China Floods: অঝোর বর্ষণে বিপর্যস্ত চিন! মৃত ৩০, ঘরছাড়া ৮০ হাজার মানুষ

চিনের রাজধানী বেজিং এবং পার্শ্ববর্তী হেবেই প্রদেশ ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। টানা ভারী বর্ষণের জেরে রাস্তা-ঘাট, ঘরবাড়ি তলিয়ে গিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৩০ ছাড়িয়েছে। প্রশাসনের…

"Rising Risk of Flash Floods in North Bengal Amid Heavy Rain Forecast"

চিনের রাজধানী বেজিং এবং পার্শ্ববর্তী হেবেই প্রদেশ ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। টানা ভারী বর্ষণের জেরে রাস্তা-ঘাট, ঘরবাড়ি তলিয়ে গিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৩০ ছাড়িয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, শুধু বেজিংয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০ জনের। হেবেই প্রদেশে আরও ৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ এবং বহু এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।

Advertisements

গত কয়েকদিন ধরে উত্তর চিনে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই প্রবল বর্ষণের ফলে পাহাড়ি এলাকায় ধস এবং সমতলে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রায় ১৩০টিরও বেশি গ্রামে বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ফলে, বহু মানুষ এখনো প্রশাসনের নাগালের বাইরে। উদ্ধারকার্য চালাতে গিয়ে অনেক সময়েই বিপদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের।

   

উদ্ধারকাজে লাগানো হয়েছে সেনাবাহিনী, দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দুর্গত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, কোমর জলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা, বন্যার জলে আটকে পড়া মানুষদের নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা চলছে। আবার কোথাও দেখা গিয়েছে, ভেসে যাচ্ছে গাড়ি, ভেঙে পড়ছে সেতু।

চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইতিমধ্যেই এই বিপর্যয় নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রশাসনকে ‘সর্বাত্মক উদ্ধার তৎপরতা’ চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন, “সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।” শি আরও বলেছেন, “মানুষের প্রাণ রক্ষা এখনই সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।” একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এবং দুর্গতদের সবরকম সহায়তা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

বন্যার কারণে প্রায় ৮০,০০০-এর বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন, তাঁদের জন্য অস্থায়ী ত্রাণশিবির তৈরি করা হয়েছে। খাবার, পানীয় জল ও ওষুধের ব্যবস্থা করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে।

এই পরিস্থিতিতে চিনের সাধারণ মানুষ অত্যন্ত আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। একাধিক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, রাতারাতি জল ঢুকে পড়েছে তাঁদের ঘরে, কোনও কিছুই রক্ষা করা যায়নি। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, “আমরা শুধু নিজেদের প্রাণ নিয়ে পালিয়েছি। বাড়ি, জিনিসপত্র সবই জলে ডুবে গেছে।” অনেক জায়গায় রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় উদ্ধারকারীদের পায়ে হেঁটে দুর্গম এলাকায় পৌঁছতে হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এই ধরনের চরম আবহাওয়া ভবিষ্যতে আরও ঘন ঘন ঘটবে। চিনে সাম্প্রতিক অতীতে এত বড় বন্যা বিরল। সরকারি রিপোর্ট বলছে, এখনও পর্যন্ত আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হাজার কোটি ইউয়ান ছাড়িয়েছে।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে চিন সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও নজর রাখছে সেখানে। মানবিক সাহায্যের আশ্বাস এসেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও অন্যান্য দেশের পক্ষ থেকেও।

এখনও পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলছে জোরকদমে। প্রশাসনের প্রাথমিক লক্ষ্য, সমস্ত দুর্গতদের নিরাপদে সরিয়ে আনা এবং প্রয়োজনীয় সাহায্য পৌঁছে দেওয়া। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে এখনও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা।