ভিস সেক্টরে নারীদের প্রবেশ বাড়ছে, যেমন আইটি, ই-কমার্স এবং হেলথকেয়ারে।

তবে, চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যুবকদের মধ্যে দক্ষতার অভাব এবং শিক্ষার মান বেকারত্ব কমাতে বাধা সৃষ্টি করছে। অর্থনৈতিক সার্ভে ২০২৪-২৫ অনুসারে, বেকারত্বের হার কমলেও, গুণগত কর্মসংস্থানের প্রয়োজন। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, স্কিল ইন্ডিয়া মিশনের অধীনে ৪ কোটির বেশি যুবক-যুবতীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যা নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে সাহায্য করবে।

অনুদানের শর্তে মোদির ছবি, উত্তাল কলকাতার দুর্গাপুজো

এছাড়া, মৌসুমী প্রভাব যেমন গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা বৃদ্ধি শ্রমিকদের কাজে বাধা দেয়, বিশেষ করে উচ্চ আয়ের গ্রামীণ পরিবারে। ডোমেস্টিক কাজে অপেইড হেল্পারদের স্থানান্তরও এলএফপিআর-এ প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়নে আরও বিনিয়োগ দরকার, যাতে যুবকরা আন্তর্জাতিক স্তরের চাকরির জন্য প্রস্তুত হয়।