মোদীর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে রাশিয়ার মাটিতে ভারতের কারখানা

india-russia-urea-plant-joint-venture-modi-putin

নয়াদিল্লি: ভারতের সরকার কৃষি খাতকে বিশ্বব্যাপী মূল্যভারসাম্যের ঝড় থেকে রক্ষা করতে একটা ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। রাশিয়ার বিশাল গ্যাস মজুতের উপর ভিত্তি করে রাশিয়ার মাটিতে দেশের প্রথম ইউরিয়া উৎপাদন কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই জয়েন্ট ভেঞ্চারের চুক্তি সম্ভবত রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আসন্ন ভারত সফরের সময় নিশ্চিত করা হবে।

Advertisements

এই উদ্যোগ শুধু সার সরবরাহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না, বরং ভারতীয় কৃষকদের খরচ কমিয়ে দেবে এবং ভূ-রাজনৈতিক চাপের মধ্যেও দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে শক্তিশালী করবে। এই খবর যেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বপ্নকে চ্যালেঞ্জ করছে, যিনি ভারত-রাশিয়া সম্পর্ককে দুর্বল করার স্বপ্ন দেখেন।ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইউরিয়া আমদানিকারক দেশগুলোর একটি।

iPhone 17-এর সঙ্গে তুলনার আসনে Pixel 10 Pro XL ও Vivo V60, লড়াইতে কোনটি এগিয়ে?

প্রতি বছর প্রায় ৩ কোটি টনেরও বেশি ইউরিয়া আমদানি করতে হয়, যা কৃষির মেরুদণ্ড। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ, গ্লোবাল স্যাঙ্কশন এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার কারণে সারের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে উঠেছে। গত বছরগুলোতে কৃষকরা এই মূল্যস্ফীতার চাপে বিপর্যস্ত হয়েছে, যা ফসলের উৎপাদনকে প্রভাবিত করেছে। এই প্রেক্ষাপটে, কেন্দ্রীয় সার মন্ত্রক মনসুখ মান্ডভিয়ার নেতৃত্বে ভারত সরকার রাশিয়ার সঙ্গে একাধিক বছরের চুক্তির আলোচনা শুরু করেছে।

এবারের পরিকল্পনা আরও বড় রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় গ্যাস মজুতের উপর ভিত্তি করে একটা আধুনিক ইউরিয়া প্ল্যান্ট স্থাপন। এই কারখানা ভারতের জন্য স্বল্পমেয়াদী আমদানির বদলে দীর্ঘমেয়াদী উৎপাদন নিশ্চিত করবে, যাতে কৃষকদের সারের দাম স্থিতিশীল থাকে। এই প্রকল্পের মূলে রয়েছে ভারত-রাশিয়া মৈত্রীর দীর্ঘ ইতিহাস। সোভিয়েত আমলে থেকেই রাশিয়া ভারতের কৃষি এবং শিল্প খাতের সঙ্গী।

Advertisements

গত কয়েক বছরে, ইউক্রেন সংকটের মধ্যেও ভারত রাশিয়ান তেল এবং সার আমদানি বাড়িয়েছে, যা দেশের বাইরের মুদ্রা সঞ্চয় রক্ষা করেছে। রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট পুতিন সম্প্রতি বলেছেন, ভারতের অনুরোধে তারা সার রপ্তানি বাড়িয়েছে।

এখন এই জয়েন্ট ভেঞ্চারে ভারতীয় কোম্পানিগুলো যেমন রাষ্ট্রীয় রাসায়নিক এবং সার লিমিটেড (আরসিএফ), ন্যাশনাল ফার্টিলাইজার্স লিমিটেড এবং অন্যান্য সঙ্গে রাশিয়ান জায়ান্ট যেমন ফসাগ্রো এবং উরালকালির অংশগ্রহণ থাকবে।

প্ল্যান্টটি রাশিয়ার আরকটিক অঞ্চলে স্থাপিত হবে, যেখানে বিশাল প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত আছে। এতে উৎপাদন খরচ কম হবে এবং ভারতের জন্য সাশ্রয়ী হারে সরবরাহ সম্ভব হবে। বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন, এই প্রকল্প থেকে বার্ষিক লক্ষ লক্ষ টন ইউরিয়া উৎপাদিত হবে, যা ভারতের আমদানির ২০-৩০ শতাংশ মেটাতে পারে।