নয়াদিল্লি: এ বার দিল্লিতে বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার নুরাল ইসলামকে তলব করল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক৷ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে যে উত্তেজনার আবহ তৈরি হয়েছে, তার প্রেক্ষিতেই এই তলব৷ উল্লেখ্য এই ঘটনার একদিন আগেই বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছিল।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে ঢাকার অভিযোগ, পাঁচটি জায়গায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার চেষ্টা চলছে, যা দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তিকে লঙ্ঘন করেছে৷
পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্তের একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখনও কাঁটাতার বিহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৫৩৮ কিলোমিটার৷ ঢাকার দাবি, ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কিছু অঞ্চলে বিএসএফ কাঁটাতার বসানোর কাজ শুরু করেছে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে ‘শান্তিভঙ্গ’ হচ্ছে বলেই সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দাবি৷ এর ফলে নাকি ভঙ্গ হচ্ছে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি৷ মালদহের কালিয়াচকে এবং তার পরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে কাঁটাতার বসানোর সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাতে বাধা দেয় বলেই অভিযোগ উঠেছে৷
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ উপদেষ্টা, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, সীমান্তে পাঁচটি এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, লালমনিরহাট এবং তিন বিঘা করিডোর।
তাঁর দাবি, সীমান্তে সংঘর্ষ এবং উত্তেজনার কারণ হল পূর্ববর্তী সরকারের অস্বচ্ছ চুক্তি। চৌধুরী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করে বলেন, তারা অসম চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার ফলে ২০১০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১৬০টি স্থানে বেড়া নির্মাণ নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়েছে।
এদিকে, ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় বর্মা রবিবার বাংলাদেশ বিদেশ মন্ত্রকে গিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তিনি জানান, ঢাকা ও নয়াদিল্লি সীমান্ত সুরক্ষার জন্য কাঁটাতার নির্মাণ নিয়ে একমত হয়েছে। সীমান্তে অপরাধদমনের ক্ষেত্রেও বিএসএফ এবং বিজিবি পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। প্রণয় আরও বলেন, “নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার ব্যাপারে দু’দেশের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। এ ব্যাপারে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যেও আলোচনা হয়েছে। আশা করি, সীমান্তে অপরাধ দমনের বিষয়ে সহযোগিতার মাধ্যমে সেই বোঝাপড়ার বাস্তবায়িত হবে।”