সাধারণত দেশের সরকারি পরিষেবা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। রেল পরিষেবা হোক, অমরনাথ যাত্রা কিংবা আন্তর্জাতিক হজযাত্রা (Hajj 2025)—সুযোগ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। কিন্তু এবার সেই ধারাকে একপ্রকার পাল্টে দিলেন হজ থেকে সদ্য ফিরেই মুখ খুলেছেন মুসলিম মহিলারা। তাঁদের বক্তব্য শুনলে একটাই কথা মনে হবে—সরকারি ব্যবস্থাপনার এই রূপ আগে দেখা যায়নি।
দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরেই এক হজযাত্রী বলেন, “আমি খুব খুশি। আমাদের সরকারের তরফে খুব ভালো ব্যবস্থাপনা করা হয়েছিল। কোনও অসুবিধা হয়নি। প্রত্যেকটা পদক্ষেপ ছিল গুছিয়ে ও সুরক্ষিত।”
এইবারের বিশেষ দিক ছিল অনেক মহিলা যাত্রী প্রথমবারের মতো মাহরাম (পুরুষ অভিভাবক) ছাড়াই হজ পালন করেছেন। এর মাধ্যমে মহিলাদের আত্মবিশ্বাস ও সাহসিকতার এক দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে।
দিল্লি হজ কমিটির চেয়ারপার্সন কাওসার জাহান বলেন, “এই বছর ৫১ জন মহিলা মাহরাম ছাড়াই হজ সম্পূর্ণ করেছেন। তাঁদের আমরা বিমানবন্দরে স্বাগত জানাচ্ছি। এটা শুধু ধর্মীয় যাত্রা নয়, নারী ক্ষমতায়নের এক বড় নজির। প্রধানমন্ত্রী বরাবরই মহিলাদের সশক্তিকরণের পক্ষে কাজ করে চলেছেন। সরকারের সহযোগিতাতেই প্রতিবছর এই ধরনের মহিলাদের সংখ্যা বাড়ছে।”
হজ ফেরত তরুণী সালমা বলেন, “হজ করা ছিল আমার জীবনের একটা বড় স্বপ্ন। ছোট বয়সেই আল্লাহ্ সেটা পূরণ করলেন। ভারত ও সৌদি আরব সরকারের যৌথ ব্যবস্থাপনায় কোনও সমস্যা হয়নি। সবকিছু ছিল সুশৃঙ্খল। ভারত সরকার সত্যিই ভালো কাজ করেছে।”
এই বছর হজ যাত্রায় অংশ নেওয়া মহিলারা জানিয়েছেন, বিমানযাত্রা, মেডিকেল পরিষেবা, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, গাইডের সহায়তা—সবকিছুই ছিল যথাযথ এবং সময়মতো। অনেকেই বলছেন, এত বড় আন্তর্জাতিক ধর্মীয় অভিযানে নারীরা নিজেদের মতো করে অংশ নিতে পারছেন, সেটাই বড় প্রাপ্তি।
হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতা সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁরা নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন অন্য মহিলাদেরও হজে যাওয়ার স্বপ্ন দেখার জন্য।
এই অভিজ্ঞতা শুধু ধর্মীয় ভ্রমণ নয়, বরং তা নারীদের আত্মনির্ভরতা, আত্মবিশ্বাস এবং সরকারি ব্যবস্থাপনার উন্নতির এক স্পষ্ট বার্তা বহন করে।