নয়াদিল্লি: রাজধানীর বুক কাঁপিয়ে দিল ভয়াবহ বিস্ফোরণ! ঐতিহাসিক লালকেল্লার ঠিক সামনে পরপর দুটি গাড়িতে ঘটে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। মুহূর্তের মধ্যে আগুন লেগে যায় আশেপাশের আরও তিনটি গাড়িতে। আতঙ্কে কাঁপছে দিল্লি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, বিস্ফোরণটি ছিল পরিকল্পিত জঙ্গি হামলা এবং এতে IED ব্যবহার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে এক সন্দেহভাজন জঙ্গিকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ।
ঘটনার সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ। লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের কাছে দাঁড়ানো একটি সাদা SUV হঠাৎ প্রবল শব্দে বিস্ফোরিত হয়। আশেপাশের এলাকাজুড়ে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে আগুন এবং ধোঁয়া। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথম বিস্ফোরণের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পাশের আরেকটি গাড়িতেও বিস্ফোরণ ঘটে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আরও তিনটি গাড়িতে। চারদিক জুড়ে শুরু হয় চিৎকার আর আতঙ্ক।
মগধ রাজ্যের দ্বিতীয় দফার ভোটের মুখে ‘হাই অ্যালার্ট’ কলকাতা সহ BJP শাসিত রাজ্য!
প্রথমিক খবর অনুযায়ী, এই ভয়াবহ ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং চৌদ্দজন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের দ্রুত স্থানান্তর করা হয়েছে লালকেল্লার নিকটবর্তী লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতাল ও রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ৭টি দমকলের ইঞ্জিন, সঙ্গে উপস্থিত দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল এবং NSG (ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড)-এর একটি দল। এলাকা ঘিরে ফেলেছে নিরাপত্তা বাহিনী। পুরো অঞ্চল এখন উচ্চ সতর্কতায়। পুলিশের এক সিনিয়র আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা নিশ্চিত হয়েছি এটি সাধারণ দুর্ঘটনা নয়। এখানে স্পষ্টভাবে বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ধাতব টুকরো এবং সার্কিট বোর্ড পরীক্ষা করছে ফরেনসিক টিম।”
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিস্ফোরণের পেছনে একটি সক্রিয় জঙ্গি মডিউলের হাত রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন জঙ্গিকে জেরা শুরু করেছে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। প্রাথমিক জেরায় সে জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পরিকল্পনা আগেই করা হয়েছিল এবং লক্ষ্য ছিল ঐতিহাসিক স্থানের পাশে ভয় তৈরি করা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনাটির রিপোর্ট চেয়েছেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল টুইট করে বলেছেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।”
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “প্রথমে মনে হয়েছিল গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেছে। কিন্তু শব্দটা এত জোরে ছিল যে পুরো রাস্তা কেঁপে উঠেছিল। তারপরই আগুনের ফুলকি দেখা যায়।”
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত IED-এর মধ্যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ওয়্যার সার্কিট, এবং টাইমার ডিভাইস পাওয়া গিয়েছে। যা স্পষ্টতই একটি পরিকল্পিত বিস্ফোরণের প্রমাণ দিচ্ছে।
বর্তমানে দিল্লি পুলিশ শহরজুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে। লালকেল্লা, চাঁদনি চক, ও জামা মসজিদ এলাকায় চেকিং চলছে জোরদারভাবে। গোটা ঘটনায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ব্যক্তিগতভাবে নজর রাখছেন।
রাজধানীর এমন ঐতিহাসিক স্থানে জঙ্গি হামলার চেষ্টা নিঃসন্দেহে নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড় ফাঁক উন্মোচন করেছে। ঘটনার তদন্তে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা NIA-কে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে।


