সিমলা: হিমাচল প্রদেশ (Himachal Pradesh) এ বছরও ভয়াবহ বর্ষার ক্ষতির মুখে পড়েছে। রাজ্যের রাজস্ব, উদ্যানপালন ও আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী জগত সিং নেগি শনিবার শিমলায় এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাজ্যের আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ইতিমধ্যেই প্রায় ₹৫,৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত মূল্যায়ন প্রক্রিয়া এখনো চলছে, ফলে এই অঙ্ক আরও বাড়তে পারে।
মন্ত্রী নেগি বলেন, “অতিবৃষ্টি, মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং আকস্মিক বন্যায় রাজ্যের বহু জেলায় সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কেন্দ্রের একটি বিশেষজ্ঞ দলও এসে নিজেদের মূল্যায়ন করেছে।”
Himachal rain damage: রাস্তাঘাট ও পরিষেবা এখনো ব্যাহত
রাজ্যের অবকাঠামোতে বর্ষার ধাক্কা ভয়াবহ। এখনো ১৩৫টি গ্রামীণ সড়ক এবং একটি জাতীয় সড়ক যান চলাচলের জন্য বন্ধ। বিদ্যুৎ সরবরাহেও বিপর্যয় ঘটেছে—১৭টি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার (DTR) অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পানীয় জলের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিয়েছে, কারণ ৪৭টি প্রকল্প এখনো পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
মন্ত্রী নেগি জানিয়েছেন, বর্ষা মৌসুম এখন অনেকটাই শেষের পথে, আবহাওয়া পরিষ্কার এবং রৌদ্রোজ্জ্বল হয়েছে। গত তিন দিনে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পুনর্গঠনে প্রশাসন মাঠ পর্যায়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
কেন্দ্রীয় প্যাকেজ এখনো হাতে আসেনি
মন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত বছরের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর একটি বিশেষ ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই বরাদ্দ এখনো রাজ্যের হাতে আসেনি। তিনি বলেন, “কেন্দ্রের রুটিন ফান্ড আমরা পেয়েছি, যা সব রাজ্যেই বরাদ্দ হয়। কিন্তু বিশেষ প্যাকেজের টাকা আসেনি।”
রাজ্যের নিজস্ব সহায়তা
রাজ্য সরকার অবশ্য নিজস্ব উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সাহায্য করছে। মুখ্যমন্ত্রী সুখভিন্দর সিং সুখু-র নেতৃত্বে মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, গত বছরের মতো এ বছরও রাজ্যের বিশেষ ত্রাণ প্যাকেজ কার্যকর থাকবে।
আগে কেন্দ্রীয় স্কিম অনুযায়ী সম্পূর্ণ ধ্বংস হওয়া বাড়ির জন্য ক্ষতিপূরণ ছিল ₹১.৩ লাখ। রাজ্য সরকার সেই অঙ্ক বাড়িয়ে এখন ₹৭ লাখ করেছে। নতুন নীতি অনুযায়ী,
- সম্পূর্ণ ধ্বংস হওয়া বাড়ির মালিকরা পাবেন ₹৭ লাখ,
- আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকরা পাবেন ₹১ লাখ।
মন্ত্রী নেগি বলেন, “শীত নামার আগে গ্রামীণ যোগাযোগ ও জরুরি পরিষেবা পুনর্গঠনের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। আমরা চাইছি, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ যেন খুব দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন।”