পুলিশকর্মীর আত্মহত্যা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যকে তীব্র কটাক্ষ রাহুল গান্ধীর

Haryana Cop Suicide: Rahul Gandhi Alleges Discrimination, Seeks Fast-Track Justice

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) সম্প্রতি হরিয়ানার আইপিএস কর্মকর্তা পুরাণ সিংহের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যিনি অভিযোগ করেন যে আত্মহত্যা করেছেন। রাহুল গান্ধী এ বিষয়ে হরিয়ানা সরকারের প্রতি তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে, রাজ্য সরকার তার অঙ্গীকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। পুরাণ সিংহের মৃত্যু কোনও একক ঘটনা নয়, বরং দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকা বৈষম্য এবং দুর্নীতির ফলস্বরূপ। রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন যে, পুরাণ সিংহ এবং তার পরিবার প্রায় ছয় থেকে সাত বছর ধরে ‘‘সাংগঠনিক বৈষম্য’’ সহ্য করেছেন, যা তাকে মানসিকভাবে ভেঙে ফেলেছিল।

রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘পুরাণ সিংহ একজন দালিত কর্মকর্তা ছিলেন এবং তার পরিবার যেসব অবিচারের সম্মুখীন হয়েছে, তা ছিল একেবারেই পরিকল্পিত এবং সিস্টেম্যাটিক। এই ধরনের বৈষম্য তাকে ধীরে ধীরে মানসিকভাবে দুর্বল করে ফেলেছিল এবং শেষ পর্যন্ত তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছিল।’’ তিনি দাবি করেন যে, এটি কেবল এক ব্যক্তি বা এক পরিবারের সমস্যা নয়, বরং ভারতের আইনি এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থায় বিদ্যমান বৈষম্যের একটি বড় উদাহরণ।

Advertisements

রাহুল গান্ধী আরো বলেন, ‘‘এই ঘটনা কেবল একটি আত্মহত্যা নয়, এটি একটি গভীর সংকটের ইঙ্গিত, যেখানে একজন সরকারি কর্মকর্তা দিনের পর দিন অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার হন।’’ তিনি অবিলম্বে হরিয়ানা সরকার এবং কেন্দ্র সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং পুরাণ সিংহের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচারের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এবং হরিয়ানা মুখ্যমন্ত্রীকে এই ব্যাপারে তৎপর হতে হবে। তাঁরা যদি যথাযথ পদক্ষেপ নেন না, তবে জনগণকে এর ফল ভুগতে হবে।’’

পুরাণ সিংহের আত্মহত্যার পেছনে দীর্ঘ সময়ের বৈষম্যের কারণ হিসেবে রাহুল গান্ধী উল্লেখ করেছেন যে, রাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এবং রাজনৈতিক নেতারা দুর্নীতি ও অপরাধমূলক কার্যকলাপে যুক্ত থাকলেও, তাদের বিরুদ্ধে কখনোই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এর ফলে প্রশাসনের সঙ্গে মানুষের বিশ্বাসের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি সরকারি কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর সম্মান এবং অধিকার রক্ষিত হওয়া উচিত। তাঁদের প্রতি এ ধরনের বৈষম্য মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে গণ্য করা উচিত।’’ এছাড়া, রাহুল গান্ধী পুরাণ সিংহের পরিবারকে তাদের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেন এবং বলেন, ‘‘পরিবারটি সম্মান চায়—যদি আপনি সম্মান না দেন, তাহলে আমরা সেটা মেনে নেব না।’’ তিনি সরকারের কাছে দাবি করেন, ‘‘তাদের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে এবং তার শেষকৃত্য হতে দিতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার যদি এই ধরনের ন্যায্য দাবির প্রতি সহানুভূতির সঙ্গে প্রতিক্রিয়া না জানায়, তবে কংগ্রেস দল তা মেনে নেবে না।’’

রাহুল গান্ধী আইপিএস কর্মকর্তার পরিবারকে সহানুভূতি জানিয়ে বলেছেন, ‘‘সরকারকে অবশ্যই প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিতে হবে এবং যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’’ তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের প্রতি আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান, যেন এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে আর না ঘটে। তিনি বলেন, ‘‘এটি শুধু পুরাণ সিংহের পরিবার নয়, দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচারের প্রশ্ন।’’ রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, কংগ্রেস দল সরকারকে ঐতিহাসিকভাবে জবাবদিহি করতে উৎসাহিত করছে এবং সকল আইনী এবং মানবাধিকার ক্ষেত্রেও প্রতিটি নাগরিকের অধিকার এবং মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। হরিয়ানা সরকারের পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে সাধারণ মানুষ এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আশা করছেন যে, এই ঘটনাটি দ্রুত তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তি প্রদান করা হবে।

Advertisements