স্কুলে মাদক চক্রের হদিস, পরিচালক সহ গ্রেফতার তিন

হায়দরাবাদ: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (Hyderabad School) ভেতর এভাবে মাদক ব্যবসা চলতে পারে, তা ভেবে বিস্মিত গোটা তেলেঙ্গানা। হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি স্কুল থেকে গোপন মাদক কারখানার সন্ধান…

drugs

হায়দরাবাদ: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (Hyderabad School) ভেতর এভাবে মাদক ব্যবসা চলতে পারে, তা ভেবে বিস্মিত গোটা তেলেঙ্গানা। হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি স্কুল থেকে গোপন মাদক কারখানার সন্ধান মিলেছে। অভিযানে পুলিশ গ্রেফতার করেছে স্কুলের পরিচালক মালেলা জয়া প্রকাশ গৌড় সহ আরও দুই সহযোগীকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত পরিচালক স্কুলের দ্বিতীয় তলা ও কিছু ‘নিষিদ্ধ এলাকা’কে রূপান্তরিত করেছিলেন গোপন ল্যাবে। সেখানে তৈরি হতো অ্যালপ্রাজোলাম (Alprazolam), যা একটি বিপজ্জনক নেশাজাতীয় পদার্থ। সাধারণত এই মাদক স্থানীয় ‘টোডি’ মদে ভেজাল মিশ্রণে ব্যবহৃত হয়।

   

তেলেঙ্গানা পুলিশের EAGLE (Elite Action Group for Drug Law Enforcement) টিম গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হানা দিয়ে পুরো কারখানাটি উদঘাটন করে। সেখানে দেখা যায়, রসায়ন ল্যাবরেটরির আড়ালে বসানো হয়েছে আটটি রিঅ্যাক্টর ও আধুনিক ড্রায়ার, যা ব্যবহার করা হচ্ছিল বৃহৎ আকারে মাদক উৎপাদনের জন্য।

তদন্তে জানা গিয়েছে, পরিচালক গৌড় তাঁর সহযোগী গুরুভারেড্ডি-র কাছ থেকে এই বিপজ্জনক রাসায়নিক তৈরির কৌশল শিখেছিলেন। প্রায় ছয় মাস ধরে টানা এই কারবার চালিয়ে আসছিলেন তিনি। সপ্তাহে ছয়দিন মাদক তৈরি হত, আর রবিবার নির্দিষ্ট ডিপোতে পৌঁছে দেওয়া হত।

পুলিশ অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে ৭ কেজিরও বেশি অ্যালপ্রাজোলাম, ২১ লক্ষ টাকার নগদ অর্থ,
প্রচুর রাসায়নিক পদার্থ, বিশাল উৎপাদন সরঞ্জাম৷

চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, যখন স্কুলের নিচতলা ও প্রথম তলায় স্বাভাবিকভাবে ক্লাস চলছিল, ঠিক সেই সময় দ্বিতীয় তলায় চলছিল অবৈধ মাদক কারখানা।

Advertisements

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে NDPS আইন অনুযায়ী মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গৌড় এবং তাঁর দুই সহযোগী মিলে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিলেন, যাতে চাহিদা অনুযায়ী টোডি ব্যবসায়ীদের কাছে নিয়মিত সরবরাহ করা যায়।

এই ঘটনার জেরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতর এই ধরনের অপরাধমূলক কাজকে অনেকেই সমাজের জন্য মারাত্মক হুঁশিয়ারি বলে মনে করছেন।

তেলেঙ্গানা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে আরও কঠোর নজরদারি চালানো হবে। বিশেষ করে শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর নিয়মিত নজর রাখা হবে, যাতে আর কোনো জায়গাকে বেআইনি কাজে ব্যবহার করা না যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, স্কুলের ভেতরে মাদক চক্র চালানো শুধু বেআইনি নয়, বরং তা শিশু-কিশোরদের নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি। তাই প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ একান্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।