হাফিজ সইদের ছায়ায় পহেলগাঁও হত্যালীলা! পাক জেলে বসেই ষড়যন্ত্রের ছক

Hafiz Saeed’s Role Revealed নয়াদিল্লি: কাশ্মীরের পহেলগাঁওর বৈসরন উপত্যকায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। এই হামলা শুধু প্রাণঘাতীই নয়, ২০১৯ সালে অনুচ্ছেদ ৩৭০…

Hafiz Saeed's Role Revealed

Hafiz Saeed’s Role Revealed

নয়াদিল্লি: কাশ্মীরের পহেলগাঁওর বৈসরন উপত্যকায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। এই হামলা শুধু প্রাণঘাতীই নয়, ২০১৯ সালে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপের পর উপত্যকায় এটি সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা৷ এই ঘটনায় গোটা দেশ জুড়ে শোক, ক্ষোভ এবং প্রতিবাদের ঝড়৷ সব মিলিয়ে পরিস্থিতি রীতিমতো উত্তপ্ত।

   

লস্কর-ই-তইবা-র ছায়া: পুরনো মডিউল, নতুন হামলা

তদন্তে উঠে এসেছে, নিষিদ্ধঘোষিত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তইবা (LeT)-র একটি সুসংগঠিত মডিউল এই হামলার নেপথ্যে। অধিকাংশ হামলাকারী বিদেশি হলেও তাদের সাহায্য করেছে উপত্যকার স্থানীয় জঙ্গি ও ওভারগ্রাউন্ড কর্মীরা।

এই একই মডিউল অতীতেও একাধিক হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে জানিয়েছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বুটা পাঠরি ও সোনমার্গে দুটি পৃথক হামলায় মোট ১০ জন নিহত হয়েছিলেন। সেই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত হাশিম মুসা এবার পহেলগাঁও হামলার মূল চক্রী হিসেবেও চিহ্নিত।

তিন সন্দেহভাজনের খোঁজে তল্লাশি  Hafiz Saeed’s Role Revealed

জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ বৃহস্পতিবার তিন অভিযুক্তের স্কেচ প্রকাশ করেছে। পাকিস্তানি নাগরিক হাশিম মুসা ওরফে সুলেমান, আলি ভাই ওরফে তালহা, এবং কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার আবদুল হুসেন ঠোকার—এই তিনজনের সন্ধানে জোর তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তথ্যদাতাকে দেওয়া হবে ২০ লক্ষ টাকা পুরস্কার, এমন ঘোষণাও করেছে পুলিশ।

এছাড়া, বৃহস্পতিবারই নিরাপত্তাবাহিনী পহেলগাঁও সংলগ্ন এক জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে একটি সন্ত্রাসবাদী আস্তানাও শনাক্ত করে।

পরিকল্পিত নৃশংসতা: তিনটি পয়েন্টে একযোগে হামলা

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীরা বৈসরন উপত্যকার তিনটি স্থানে একযোগে আক্রমণ চালায়। এক জায়গায় পাঁচজনকে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়, অন্য জায়গায় দু’জনকে খোলা মাঠে গুলি করে মারা হয়। বাকিদের খুঁজে মেরে ফেলা হয় উপত্যকার প্রাচীরঘেরা এলাকায়। যাঁরা দ্রুত প্রাচীর টপকে পালাতে পেরেছিলেন, তাঁরাই বেঁচে যান।

চোখে-মুখে আতঙ্ক নিয়ে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “ওরা আমাদের সঙ্গে একটু কথা বলল, তারপর আচমকা গুলি ছোঁড়ে। মনে হচ্ছিল, ওরা একেকজন মানুষ নয়, মেশিন।”

হাফিজ সঈদের ছায়ায় অপারেশন, পাকিস্তানের যোগসূত্র স্পষ্ট

নিরাপত্তা সূত্রের দাবি, এই মডিউল সরাসরি নিয়ন্ত্রিত হয় ২৬/১১ মুম্বাই হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদ ও তার ডেপুটি সাইফুল্লার হাত ধরে। তাঁরা বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থান করছেন এবং আইএসআই ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনী-র সহায়তায় মডিউলটিকে প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের দাবি।

এই মডিউলের অধিকাংশ সদস্য বিদেশি হলেও, কাশ্মীরি ওভারগ্রাউন্ড কর্মীরা তাদের লজিস্টিক সাপোর্ট দেয়, নিরাপদ আস্তানায় রাখে এবং স্থানীয় যোগাযোগ তৈরি করে দেয়।

দিল্লিতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাল্টা কূটনৈতিক আঘাত
এই ঘটনার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (CCS)-র জরুরি বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদেশ মন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং শীর্ষ সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

বৈঠকে নেওয়া মূল সিদ্ধান্তগুলি

*দুই দেশের দূতাবাসে কর্মী সংখ্যা কমিয়ে ৩০ করা হচ্ছে, ১ মে থেকে কার্যকর।

*পাকিস্তান হাই কমিশনের সমস্ত সামরিক ও প্রতিরক্ষা কর্মীকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। একইভাবে ইসলামাবাদে থাকা ভারতীয় উপদেষ্টারাও ফিরিয়ে আনা হবে।

*SAARC Visa Exemption Scheme পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য স্থগিত। বিদ্যমান সমস্ত ভিসা বাতিল করা হয়েছে।

*আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ।

*ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের ১ মে-র মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ।

*সিন্ধু জলচুক্তি (১৯৬০) সাময়িকভাবে স্থগিত।

চাণক্যপুরী থেকে কাশ্মীর—প্রতিবাদে উত্তাল জনতা

বৃহস্পতিবার দিল্লির চাণক্যপুরী-তে পাকিস্তান হাই কমিশনের সামনে জমায়েত হয় বিশাল জনতা। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে পথে নামে হাজার হাজার মানুষ। জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন করেও উত্তেজনা সামাল দিতে হয়েছে।

কাশ্মীর সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল, মোমবাতি প্রজ্বলন এবং শহিদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Bharat: Horrific terror attack in Pahalgam, Kashmir claims 26 lives, largest since Article 370 revocation. Lashkar-e-Taiba module suspected. Hunt for 3 key suspects underway. Details of the planned brutality.