অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সরকারি কর্মী হিসেবে নিয়োগের নির্দেশ

Anganwadi Workers Regularization: গুজরাট হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে দেশের লক্ষ লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী (AWW) এবং সহায়কদের (AWH) জন্য এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে চলেছে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী,…

Anganwadi workers are standing outside a government building

Anganwadi Workers Regularization: গুজরাট হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে দেশের লক্ষ লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী (AWW) এবং সহায়কদের (AWH) জন্য এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে চলেছে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়কদের নিয়মিত সরকারি কর্মীর মর্যাদা দেওয়া হবে এবং তাদেরকে সরকারি সিভিল পদের সঙ্গে সমতুল্য হিসেবে গণ্য করা হবে।

রায়ের পটভূমি ও আবেদনকারীদের দাবি
এই রায়টি একটি ব্যাচের পিটিশনের ওপর ভিত্তি করে হয়েছে, যা ১৯৮৩ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের ইন্টিগ্রেটেড চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস (ICDS) প্রকল্পের অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়করা দায়ের করেন। আবেদনকারীদের অভিযোগ ছিল, তারা নিয়মিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র একটি প্রকল্পের অধীনে কাজ করার অজুহাতে তাদেরকে সরকারি কর্মী হিসেবে গণ্য করা হয় না। ১০ বছর ধরে দৈনিক ছয় ঘণ্টা কাজ করার পরেও, তারা সরকারি কর্মীর অন্যান্য সুবিধা ছাড়াই মাত্র ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা সম্মানী পান।

   

আদালতের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত
বিচারপতি নিকিল এস কারিয়েল জানান, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়কদের সরকারি কর্মী হিসেবে গণ্য না করা স্পষ্টতই বৈষম্য। হাইকোর্ট বলেছে যে, তাদের কাজের দায়িত্ব, ভূমিকা ও দায়বদ্ধতা সাধারণ সরকারি কর্মীদের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। আদালত আরও জানিয়েছে যে, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়কদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সরকারি সিভিল পদের দায়িত্বের সঙ্গে তুলনীয় এবং তাদের প্রতি বৈষম্য অত্যন্ত সুস্পষ্ট।

অর্থনীতি ও সামাজিক প্রভাব
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়করা সমাজে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের স্বাস্থ্য পরিচর্যা, শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা এবং পুষ্টি সরবরাহে তারা অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। গুজরাট হাইকোর্টের এই রায়টি তাদের শ্রমের সঠিক মূল্যায়ন এবং কর্মক্ষেত্রে মর্যাদার প্রতিফলন।

রায়ের নির্দেশ ও ফলাফল
গুজরাট হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকার মিলে একটি নীতি তৈরি করবে, যেখানে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়কদের নিয়মিত সরকারি কর্মীর মর্যাদা দেওয়া হবে। ছয় মাসের মধ্যে এই নীতিটি প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে। এই নীতির আওতায় তাদের পদ, বেতন কাঠামো এবং আর্থিক সুবিধাসমূহ নিশ্চিত করা হবে।

আদালতের এই রায় অনুযায়ী, পিটিশনকারীদের জন্য কাটা তারিখ পিটিশনের তিন বছরের পূর্বে গণ্য করা হবে এবং এর মধ্যে তাদের ন্যূনতম বেতন প্রদান করা হবে। AWW কর্মীদের জন্য সর্বনিম্ন বেতন ক্লাস-III পদের সঙ্গে এবং AWH কর্মীদের জন্য ক্লাস-IV পদের সঙ্গে নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছে।

হাইকোর্টের রায়ে ভবিষ্যৎ প্রভাব
এই রায়টি কেবল গুজরাট রাজ্য নয়, সমগ্র দেশের জন্য প্রভাব ফেলতে পারে। এটি অন্যান্য রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়কদের অধিকার অর্জনের পথ সুগম করবে। সরকারি কর্মী হিসেবে গণ্য হলে তাদের বেতন ও কর্মস্থলের নিরাপত্তা আরও সুনিশ্চিত হবে।

অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে, তাদের পরিশ্রম ও সেবার মূল্যায়ন সঠিকভাবে হবে। গুজরাট হাইকোর্টের এই রায়টি সামাজিক ন্যায়বিচার ও কর্মক্ষেত্রে সমতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গুজরাট হাইকোর্টের এই রায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়কদের জন্য একটি বিশাল অর্জন এবং ভবিষ্যতে তাদের মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষার পথ সুগম করবে।