বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) ভারতে থাকার মেয়াদ সম্প্রতি ভারতের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বৃদ্ধি করা হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতের সরকার হাসিনার রেসিডেন্ট পারমিটের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (International criminal tribunal) মাধ্যমে গ্রেফতারি পরোয়ানার মুখে পড়েছেন।
দু’দিন আগে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এছাড়াও, ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেখ হাসিনা এবং তার সহঅভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ সরকার হাসিনাকে ফেরানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। তবে, বাংলাদেশের অভিবাসন এবং পাসপোর্ট দফতর তার পাসপোর্ট বাতিল করেছে, যা বিষয়টি আরও জটিল করে তুলেছে।
বাংলাদেশের জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল ফজলুর রহমান সম্প্রতি একটি বিবৃতিতে বলেছেন, “যদি ভারত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে না ফেরত পাঠায়, তবে অনুমতি সাপেক্ষে ভারতেই গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রাজি আমাদের কমিশন।” তিনি আরও বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের আইনগত প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান না জানায়, তবে এর ফলাফল তাদের জন্য ভালো হবে না। বাংলাদেশ সরকার মনে করছে, শেখ হাসিনা ভারতের আশ্রয়ে থাকায় তাকে ফেরত পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে, এবং ভারতের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ হিসাবে দেখছে।
ভারত সরকার, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং শীর্ষ কূটনৈতিক সূত্রগুলি এই বিষয়ে একেবারে নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হয়নি। তবে, ভারতের তরফে শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্তকে অনেকেই ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে চাপ সৃষ্টি করার একটি কৌশল হিসেবে দেখছে। বিশেষত, ভারতের কাছে অনেকেই মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশকে তার অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়া পুনরায় বিবেচনা করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এছাড়া, বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকারের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও, তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীরা এবং সমর্থকরা এই পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগগুলো বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিরোধিতার একটি অংশ বলে মনে করা হচ্ছে, এবং তার বিরুদ্ধে মামলাগুলি রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।
ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক অতীতেও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিশেষত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধ মামলা এবং তাঁর ভারতে অবস্থান নিয়ে সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। ভারত সরকার যদি শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বৃদ্ধি না করত, তবে বিষয়টি আরও জটিল হতে পারত এবং দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে আরও দুরত্ব সৃষ্টি হতে পারত।
তবে, একদিকে যেখানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে চাপ বাড়ানো হচ্ছে, সেখানে ভারতের তরফে বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে মোকাবেলা করা হচ্ছে। তারা এখনই এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি, তবে আসন্ন সময়ের মধ্যে হয়তো আরও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।