HomeBharatঅযোধ্যায় ধ্বজা উত্তোলন নিয়ে ফের বাড়ল ভারত-পাক উত্তেজনা

অযোধ্যায় ধ্বজা উত্তোলন নিয়ে ফের বাড়ল ভারত-পাক উত্তেজনা

- Advertisement -

নয়াদিল্লি: অযোধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘গেরুয়া পতাকা’ উত্তোলন নিয়ে পাকিস্তানের মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত। বৃহস্পতিবার কঠোর ভাষায় পাকিস্তানকে জবাব দিল ভারতের বিদেশমন্ত্রক (MEA)। মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন ভারতের ধর্মীয় ঐতিহ্য বা সাংস্কৃতিক চর্চা নিয়ে মন্তব্য করার কোনো নৈতিক অধিকার পাকিস্তানের নেই।

সম্প্রতি পাকিস্তান ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর অযোধ্যায় গেরুয়া পতাকা উত্তোলনকে “মৌলবাদী প্রবণতা” বলে ব্যাখ্যা করেছিল। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মতে, এই মন্তব্য শুধু অবাঞ্ছিতই নয়, পাকিস্তানের স্বভাবসিদ্ধ দ্বিচারিতারই নতুন নজির। বৃহস্পতিবার এক সরকারি বিবৃতিতে রণধীর জয়সওয়াল বলেন “পাকিস্তানের মন্তব্য আমরা দেখেছি এবং যেভাবে তা বলা হয়েছে, তা আমরা কঠোরতম অবজ্ঞার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছি। এমন এক দেশ, যার ইতিহাস ধর্মীয় বৈষম্য, সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার, জোরপূর্বক ধর্মান্তর ও মৌলবাদের কালো দাগে ভরা সে দেশ অন্যকে মানবাধিকারের পাঠ পড়াতে পারে না।”

   

বহুবিবাহের ঐতিহাসিক বিল পেশ! ওয়াক আউট বাম-কংগ্রেসের

তিনি আরও যোগ করেন “পাকিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। সম্প্রদায়ভিত্তিক দমননীতি, শিয়া, হিন্দু, শিখদের বিরুদ্ধে নিয়মিত হামলা, সাংবাদিকদের গুম, ধর্মীয় সংখ্যালঘু মেয়েদের অপহরণ ও জোরপূর্বক বিয়ে সবই আন্তর্জাতিক মহলে বহুবার নিন্দিত হয়েছে। নিজেদের পরিত্যক্ত রেকর্ড ঢাকতেই এই ভণ্ডামি।”

ভারতের কড়া জবাব পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে ক্রমশ বাড়তে থাকা বিচ্ছিন্নতাকেও ইঙ্গিত করছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। পাকিস্তান প্রায়ই ভারতের সাংস্কৃতিক বা রাজনৈতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে মন্তব্য করে থাকে। তবে অযোধ্যায় গেরুয়া পতাকা উত্তোলন নিয়ে মন্তব্যকে ভারত প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিভাজন তৈরির নতুন চেষ্টা বলেই মনে করছে।

এদিকে, দিল্লির কূটনৈতিক মহলে অনেকেই মনে করছেন, পাকিস্তান অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতা, অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের আন্তর্জাতিক চাপ থেকে মনোযোগ সরাতেই এমন মন্তব্য করছে। সম্প্রতি পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দু ও শিখ মন্দিরে হামলা, খ্রিস্টান মহল্লায় অগ্নিসংযোগ, এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরের ঘটনাগুলি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাকে উদ্বিগ্ন করেছে।

একইসঙ্গে, পাকিস্তানের সাংবাদিক নিরাপত্তা সূচকে পতন, রাজনৈতিক বিরোধীদের কারাবন্দী করা এবং কথা বলার স্বাধীনতার ওপর লাগাতার দমনের প্রসঙ্গও তুলেছে ভারত। ফলে ভারতের মতে, এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের ভারতের ধর্মীয় স্বাধীনতা বা সাংস্কৃতিক চর্চা নিয়ে মন্তব্য করা সম্পূর্ণ “ভণ্ডামিমূলক”।

রণধীর জয়সওয়াল বলেন “অন্যকে নীতিকথা শোনানোর আগে পাকিস্তান বরং নিজেদের ভেঙে পড়া মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক। ভারত একটি গণতান্ত্রিক, সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় দেশ, যেখানে সকল সম্প্রদায় স্বাধীনভাবে নিজেদের বিশ্বাস পালন করেন। এর সঙ্গে পাকিস্তানের তুলনা অসম্ভব।”

ভারত সরকার মনে করছে, এই মন্তব্যের মাধ্যমে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করেছে। তবে ভারতের কড়া জবাবে স্পষ্ট এবার পাকিস্তানকে তার সীমা মনে করিয়ে দেওয়া হল। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ভারত তার স্থিতিশীল ও দৃঢ় অবস্থান বজায় রাখছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের মতে, আগামী দিনে এই ইস্যু ভারত-পাক সম্পর্কের রাজনৈতিক কথোপকথনেও প্রভাব ফেলতে পারে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular