ভারত সম্প্রতি ডিজিটাল পাইলট লাইসেন্স (Electronic Personnel License ) চালু করেছে। বিশ্বে চিনের পরে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে ভারত এই প্রযুক্তি ব্যবহারের পদক্ষেপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী কেআরামমোহন নাইডু এই প্রকল্পের সূচনা করেছেন। এটি ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল খাতে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। যা দেশের ডিজিটাল রূপান্তর, নিরাপত্তা, এবং কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ই-পি এল: বিমানচালকদের জন্য সুবিধাজনক পরিবর্তন
ডিজিটাল পাইলট লাইসেন্স চালু হওয়া মানে বিমান চালকদের পাইলট লাইসেন্সের সমস্ত তথ্য এখন অনলাইনে সংরক্ষণ এবং পরিচালনা করা যাবে। এর মাধ্যমে পাইলটদের জন্য লাইসেন্সের যাচাই প্রক্রিয়া আরও সহজ ও দ্রুত হবে। লাইসেন্সের তথ্য এক জায়গায় থাকা এবং যে কোনো সময়ে এটি অ্যাক্সেস করা যাবে। যা বিমানচালকদের কাজের সহজতর করার পাশাপাশি নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতাও নিশ্চিত করবে।
মন্ত্রী কেআরামমোহন নাইডু এই উদ্যোগ সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন, “এটি শুধু বিমান চলাচল খাতের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ নয়, বরং এটি সারা দেশের ডিজিটাল রূপান্তরেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।” তিনি আরও বলেছেন, এই প্রযুক্তি ব্যবহারে ভারত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রযুক্তিগত উন্নতির পথিকৃৎ হয়ে উঠবে।
ভারতের বিমান চলাচল খাতে প্রবৃদ্ধি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এছাড়া ভারতের বিমান চলাচল খাত এক অতীত থেকে অগ্রগতির পথে রয়েছে এবং আগামী দিনে এই খাতে প্রচুর পরিমাণে দক্ষ পাইলটের প্রয়োজন হবে। ভারতীয় বিমান চলাচল মন্ত্রী আশাবাদী যে আগামী কয়েক বছরে দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল খাতে অন্তত ২০,০০০ পাইলটের প্রয়োজন হবে। কারণ ভারতের বিমান চলাচল বাজার পৃথিবীর অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল বাজার হিসেবে পরিচিত।
নাইডু আরও বলেছেন, ভারতের বিমান চলাচল খাতের ভবিষ্যত পরিকল্পনা হিসেবে ৫ বছরের মধ্যে ৫০টি নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের কথা রয়েছে। এছাড়া আগামী দশ বছরে ১২০টি নতুন অভ্যন্তরীণ গন্তব্যও যুক্ত করা হবে। এই বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় পাইলটের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য উদ্যোগগুলি আরও ত্বরান্বিত করা হবে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ভারতের বিমান চলাচল খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। শুধু বিমান চলাচল নয়, এর সঙ্গেই সংযুক্ত রয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহারে নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং উন্নত অপারেশনাল কার্যক্রম। মন্ত্রী নাইডু ভবিষ্যতে ডিজিটাল টুইন সিস্টেমের মাধ্যমে বিমানবন্দরগুলির রিয়েল-টাইম সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী করার পরিকল্পনার কথা জানান। এবং এটি নিশ্চিত করবে যে, বিমানবন্দর পরিচালনার সকল কার্যক্রম দ্রুত এবং সঠিকভাবে হবে।
পাইলটদের প্রতিক্রিয়া
ভারতের একটি বেসামরিক বিমান সংস্থার এক সিনিয়র পাইলট এই নতুন ই-পি এল সিস্টেমের প্রশংসা করে বলেছেন, “এটি আমাদের কাজের পদ্ধতিকে আরও সহজ এবং দক্ষ করে তুলবে, এবং আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি যেমন নিরাপত্তা এবং যাত্রীদের সঠিক সেবা দেওয়ার দিকে বেশি মনোযোগী হতে পারব। এই পরিবর্তন ভারতীয় বিমান চলাচল খাতের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।”
ই-পি এল চালুর মাধ্যমে ভারত এক যুগান্তকারী প্রযুক্তি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যা দেশের বিমান চলাচল খাতকে আরও উন্নত, নিরাপদ এবং আধুনিক করে তুলবে।