ভারত পাকিস্তানের (India Pakistan relation) সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রাখতে চায়, তবে যদি পাকিস্তান তার অতীত আচরণ পরিবর্তনের কোনও ইঙ্গিত না দেয়, তাহলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর এর প্রভাব পড়বে, শুক্রবার লোকসভার অধিবেশনে একথা জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S.Jaishankar)।
মন্ত্রী বলেন, ভারত সবসময়ই পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চেয়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি কামনা করে। তবে তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, পাকিস্তান যদি তার পুরনো আচরণ পরিবর্তন না করে, এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখে, তাহলে তার ফলে সম্পর্কের উন্নতির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।
“ভারত কখনোই চায়নি যে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হোক। আমরা চাই একে অপরের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ, সম্মানজনক ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠুক। তবে, যদি পাকিস্তান তার অতীত কর্মকাণ্ড থেকে কোনও শিক্ষা না নিয়ে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তা করতে থাকে, তাহলে তা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলবে,” জয়শঙ্কর বলেন।
এছাড়া, তিনি বলেন, ২০১৯ সালে পাকিস্তান কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যার ফলে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাধাগ্রস্ত হয়েছে। পাকিস্তান তখন ভারতীয় পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের পদক্ষেপের পর বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়। জয়শঙ্কর এ বিষয়ে বলেন, “২০১৯ সালে পাকিস্তান যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিল, তা ভারত-পাকিস্তান বাণিজ্য সম্পর্ককে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্য সম্পর্ক পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হোক, কিন্তু তা নির্ভর করে পাকিস্তানের আচরণের পরিবর্তনের ওপর। সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা এবং শান্তির পরিবেশ তৈরির জন্য পাকিস্তানকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
মন্ত্রী স্পষ্ট করেন যে, ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের প্রতি শান্তিপূর্ণ সম্পর্কের আহ্বান রয়েছে, তবে সেই সম্পর্ক যদি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে, তবে তা নিশ্চিতভাবেই একে অপরকে সম্মান এবং সমঝোতার ভিত্তিতে চলতে হবে।
এ সময়, জয়শঙ্কর পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে, সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতি সহযোগিতা ভারত বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মেনে নেওয়া হবে না। তিনি বলেছিলেন, “পাকিস্তান যদি এই পরিস্থিতি পরিবর্তন না করে, তাহলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি সম্ভব হবে না এবং এর ফলাফল হিসেবে সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের এই চলমান জটিলতার মধ্যে, জয়শঙ্কর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, যেখানে শান্তি এবং সহযোগিতার ভিত্তিতে সম্পর্কের পুনর্গঠনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।