কুম্ভমেলা হিন্দুধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থযাত্রা ও মহা উৎসব। প্রয়াগরাজ,উত্তর প্রদেশে চলমান মহা কুম্ভ মেলা লক্ষ লক্ষ ভক্তকে আকর্ষণ করে। ত্রিবেণী সঙ্গমের পবিত্র জলে আত্মিক শান্তি ও পবিত্রতা অর্জনের উদ্দেশ্যে সকল স্তরের মানুষ সামিল হন। তবে ২০২৫ এর মহাকুম্ভে এক বিশেষ ব্যক্তি সকলের নজর কেড়েছেন। এক প্রাক্তন অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার। যিনি গোটা দেশে এখন ‘আইআইটি বাবা’ নামে পরিচিত।
এই ব্যক্তির নাম অভয় সিংহ। তিনি হরিয়ানার বাসিন্দা এবং IIT বম্বে থেকে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হয়েছেন। অভয় সিংহ একটি কর্পোরেট চাকরি পেয়েছিলেন ক্যাম্পাস প্লেসমেন্টের মাধ্যমে। তারপর এক বছর ফিজিস্ক টিউশন পড়িয়ে ও ট্রাভেল ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করেন। এরপরই জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু করেন তিনি। বেছে নেন সন্ন্যাস জীবন। পায়ে হেঁটে দু হাজার কিলোমিটার ঘুরে বেড়ান এক তীর্থ থেকে অন্য তীর্থ। এবার তিনি এসেছেন কুম্ভমেলায়।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন যে, মুম্বাইয়ে চার বছর থাকার পর তিনি তাঁর ফোকাস পরিবর্তন করে ফটোগ্রাফি এবং কলার দিকে মনোযোগ দেন। এই পরিবর্তনকে তিনি ‘৩ ইডিয়টস’ সিনেমার সাথে তুলনা করেছেন। তবে সেখানেও তিনি পূর্ণতা অনুভব করতে পারেননি। জীবনের এই পর্যায়ে এসে তিনি বিজ্ঞানকে ত্যাগ করে আধ্যাত্মিকতার দিকে মনোনিবেশ করেন। আজকের দিনে, অভয় সিংহ শিবভক্ত হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। তাঁর আধ্যাত্মিক জ্ঞান এবং বিজ্ঞান সম্পর্কিত গভীর ধারণার মিশ্রণ তাঁর প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি করেছে। তিনি বলেন, “এখন আমি আধ্যাত্মিকতা উপভোগ করছি। আমি এটি বিজ্ঞান দিয়ে বুঝি। আমি এর গভীরে প্রবেশ করছি। সবকিছু শিবের মধ্যে রয়েছে। সত্য শিব, এবং শিব সুন্দর।”
মহা কুম্ভ মেলায় তাঁর উপস্থিতি বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছে, কারণ তিনি সহজেই ইংরেজিতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। তাঁর বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং আধ্যাত্মিক বোধের সমন্বয়ে তিনি ঐতিহ্যগত সন্ন্যাসী চরিত্র থেকে ভিন্ন একটি বিশেষ পরিচিতি তৈরি করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন। ইনস্টাগ্রামে তাঁর ২৯,০০০ এর কাছাকাছি অনুসরণকারী রয়েছেন, যেখানে তিনি সাধারণত ধ্যান, যোগ, প্রাচীন সূত্র এবং আধ্যাত্মিক চর্চার ওপর পোস্ট করেন।তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মতে, ‘ইঞ্জিনিয়ার বাবা’ নামে পরিচিত হওয়ার কারণ হল তাঁর অতীতের পেশাগত জীবনের সাথে আধ্যাত্মিকতার যে অদ্ভুত সমন্বয় রয়েছে।