মালদ্বীপ কোস্ট গার্ড শিপ হুরাভি আচমকা মুম্বইয়ের নৌ ডকইয়ার্ডে!

ভারত-মালদ্বীপের (India-Maldives relations) সম্পর্কের মজবুতির দিকে এক নতুন পদক্ষেপ! তারই অঙ্গ হিসেবে মালদ্বীপের জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী (MNDF) কোস্ট গার্ড শিপ (CGS) হুরাভি মুম্বইয়ের নৌ ডকইয়ার্ডে…

Maldives Huravee Coast Guard Ship

ভারত-মালদ্বীপের (India-Maldives relations) সম্পর্কের মজবুতির দিকে এক নতুন পদক্ষেপ! তারই অঙ্গ হিসেবে মালদ্বীপের জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী (MNDF) কোস্ট গার্ড শিপ (CGS) হুরাভি মুম্বইয়ের নৌ ডকইয়ার্ডে সংস্কারের জন্য পৌঁছেছে। এই সংস্কার কাজটি গত মে ২০২৩ সালে MNDF-এ হস্তান্তরের পর প্রথমবারের মতো হবে। ভারতীয় নৌ সেনার জাহাজ তলওয়ার এই যাত্রায় হুরাভিকে মালদ্বীপ থেকে ভারতের উপকূল পর্যন্ত নিয়ে এসেছিল।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, “এই সংস্কারটি রুটিন রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও শিপটির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় উন্নতি সাধন করবে, যার মাধ্যমে শিপটির কার্যকাল দীর্ঘায়িত হবে এবং তার সামর্থ্য বৃদ্ধি পাবে।” এই সংস্কারের খরচ আনুমানিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে, যা ভারত সরকার দ্বারা অর্থায়ন করা হবে, যা ভারতের মালদ্বীপের প্রতি সামরিক সহযোগিতা এবং সম্পর্কের দৃঢ়তার প্রতিফলন।

   

গত অক্টোবর মাসে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ মুজিজুর ভারত সফরের সময় এই সিদ্ধান্তটি ঘোষণা করা হয়। এটি ভারত-মালদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এক নতুন দিক উন্মোচন করেছে। ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে এই ধরনের সহযোগিতা একদিকে যেমন একে অপরের নিরাপত্তার জন্য সহায়ক, তেমনি এটি ভারতের ‘পাড়ে প্রথম’ নীতির বাস্তবায়নকেও দৃঢ় করে।

ভারতের সমুদ্র নিরাপত্তা নীতির অংশ হিসেবে, এই ধরনের সমুদ্র সহায়তা ভারতকে মহাসাগরের অঞ্চলে শক্তিশালী উপস্থিতি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করছে। মালদ্বীপের কোস্ট গার্ড শিপটির সংস্কার এবং উন্নয়ন এই দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তার পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করবে। ভারতের সাথে মালদ্বীপের এই সহযোগিতা শুধু সামরিক ক্ষেত্রেই নয়, বরং ডিজিটাল ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও আরও ব্যাপকতর।

এছাড়াও, ভারতের পক্ষ থেকে মুজিজুর রাষ্ট্রপতির সরকারি সফরের সময় তাদের ডিজিটাল ও আর্থিক সেবায় সহযোগিতা করার ব্যাপারে একটি ঘোষণা হয়। ভারত মালদ্বীপকে ইউনিফায়ড পেমেন্টস ইন্টারফেস (UPI) ব্যবস্থা চালু করতে সাহায্য করবে এবং ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (DPI) উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা নেবে।

এই ধরনের সহযোগিতা, যেখানে মালদ্বীপের প্রযুক্তি এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য ভারতীয় জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করা হচ্ছে, তা দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, মালদ্বীপের কোস্ট গার্ড শিপ হুরাভির সংস্কার ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত করবে এবং দুই দেশের মধ্যে বহুমাত্রিক নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

এদিকে, মালদ্বীপের সরকার এবং ভারতের মধ্যে এই সহযোগিতা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ উভয় দেশই নিজেদের কৌশলগত নিরাপত্তা বাড়ানোর দিকে নজর দিচ্ছে। ভারত, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় সামরিক শক্তি হিসেবে, মালদ্বীপকে সমুদ্রপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

ভারতের ‘ভিশন সাগর’ (Vision SAGAR) নীতি, যা “Security and Growth for All in the Region” অর্থাৎ “এলাকা ভিত্তিক সকলের জন্য নিরাপত্তা ও উন্নতি” নিয়ে কাজ করে, তা আরও দৃঢ় হবে এই ধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে।

মালদ্বীপ এবং ভারত উভয়ই সমুদ্র নিরাপত্তার জন্য একে অপরের সহায়ক। মালদ্বীপের উপর ভারতীয় সমর্থন শুধু সামরিক এবং অর্থনৈতিক দিকেই নয়, বরং ডিজিটাল সুবিধা উন্নয়নের ক্ষেত্রেও এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

এদিকে, ভারত মালদ্বীপের পাশাপাশি অন্যান্য দেশগুলোর সাথে এই ধরনের সম্পর্ক স্থাপন করে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা এবং উন্নয়নে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে।