নয়াদিল্লি, ২৩ অক্টোবর: বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বড় খবর সামনে এল। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে মোট ৭১৮টি তুষার চিতা (Snow Leopard) রয়েছে। এর মধ্যে শুধু লাদাখেই ৪৭৭টি তুষার চিতা বসবাস করছে। অর্থাৎ, বিশ্বের মোট তুষার চিতার জনসংখ্যার প্রায় ১০–১৫ শতাংশ এখন ভারতের ঘরেই।
তুষার চিতার গুরুত্ব
তুষার চিতা মূলত হিমালয়, তিব্বত, মঙ্গোলিয়া এবং মধ্য এশিয়ার কিছু দেশে দেখা যায়। এদেরকে ‘পর্বতের ভূত’ (Ghost of the mountains) বলা হয়, কারণ এরা অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে বসবাস করে এবং সাধারণত মানুষের চোখে সহজে পড়ে না। এরা উচ্চপর্বতের বাস্তুতন্ত্রে শীর্ষ শিকারি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভারতে প্রধান আবাসস্থল
ভারতের হিমালয় অঞ্চল জুড়ে তুষার চিতার বিস্তার রয়েছে, তবে লাদাখে সর্বাধিক। পাশাপাশি হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশে এদের দেখা মেলে।
-
লাদাখ: ৪৭৭
-
হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে বাকি সংখ্যাটি ছড়িয়ে রয়েছে।
সংরক্ষণ প্রচেষ্টা
তুষার চিতা বর্তমানে আইইউসিএন (IUCN) রেড লিস্টে “Vulnerable” বা ঝুঁকিপূর্ণ প্রজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত। পাচার, আবাসস্থল ধ্বংস, জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানুষের সঙ্গে সংঘাত এর অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে।
ভারতে ‘প্রজেক্ট স্নো লেপার্ড’ চালু রয়েছে। পাশাপাশি ক্যামেরা ট্র্যাপিং ও আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে নিয়মিত জনগণনা করা হয়। স্থানীয় সম্প্রদায়কেও সংরক্ষণ কার্যক্রমে যুক্ত করা হয়েছে।
বিশ্ব প্রেক্ষাপট
বিশ্বে মোট তুষার চিতার সংখ্যা আনুমানিক ৪,০০০–৬,৫০০-এর মধ্যে। এর মধ্যে ভারতের অবদান ১০–১৫ শতাংশ হওয়াটা উল্লেখযোগ্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের হিমালয় অঞ্চল বৈশ্বিক সংরক্ষণ প্রচেষ্টায় মুখ্য ভূমিকা পালন করছে।
বিশেষজ্ঞদের মত
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সংখ্যা প্রমাণ করে যে ভারত সরকারের সংরক্ষণ প্রচেষ্টা ইতিবাচক ফল দিচ্ছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও পর্বত অঞ্চলে মানব কার্যকলাপ বাড়তে থাকায় নতুন হুমকি তৈরি হচ্ছে।
তুষার চিতার অস্তিত্ব কেবল প্রকৃতির ভারসাম্যের জন্যই নয়, বরং ভারতের পরিবেশ ও পর্যটনের ক্ষেত্রেও বড় সম্পদ। ভারতের হিমালয় এখন বৈশ্বিক স্নো লেপার্ড সংরক্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
