সুধা মূর্তি, ইঞ্জিনিয়র, ইনফোসিস কর্তার স্ত্রী, সমাজসেবী, রাজ্যসভার সাংসদ – বহু পরিচয় তাঁর। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সুধা মূর্তি জানিয়েছেন য়ে, তিনি বিগত 30 বছরে একটি শাড়ি কেনেননি। এর নেপথ্যে রয়েছে তাঁর কাশী (বারানসী) ভ্রমণ। ইনফোসিসের চেয়ারম্যান নারায়ণ মূর্তির স্ত্রী সুধা মূর্তি প্রচুর সম্পদশালী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর সরলতার জন্য প্রায়ই শিরোনামে থাকেন।
‘ভয়েস অফ ফ্যাশন’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুধা মূর্তি নিজের জীবনের বহু কাহিনী জানিয়েছেন। যার মধ্যে অন্যতম তাঁর গত তিন দশক ধরে শাড়ি না পড়ার বিষয়টি। সুধা মূর্তির কথায়, “এটা বলা হয়ে থাকে যে, আপনি যখন কাশীতে যান, আপনার খুব পছন্দের কিছু ছেড়ে দেওয়া উচিত। আমি কেনাকাটা করতে পছন্দ করতাম, বিশেষ করে শাড়ি। তাই গঙ্গার কাছে আমার সংকল্প ছিল যে- ওই সফরের পর আমি আর শাড়ি কিনব না।”
৭৩ বছর বয়সী সুদা মূর্তির প্রতিশ্রুতির গভীরভাবে তাঁর লালন-পালনের মধ্যে নিহিত। কারণ তাঁর বাবা-মা এবং ঠাকুরদাদা-ঠাকুমা ন্যূনতম সম্পদের মালিক ছিলেন নিজেদের পছন্দে, এছাড়াও অত্যন্ত মিতব্যয়ী জীবনযাপন করেছিলেন।
সুধা মূর্তির দাবি, ”৬ বছর আগে যখন আমার মা মারা যান, তখন তাঁর আলমারিতে থাকা জিনিসগুলো বিলোতে আমাদের মাত্র আধা ঘণ্টা লেগেছিল। কারণ আমার মায়ের কাছে মাত্র ৮-১০টি শাড়ি ছিল। ৩২ বছর আগে যখন আমার ঠাকুরমা মারা যান, তখন তাঁর কাছে মাত্র ৪টি শাড়ি ছিল। তাঁরা অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করতেন। যেহেতু এটি আমার লালন-পালনের অংশ, তাই আমি কম সম্পদে খুশি থেকে সহজ ও অনাড়ম্বর জীবনেই অব্যস্ত।”
মাঝরাতে দলবদল! বিআরএস ছেড়ে ৬ MLC যোগ দিলেন কংগ্রেসে
বিগত দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে, সুধা মূর্তিকে তাঁর বোনেরা, ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা এবং মাঝে মাঝে তাঁর তৈরি এনজিওর সঙ্গে যুক্তরা কর্মীরা তাকে শাড়ি উপহার দেন। সুধার সবচেয়ে লালিত সম্পদের মধ্যে রয়েছে, সূচির কাজ করা দু’টি শাড়ি। এগুলো তাঁকে দিয়েছিলেন ইনফোসিস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত মহিলারা। এঁদের তিনিই ইনফোসিস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন।
বোন, আত্মীয় বা এনজিও-র থেকে পাওয়া শাড়ির সংখ্যাও এত বেশি যে, মাঝে মধ্যেই বিরক্ত হয়ে যান সুধা মূর্তি। বলেন, ”আমি তাঁদের এই উপহারের বিষয়ে যথেষ্ট বলেছি। আমার কাছে ইতিমধ্যেই অনেক কিছু আছে। শাড়ি আর না দিতে বলেছি।” তাঁর সংযোজন, “আমি পঞ্চাশ বছরের বেশি শাড়ি পরছি। কিন্তু বহু পুরনো শাড়িই এখনও ভাল রয়েছে। কারণ শাড়ি পড়ার পরই আমি সেগুলোকে হাওয়ায় রাখি, ইস্ত্রি করে যত্নের সঙ্গে আলমারিতে তুলে রাখি। আমি কখনও আমার শাড়ি খুব নীচু করে পরি না, আমার শাড়ি কখনও মেঝে ঝাড়ু দেয় না। তাই নোংরা হওয়ারও ভয় থাকে না।”
ইনফোসিস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, এই সপ্তাহের শুরুতেই রাজ্যসভায় তাঁর প্রথম ভাষণ দিয়েছিলেন। সার্ভিকাল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সরকারি টিকাদান কর্মসূচির পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। এছাড়াও দেশের ৫৭টি পর্যটন স্থানকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।