পাটনা: মোর্চা, র্যালি, ইস্তেহার নয়! বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে শাসক-বিরোধী উভয়েরই বর্তমানে প্রধান অস্ত্র “নারী-সম্মান”! এর উপর ভিত্তি করেই একে অপরের বিরুদ্ধে তুঙ্গে তর্জমা। একদিকে, প্রধানমন্ত্রীর মা-কে অপমানের বিরুদ্ধে বিহারজুড়ে বন্ধ ডেকেছে বিজেপি। অন্যদিকে, বন্ধের মাঝেই বিহারের মা-বোনেদের বিজেপির (BJP) “গুন্ডারা” অসম্মান করছে বলে তোপ দেগেছেন বরিষ্ঠ আরজেডি (RJD) নেতা লালুপ্রসাদ যাদব।
সরাসরি নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে এক্স (X)-এ তিনি লেখেন, “প্রধানমন্ত্রী কি বিহারের মা-বোনদের গালিগালাজ করার জন্য বিজেপির নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন?” তিনি বলেন, “এটা বিহার! গুজরাটিরা বিহারীদের হালকা ভাবে নিও না!” লালুর দাবি, বিজেপির “গুন্ডারা” পথচলতি শিক্ষিকা, ছাত্রী, গর্ভবতী, বয়োজ্যেষ্ঠা, সাংবাদিকাদের গালিগালাজ করছে! এমনকি মহিলাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, ধ্বস্তাধস্তিও করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন লালু।
সেইসঙ্গে, “প্রধানমন্ত্রী বিহারের মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন”, বলে তোপ দাগেন তেজস্বী যাদব (Tejaswi Yadav)। এক্স-এ তেজস্বী লেখেন, “মোদী জি! বিহার আপনার মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফাঁদে পা দেবে না। বর্তমানে দারিদ্র, বেকারত্ব, অপরাধ, পরিযায়ী, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা ক্ষেত্রের বেহাল দশায় জর্জরিত বিহার। বিহার থেকে জিতে আপনি গুজরাটে গিয়ে কারখানা বানাবেন! বিহারের মানুষরা কেবলমাত্র শ্রমিকের কাজ করার জন্য জন্মায়নি!”
উল্লেখ্য, দ্বারভাঙ্গায় ভোটার অধিকার যাত্রার মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রীর মা-কে নিয়ে এক যুবকের কু-মন্তব্য করা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় বিহারের রাজনীতিতে। তারপর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদী বক্তব্য শোনা যায় বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের মুখে। আসাম থেকে অমিত শাহও ঘটনার নিন্দা করে রাহুল গান্ধীকে সমগ্র দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। তারপর চিন সফর শেষ করে বিহারের সমবায় বৈঠকে প্রায় ২০ লক্ষ মহিলার সামনে ভার্চুয়াল বৈঠকে “মায়ের বিরুদ্ধে কু-কথার” প্রতিবাদ জানান স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ঘটনার বেশ কয়েকদিন পর প্রতিবাদ জানাতে বিহারের নারীদের বৈঠককেই কেন বেছে নেন, সেই নিয়ে কটাক্ষ করে বিরোধীরা। আসন্ন নির্বাচনে বিহারের মহিলা ভোটারদের সহানুভূতি কুড়োতেই বিদেশ যাত্রা সেরে চোখে জল নিয়ে প্রতিবাদ করেন মোদী, বলে কটাক্ষ করে কংগ্রেস সহ বিরোধীরা। অন্যদিকে, সনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নিজেই কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন, বিজেপির মুখপাত্র সহ একাধিক নেতা কর্মী সমাজমাধ্যমে এসে মহিলাদের নামে বারংবার অশালীন মন্তব্য করে বলে পাল্টা তোপ দাগে কংগ্রেস। তবে শাসক-বিরোধী উভয়ের এই “নারী-সম্মান” নিয়ে বিবাদ বিহারের নির্বাচনে মহিলা ভোটারদের উপর কি প্রভাব ফেলে সেটিই দেখার।