নয়াদিল্লি, ১ ডিসেম্বর: গত মে মাসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চালানো অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য ভারতের সামরিক কৌশলকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। এই অপারেশনে ইসরায়েলি হেরন এমকে দুই ড্রোনগুলোর অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখে ভারতীয় সেনাবাহিনী আরও বেশি সংখ্যক এই অ্যাডভান্সড ইউএভি (আনম্যান্ড অ্যারিয়াল ভেহিকল) কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জরুরি ক্রয়ের মাধ্যমে সেনা, বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনী—তিন বাহিনীই—হেরন এমকে দুই-এর অতিরিক্ত ইউনিট স্বাক্ষর করেছে। এর পাশাপাশি, মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগের অধীনে ২০ হাজার কোটি টাকার মিডিয়াম অলটিটিউড লং এনডিউরেন্স (মেলে) ড্রোন চুক্তিতে ইসরায়েলের আইএআই (ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ) সবচেয়ে এগিয়ে।
বদলাচ্ছে উপত্যকা! ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান কাশ্মীরের ২৬২ জন যুবকের
এই উন্নয়ন ভারতের আত্মনির্ভরশীল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদিও এতে বিদেশি প্রযুক্তির উপর নির্ভরতা কিছুটা বাড়বে।অপারেশন সিঁদুরের পটভূমি স্মরণীয়। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ নিরীহ মানুষের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় ভারত ৭ মে সকালে এই অপারেশন শুরু করে।
পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে নয়টি জঙ্গি ক্যাম্প ধ্বংস করতে ভারত ব্রহ্মোস এবং স্ক্যাল্প ক্রুজ মিসাইল ব্যবহার করে। কিন্তু এর পিছনে ছিল হেরন এমকে দুই-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এই ড্রোনগুলো ৪৫ ঘণ্টা অবিরাম উড়ে ১,০০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব কভার করে রিয়েল-টাইম ইন্টেলিজেন্স, সার্ভেইলেন্স এবং রেকনেসেন্স (আইএসআর) প্রদান করেছিল।
স্যাটেলাইট-লিঙ্কড এই ড্রোনগুলো হামলার ডকুমেন্টেশন থেকে শুরু করে অপারেশনের পুরো প্রক্রিয়া মনিটরিং করে। সামরিক কর্মকর্তাদের মতে, এই সাফল্য দেখে তিন বাহিনীই জরুরি ক্রয়ের অধীনে অতিরিক্ত হেরন এমকে দুই কিনছে। জরুরি ক্রয়ে ৩০০ কোটি টাকা পর্যন্তের চুক্তি সরাসরি স্বাক্ষর করা যায়, যা নিয়মিত প্রক্রিয়ার দীর্ঘতা এড়ায়।
নৌবাহিনীর অংশগ্রহণ এখানে নতুন। আগে সেনা এবং বিমানবাহিনী লাদাখ সীমান্তে চীনের সাথে উত্তেজনার সময় এই ড্রোন কিনেছিল, কিন্তু এবার নৌবাহিনীও মার্ক টু-এর চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই ড্রোনগুলোতে অ্যাডভান্সড সেন্সর, ইলেকট্রনিক ইন্টেলিজেন্স পেলোড এবং স্পাইক অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল ইন্টিগ্রেশনের পরিকল্পনা চলছে। এতে শুধু নজরদারি নয়, আঘাতকারী ক্ষমতাও যোগ হবে।
