নয়াদিল্লি: ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যে নয়া অচলাবস্থা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ভারতের রফতানির উপরে চাপানো হয়েছে ৫০ শতাংশ শুল্ক। হোয়াইট হাউসের অঙ্ক কষা ছিল সোজা—এই বাড়তি শুল্কে রাশিয়াকে যেমন চাপে রাখা যাবে, তেমনি ভারতকেও বাণিজ্য চুক্তিতে মাথা নত করতে বাধ্য করা যাবে। কিন্তু আপাতত সেই অঙ্ক মিলছে না। বরং পাল্টা কৌশল সাজাচ্ছে নয়া দিল্লি।
মার্কিন শুল্কের খাঁড়া
ভারতের বস্ত্র, গহনা, চামড়াজাত পণ্য, জুতো, সামুদ্রিক মাছ-সবক’টি ক্ষেত্রেই ধাক্কা লাগবে মার্কিন শুল্কে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই বাড়তি করের ফলে রফতানিতে ক্ষতি হতে পারে প্রায় ৪৮ বিলিয়ন ডলার। এর ফলে বড়সড় আঘাত আসবে ভারতের অন্যতম ভরসার বাজার আমেরিকা থেকেই।
তবে নয়া দিল্লি হাত গুটিয়ে বসে নেই। ইতিমধ্যেই ব্রিটেন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, নেদারল্যান্ড, পোল্যান্ড, কানাডা, মেক্সিকো, রাশিয়া, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি-সহ অন্তত ৪০টি দেশের সঙ্গে সক্রিয় আলোচনায় নেমেছে ভারত। লক্ষ্য-আমেরিকার বাজারের ক্ষত মেটাতে নতুন রফতানি সম্ভাবনা খুঁজে বের করা।
৪০টি দেশে রফতানি India export strategy
বর্তমানে বিশ্বের ২২০টি দেশে রফতানি করে ভারত। এর মধ্যে এই ৪০টি দেশকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যসঙ্গী হিসাবে ধরা হয়। এই দেশগুলির বস্ত্রবাজারের আকার প্রায় ৫৯০ বিলিয়ন ডলার। অথচ ভারতের অংশীদারিত্ব সেখানে এখন মাত্র ৫-৬ শতাংশ। সেখানেই নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য, গুণমানসম্পন্ন এবং উদ্ভাবনী রফতানিকারক হিসাবে তুলে ধরতে চায় নয়া দিল্লি।
২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারতের বস্ত্র সেক্টরের আয় ছিল প্রায় ১৭৯ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে আমেরিকার অবদানই ছিল ৩৭ বিলিয়ন। বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম বস্ত্র রফতানিকারক দেশ হিসেবে ভারতের জন্য এ এক বড় ধাক্কা বটে। তবে আমেরিকার চাপ সামলে বিকল্প বাজার দখলে সফল হলে, দীর্ঘমেয়াদে ভারতীয় রফতানির ভিত আরও মজবুত হতে পারে।