ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব লাদাখের (Ladakh) মুধ-নিয়োমাতে নবনির্মিত বিমানঘাঁটির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে, এবং শীঘ্রই এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। এই ঘাঁটিটি ভারতের সর্বোচ্চ ‘এয়ারফিল্ড’ হতে চলেছে, যা দেশটির সীমান্ত রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) (LAC) সংলগ্ন এই ঘাঁটি থেকে নিয়মিত সুখোই, রাফাল এবং তেজসের মতো যুদ্ধবিমান ওঠানামা করতে পারবে, যা দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।
উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা, খাদে বাস পড়ে, মৃত ১৫
এই নতুন এয়ারফিল্ডটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আনুমানিক ১৩,৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত, এবং এটি একটি ‘অ্যাডভান্স ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড’ (এএলজি) হিসেবে চিহ্নিত।
এই ধরনের উচ্চতায় তৈরি হওয়া এয়ারফিল্ড ভারতীয় বায়ুসেনার (Indian Air force) জন্য বিশেষ সুবিধাজনক, কারণ যুদ্ধের সময়ে এটি কৌশলগত দিক থেকে বাড়তি সুবিধা প্রদান করবে। পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায়, লাদাখে সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে দ্রুত সেনা পাঠানো, গোলাবারুদ সরবরাহ নিশ্চিত করা, এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী অভিযানে জোর দেওয়ার ক্ষেত্রে এই ঘাঁটি অপরিসীম সহায়ক হবে।
পোশাক খুলে প্রতিবাদ, তরুনীর মুক্তির দাবিতে উত্তাল ইরান
ভারত-চিন সীমান্তে (India China conflict) উত্তেজনা এবং এলএসি অঞ্চলে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে এই এয়ারফিল্ডটির গুরুত্ব আরও বেড়েছে। পূর্ব লাদাখের মুধ-নিয়োমা অঞ্চলটি কৌশলগত দিক থেকে বেশ স্পর্শকাতর, কারণ এটি সরাসরি সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত।
ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বায়ুসেনার জন্য এই এয়ারফিল্ড শত্রুদের ওপর নজরদারি চালানো এবং দ্রুততার সঙ্গে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অপরিহার্য ভূমিকা রাখতে পারে।
ডিসেম্বর থেকে বদলাছে কলিং নিয়ম, ট্রাই-এর নয়া সিদ্ধান্ত
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চতার কারণে এই এয়ারফিল্ডটি বেশ চ্যালেঞ্জিং হলেও এর সুফল অতুলনীয়। এই ধরনের উচ্চতায় বায়ুসেনা তাদের কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে সক্ষম হলে সীমান্ত রক্ষায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারবে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর কাছে এমন একটি এয়ারফিল্ড থাকা মানে তারা আরও দ্রুত এবং কার্যকরভাবে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় অপারেশন পরিচালনা করতে পারবে।
এই এয়ারফিল্ডের সাহায্যে ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের রসদ এবং অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ সহজেই করতে পারবে। যেকোনো সংঘর্ষ বা জরুরি পরিস্থিতিতে সেনা পাঠানোও আরও দ্রুত হবে।
পাশাপাশি, ভারতীয় সেনাবাহিনী এখন এই অঞ্চলে আরও শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে, কারণ এই এয়ারফিল্ড থেকে সামরিক সরঞ্জাম এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহের জন্য বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে।
সংখ্যালঘু বিরোধী কোনও কাজে মোদীকে সমর্থন করবে না নায়ডু: টিডিপি
পূর্ব লাদাখে এই এয়ারফিল্ডের মাধ্যমে ভারতের কৌশলগত ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সীমান্তে শান্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এটি ভারত-চীন সীমান্তে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে। এলএসি সংলগ্ন অঞ্চলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই শক্তিশালী উপস্থিতি সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি অনুসারে, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে উচ্চ পর্বত অঞ্চলে এই ধরনের এয়ারফিল্ড নির্মাণ এক বিশেষ কৌশল। এর মাধ্যমে ভারতীয় বাহিনীকে সীমান্তে আরও কার্যকরভাবে স্থাপন করা সম্ভব হবে, যা কৌশলগত দিক থেকে ভবিষ্যতে ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে।