SR সংলাপের আগে সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ভারত-চিন

নয়াদিল্লি: বহু জটিলতা, অবিশ্বাস আর সংঘাতের উর্ধ্বে উঠে ফের আলোচনার টেবিলে ভারত-চিন (India China Border Talks)। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হল পরামর্শ ও সমন্বয় বিষয়ক কার্যকরী প্রক্রিয়া…

India China Border Talks

নয়াদিল্লি: বহু জটিলতা, অবিশ্বাস আর সংঘাতের উর্ধ্বে উঠে ফের আলোচনার টেবিলে ভারত-চিন (India China Border Talks)। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হল পরামর্শ ও সমন্বয় বিষয়ক কার্যকরী প্রক্রিয়া (WMCC)-র অধীনে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক বৈঠক। লক্ষ্য, লাদাখ সীমান্তে কার্যকর শান্তি বজায় রাখা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্বাভাবিকতা ফেরানো।

প্রায় চার বছর আগে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তাক্ত সংঘর্ষের ছায়া আজও মুছে যায়নি। তবে, সেই পর্বের পরে যে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা ভাঙতে সম্প্রতি কিছু কূটনৈতিক গতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই প্রক্রিয়ারই অংশ হিসেবে বুধবার নয়াদিল্লিতে মুখোমুখি হয় দুই দেশের প্রতিনিধিদল।

   

সীমান্তে স্থিতি, সম্পর্ক স্বাভাবিকের পথে

ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের ভাষ্য, “সীমান্তবর্তী অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখায় দুই পক্ষই সন্তোষ প্রকাশ করেছে। ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ধাপে ধাপে স্বাভাবিক হচ্ছে।” এই বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন এখনও দুই দেশের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার সেনা পূর্ব লাদাখের এলএসি বরাবর মোতায়েন রয়েছে।

SR পর্যায়ের বৈঠকের প্রস্তুতি শুরু

আলোচনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল Special Representatives Dialogue -অর্থাৎ সীমান্ত প্রশ্নে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-এর মধ্যকার পরবর্তী উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, যা এবার ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। শেষবার এই সংলাপ হয়েছিল বেজিংয়ে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে।

প্রতিনিধিদল ও আলোচনা প্রসঙ্গ

ভারতের পক্ষে আলোচনায় নেতৃত্ব দেন গৌরাঙ্গলাল দাস (যুগ্মসচিব, পূর্ব এশিয়া বিভাগ)। চিনের পক্ষ থেকে নেতৃত্বে ছিলেন হং লিয়াং (ডিরেক্টর জেনারেল, বাউন্ডারি ও ওশানিক অ্যাফেয়ার্স)। বৈঠকের পর হং লিয়াং সাক্ষাৎ করেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রীর সঙ্গে।

Advertisements

বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, “সীমান্ত ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও শান্তি রক্ষায় পূর্ববর্তী SR বৈঠকে উত্থাপিত বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। দ্বিপাক্ষিক স্তরে কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।”

পটভূমিতে সেনা প্রত্যাহার ও মোদী-শি সাক্ষাৎ

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে রাশিয়ার কাজানে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর দ্বিপাক্ষিক সাক্ষাতের পরই সিদ্ধান্ত হয়, দীর্ঘ সময় ধরে স্থগিত থাকা কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরের আলোচনা ফের শুরু করা হবে। তার কয়েকদিন পরেই ঘোষিত হয় ডেমচক ও ডেপসাং থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত, যা কার্যত সীমান্ত সংঘর্ষের পর্বের ইতি টানে।

তাৎপর্য

কূটনৈতিক মহলের মতে, যদিও সেনা মুখোমুখি অবস্থান এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি, কিন্তু এই ধরনের ধারাবাহিক ও গঠনতান্ত্রিক আলোচনা দ্বিপাক্ষিক বিশ্বাস গঠনে সহায়ক। বিশেষত SCO-এর মতো বহুপাক্ষিক মঞ্চে সম্প্রতি জয়শঙ্করের চিন সফরের পরে এই বৈঠক, এবং আসন্ন SR সংলাপ, ভারত-চিন সম্পর্কের ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে।