বিহার বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটগ্রহণের আগে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাজ্য প্রশাসন। ১১ নভেম্বরের ভোটের আগে ৭২ ঘণ্টার জন্য সম্পূর্ণভাবে সিল করে দেওয়া হয়েছে ভারত-নেপাল সীমান্ত। জরুরি পরিষেবা ব্যতীত, ১১ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সীমান্ত পারাপারে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
কড়া নিরাপত্তা
ডিজিপি বিনয় কুমার জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতে ১,৬৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “দ্বিতীয় দফায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রথম দফার তুলনায় আরও জোরদার করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে বিশেষ নজরদারি চলছে।”
রক্সৌল ও নারকাটিয়া বিধানসভা কেন্দ্রকে ‘সংবেদনশীল অঞ্চল’ ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে টহল দিচ্ছে এসএসবি, স্থানীয় পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের যৌথ বাহিনী। এসএসবি-র ৪৭তম ব্যাটালিয়নের কম্যান্ড্যান্ট সঞ্জয় পান্ডে জানান, সীমান্তে কঠোর নজরদারি চলছে, যাতে কোনও অসামাজিক উপাদান অনুপ্রবেশ করতে না পারে।
সন্দেহজনক কার্যকলাপে কড়া ব্যবস্থা
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৌরভ জোরওয়াল নির্দেশ দিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় যেকোনও সন্দেহজনক কার্যকলাপে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই ভারত–নেপাল মৈত্রী সেতু, শাহদেব, মাহদেব, মুসাহারওয়া, পানতোকা ও সিওয়ান চেকপোস্ট সম্পূর্ণরূপে সিল করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক গুলজার ওয়ানি জানিয়েছেন, রক্সৌল ও নারকাটিয়ায় বিশেষ নজরদারি চলছে এবং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এই পর্যায়ে ২০টি জেলার মোট ১২২টি আসনে ভোট হবে—এর মধ্যে ১০১টি সাধারণ, ১৯টি তফসিলি জাতি ও ২টি তফসিলি উপজাতি আসন। ভোট দেবেন প্রায় ৩ কোটি ৭০ লক্ষ ভোটার। পুরো রাজ্যে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৭ কোটি ৪৩ লক্ষ, যার মধ্যে ৩ কোটি ৯২ লক্ষ পুরুষ ও ৩ কোটি ৫১ লক্ষ মহিলা ভোটার। তৃতীয় লিঙ্গের ১,৭২৫ জন ভোটার, ৭ লক্ষ ২০ হাজার প্রতিবন্ধী ভোটার এবং ৮৫ বছরের বেশি বয়সী ৪ লক্ষ ৪ হাজার প্রবীণ নাগরিকও রয়েছেন।
সীমান্তে সতর্ক নজরদারি
বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে আন্তর্জাতিক ও আন্তঃরাজ্য সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলি—বাথনাহা, মধুবনী, সীতামারহি, পূর্ব ও পশ্চিম চম্পারণ, এবং রক্সৌল-সহ সাতটি জেলা। ডিজিপি জানান, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তেও সতর্ক নজরদারি চলছে। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরই সীমান্তে স্বাভাবিক যাতায়াত পুনরায় শুরু হবে।


