India relaxes deadline
নয়াদিল্লি: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে মর্মান্তিক জঙ্গি হামলার পরে ভারত সরকারের কড়া অবস্থানে বিপাকে পড়েছিলেন ভারতে আসা বহু পাকিস্তানি নাগরিক৷ তবে এবার তাঁদের জন্য কিছুটা স্বস্তির খবর এল কেন্দ্রের তরফে৷
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, পাকিস্তানি নাগরিকেরা এখন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পাঞ্জাবের অটারি সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরতে পারবেন, তবে যথাযথ ছাড়পত্র নিয়ে।
এই ঘোষণায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন সেইসব মানুষ, যাঁরা সীমান্ত বন্ধের আগের দিন পর্যন্ত ভারতে থেকে গিয়েছিলেন এবং ফেরার সুযোগ হারিয়ে কাঁটায় পা দিয়ে বসেছিলেন।
যাতায়াতের পরিসংখ্যান
গত ছয় দিনে ৭৮৬ জন পাকিস্তানি নাগরিক, যার মধ্যে ৫৫ জন কূটনীতিক ও তাঁদের সহকর্মীরা, ভারতে থেকে পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছেন। অন্যদিকে পাকিস্তান থেকে ভারতে ফিরেছেন ১,৪৬৫ জন ভারতীয় নাগরিক।
কীভাবে শুরু এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপট? India relaxes deadline
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পর্যটননগরী পহেলগাঁওয়ে এক নির্মম জঙ্গি হামলায় ২৫ জন পর্যটক ও এক স্থানীয় বাসিন্দার মৃত্যু হয়। ঘটনায় পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ জঙ্গি সংগঠনগুলোর সংশ্লিষ্টতা উঠে আসার পরই কেন্দ্র একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নেয়।
এর মধ্যে অন্যতম ছিল—ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশে ফিরে যেতে বলা। স্বল্পমেয়াদি ও সার্ক ভিসাধারীদের জন্য সময়সীমা ছিল ২৭ এপ্রিল, চিকিৎসা ভিসাধারীদের জন্য নির্ধারিত হয় ২৯ এপ্রিল। এরপর ৩০ এপ্রিল থেকে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।
পরিবারছাড়া মায়েরা, অসহায় বৃদ্ধেরা—মানবিক সংকটে শত শত মানুষ
এই হঠাৎ সিদ্ধান্তে সবথেকে বিপদে পড়েছেন তাঁরা, যাঁরা বিবাহসূত্রে ৩০-৪০ বছর ধরে ভারতে বসবাস করছেন। অনেক পাকিস্তানি নারী, যাঁরা ভারতীয় স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন ঘর, তাঁরা এখন হঠাৎ করে ফেরত পাঠানোর মুখে পড়েছেন। কেউ কেউ চোখে জল নিয়ে বলেন, “এই দেশই আমার ঘর, আমার পরিবার এখানেই। আমি কোথায় যাবো?” — এমন অসংখ্য প্রশ্নে ভরা তাঁদের ভবিষ্যৎ।
রাজনৈতিক মহলের ক্ষোভ ও আবেদন
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি সামাজিক মাধ্যমে বলেন, “অনেক নারী বহু বছর ধরে ভারতে বসবাস করছেন, পরিবার গড়েছেন, সমাজের অংশ হয়েছেন। তাঁদের জোর করে ফেরানো অত্যন্ত অমানবিক। কেন্দ্র যেন এ বিষয়ে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করে।”
সীমান্ত কিছুদিনের জন্য খোলা থাকছে—এটা নিঃসন্দেহে একটা স্বস্তির খবর। তবে যাঁদের জীবনের অনেকটা কেটেছে ভারতে, তাঁদের ভবিষ্যৎ এখনও ঝুলে রয়েছে। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, নিরাপত্তা রক্ষা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি পরিবার ও মানবিকতা রক্ষা করাও জরুরি। তাই দীর্ঘদিন ধরে ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নেওয়া হোক—এই দাবিই এখন জোরালো হচ্ছে।
Bharat: India eases restrictions for stranded Pakistanis after Pahalgam attack, allowing return via Attari border with valid permits until further notice. Relief for those stuck after border closure. Hundreds, including long-term residents and families, faced hardship.
