বাংলাসহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে ভুয়ো ধর্মীয় কাঠামো ভাঙার নির্দেশ কেন্দ্রের

The Home Ministry has ordered 17 border states to demolish all illegal religious structures within 30 km of India’s borders to strengthen national security and prevent misuse by infiltrators.

নয়াদিল্লি, ১৮ অক্টোবর ২০২৫: সীমান্তবর্তী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা জোরদার করতে কেন্দ্র সরকার এক বড় পদক্ষেপ নিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশের মোট ১৭টি সীমান্তবর্তী রাজ্যের প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, যাতে ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা সমস্ত অবৈধ ধর্মীয় স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়

Advertisements

নির্দেশের মূল কারণ

কেন্দ্রের মতে, সীমান্ত অঞ্চলে গড়ে ওঠা অবৈধ ধর্মীয় স্থাপনা প্রায়শই—

  • জমি দখল
  • অবৈধ বসতি স্থাপন
  • সীমান্ত অতিক্রমকারী অবৈধ কার্যকলাপ

এর মতো সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, অনেক সময় এই ধরনের অবৈধ কাঠামো সন্ত্রাসবাদ, চোরাচালান ও অনুপ্রবেশের আড়াল হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।

কোন কোন রাজ্যে কার্যকর হবে সিদ্ধান্ত?

ভারতের যেসব রাজ্য আন্তর্জাতিক সীমান্তের সঙ্গে যুক্ত, তাদের প্রত্যেককে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—

  • জম্মু ও কাশ্মীর
  • পাঞ্জাব
  • রাজস্থান
  • গুজরাট
  • আসাম
  • পশ্চিমবঙ্গ
  • মেঘালয়
  • মিজোরাম
  • নাগাল্যান্ড
  • মণিপুর

    এছাড়াও উত্তর-পূর্ব ভারতের আরও কয়েকটি সীমান্তবর্তী রাজ্য।

কীভাবে হবে বাস্তবায়ন?

প্রতিটি রাজ্য সরকারকে বলা হয়েছে—

  • অবৈধ ধর্মীয় স্থাপনার তালিকা প্রস্তুত করতে
  • প্রশাসন, পুলিশ ও সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (BSF)-এর সঙ্গে যৌথভাবে অভিযান চালাতে
  • ভাঙার কাজের সময় যাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি না হয়, সে ব্যাপারে বিশেষ নজর রাখতে

কেন্দ্র পরিষ্কার জানিয়েছে, প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হবে।

Advertisements

প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক

এই নির্দেশ সামনে আসতেই রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

  • শাসক শিবিরের দাবি: জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ জরুরি। সীমান্ত এলাকায় কোনো অবৈধ কাঠামো বা কার্যকলাপ বরদাস্ত করা হবে না।

  • বিরোধীদের অভিযোগ: সরকার ধর্মীয় আবেগে আঘাত হানতে চাইছে এবং নির্বাচনের আগে এই পদক্ষেপ ইচ্ছাকৃতভাবে বিতর্ক তৈরি করবে।

মানবাধিকার কর্মীদের একটি অংশও বলছে, অবৈধ কাঠামো ভাঙার সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।

সীমান্তবর্তী এলাকার বাস্তব চিত্র

অনেক সীমান্তবর্তী গ্রামে দেখা যায়, ছোট ছোট মসজিদ, মন্দির বা অন্যান্য ধর্মীয় স্থাপনা অনুমতি ছাড়াই গড়ে তোলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে কিছু সামাজিক জমি বা সরকারি জমি দখল করে তৈরি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন অনেক সময় রাজনৈতিক বা সামাজিক কারণে এসব ভাঙতে পারেনি। কেন্দ্র এবার সেই গাফিলতির অবসান ঘটাতে চাইছে।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মত

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমান্তের কাছাকাছি অবৈধ ধর্মীয় কাঠামো ভাঙা হলে সন্ত্রাসবাদ ও অনুপ্রবেশের সুযোগ কমবে। এক বিশ্লেষকের মতে:

“সীমান্ত অঞ্চল সবসময়ই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অবৈধ কাঠামো থেকে শুরু করে অপরাধী চক্র সক্রিয় হলে তা গোটা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”

কেন্দ্রের এই নির্দেশ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে অবৈধ ধর্মীয় কাঠামো ভাঙার পদক্ষেপ একদিকে যেমন জাতীয় নিরাপত্তা মজবুত করবে, অন্যদিকে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার ঝড়ও তুলবে। এখন দেখার বিষয়—রাজ্য সরকারগুলি কীভাবে এই সংবেদনশীল নির্দেশ কার্যকর করে।