এলন মাস্কের (Elon Mask) স্পেসএক্স (SpaceX) শীঘ্রই ভারতে স্টারলিঙ্ক (Starlink) স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করতে চলেছে। দেশের দুই শীর্ষ টেলিকম সংস্থা, ভারতী এয়ারটেল (Bharti Airtel) ও রিলায়েন্স জিও (Reliance Jio), মাস্কের কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই করেছে। এই চুক্তির মাধ্যমে ভারতে গণ স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড পরিষেবা শুরু হবে।
বুদকি বলেন, “অনেক দুর্গম এলাকায় এখনও ইন্টারনেট পৌঁছায়নি। যেখানে আছে, সেখানে গতি খুবই কম। সেখানে তার বা টাওয়ারের বদলে একমাত্র স্যাটেলাইটই সমাধান। স্যাটেলাইটের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, খোলা জায়গা থাকলেই কভারেজ পাওয়া যাবে।” তিনি আরও বলেন, “এয়ারটেল ও জিও এই প্রযুক্তি দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দিতে চায়।”
স্টারলিঙ্ক (Starlink Satellite) নিম্ন ভূ-কক্ষপথের স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সরবরাহ করে। এই পরিষেবা চালু হলে দেশীয় ফ্লাইটেও ইন্টারনেট ব্যবহার সম্ভব হবে, যা বিদেশের অনেক এয়ারলাইন্সে ইতিমধ্যে চালু আছে। বুদকি জানান, “ভারতের ফ্লাইটের জন্য প্যাকেজ তৈরি হবে, যা যাত্রীরা উপভোগ করতে পারবেন।” তবে, তিনি সতর্ক করে বলেন, “প্রযুক্তি ও হার্ডওয়্যারের কারণে কখনও কখনও সমস্যা হতে পারে, তবে তা খুব কমই হবে।”
এয়ারটেল ও জিওর সঙ্গে স্টারলিঙ্কের গুরুত্ব
জিও, ভারতের বৃহত্তম টেলিকম সংস্থা, তাঁদের হাজার হাজার খুচরো দোকানে স্টারলিঙ্কের সরঞ্জাম বিক্রি করবে। এর আগে এয়ারটেলও একই ধরনের চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে। তবে, এই পরিষেবা চালুর জন্য সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন। বুদকি বলেন, “ভারতে অনেকেই স্টারলিঙ্ক সম্পর্কে জানেন না, তবে এয়ারটেল ও জিওর নাম তাঁরা চেনেন। সরকারের ছাড়পত্র পেলেই পরিষেবা শুরু হবে।”
তিনি জানান, প্রথমে এটি ব্যবসায়িক (B2B) পরিষেবা, যেমন কারখানা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যবহৃত হবে। “দাম বেশি হতে পারে। আন্তর্জাতিক দাম দেখলে বলা যায়, এটি খরচসাপেক্ষ হবে। তবে সরকারি ভর্তুকি থাকলে দাম কমতে পারে। জিও যখন নতুন কিছু আনে, তখন দাম এমন হয় যে প্রতিযোগীরা চিন্তায় পড়ে আর গ্রাহকরা উৎসাহিত হয়। ফ্রি ট্রায়ালও থাকতে পারে।”
স্টারলিঙ্ক বিশ্বের ১২৫টির বেশি বাজারে কভারেজ দেয়। বুদকি বলেন, “যেসব দেশে এটি চলছে, সেখানে বড় কোনও অভিযোগ নেই। ইউক্রেনে স্টারলিঙ্কই সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট সরবরাহ করছে, যা সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে।”
তিনি মনে করেন, এয়ারটেল ও জিও নিজেদের স্যাটেলাইট প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। “জিও সম্প্রতি ইন্ডিয়ান মোবাইল কংগ্রেসে এটি প্রদর্শন করেছে। এয়ারটেলও আগে করেছে। তাঁরা এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়, তাই স্টারলিঙ্কের সঙ্গে জোট বেঁধেছে। এটি খরচ কমাতে সাহায্য করবে। ভবিষ্যতে তারা নিজেদের পরিষেবাও চালু করবে।”
গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওয়াশিংটনে মাস্কের সঙ্গে বৈঠক করেন। মাস্কের টেসলা ভারতে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্টারলিঙ্ক ২০২২ সাল থেকে ভারতে লাইসেন্সের অপেক্ষায় রয়েছে, তবে জাতীয় নিরাপত্তার কারণে বিলম্ব হচ্ছে।